হালান্ডের রাতে ফের শীর্ষে সিটি

প্রকাশ : ০৫ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  স্পোর্টস রিপোর্টার

আর্লিং হলান্ড মাঠে নামবেন আর গোল করবেন না, তা যেন হতেই পারে না। অবিশ্বাস্য ছন্দে জালের দেখা পেলেন আবার, গড়লেন প্রিমিয়ার লিগে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড। তার স্মরণীয় রাতে ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেডকে হারিয়ে লিগ শিরোপা ধরে রাখার পথে আরেক ধাপ এগিয়ে গেল ম্যানচেস্টার সিটি। ইতিহাদ স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচটি ৩-০ গোলে জিতেছে পেপ গার্দিওলার দল। নাথান আকের গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন আর্লিং হালান্ড। শেষ দিকে জালের দেখা পান ফিল ফোডেন। সিটি লিগে সবশেষ হেরেছিল ৫ ফেব্রুয়ারি, টটেনহ্যাম হটস্পারের মাঠে। এরপর থেকে এই নিয়ে টানা ১২ ম্যাচ অপরাজিত দলটি, তার মধ্যে ১১টিতেই জয়। জয়ে লিগ টেবিলের শীর্ষে উঠল গার্দিওলার দল; ৩৩ ম্যাচে ২৫ জয় ও ৪ ড্রয়ে তাদের পয়েন্ট ৭৯। এক ম্যাচ বেশি খেলা আর্সেনাল ৭৮ পয়েন্ট নিয়ে নেমে গেল দুইয়ে।

ক্যারিয়ারের শুরু থেকে গোলমেশিন হয়ে ওঠা হালান্ড সিটির জার্সিতে হয়েছেন আরও পরিণত। ইংলিশ ফুটবলে অভিষেক মৌসুমে গোলের ফিফটি ছুঁয়েছেন। ৭০ মিনিটে গ্রিলিশের থ্রু বল ধরে ১৬ গজ দূর থেকে হালান্ড করেন রেকর্ড গড়া গোল। প্রিমিয়ার লিগে অভিষেক মৌসুমে ৩১ ম্যাচে তার গোল হলো ৩৫টি। প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে এক মৌসুমে যা সর্বোচ্চ গোলের নতুন রেকর্ড। ভেঙে দিলেন অ্যান্ড্রু কোল ও অ্যালান শিয়েরারের রেকর্ড; তারা ৩৪টি করে গোল করেছিলেন ৪২ ম্যাচের আসরে। সিটির হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে চলতি মৌসুমে হলান্ডের গোল হলো ৪৫ ম্যাচে ৫১টি।

উদযাপনের মঞ্চ প্রস্তুত ছিল আগে থেকে, একটি গোল করলেই হয়ে যেত রেকর্ড। গোলটি আসতে সময় লেগেছে বটে, তবে ধরা দিয়েছে ঠিকই। রেকর্ড গড়ার পর উদযাপন মাঠে হয়েছে মোটামুটি, শেষ নয় সেখানে। ম্যাচের পর বড় সম্মান পেলেন হালান্ড। ইংলিশ ফুটবলে প্রথম মৌসুমে ইতিহাসে নাম লেখানো তারকা ‘গার্ড অব অনার’ পেলেন তার টিম ম্যানেজমেন্ট ও সতীর্থদের কাছ থেকে। লাজুক হাসিতে তিনি গ্রহণ করলেন দল থেকে পাওয়া সম্মান। স্তুতির জোয়ার আগে থেকেই বহমান চারপাশে, সব মিলিয়ে হালান্ডের কাছে এটি স্মরণীয় এক উপলক্ষ্য।

কোল-শিয়েরারের রেকর্ড ছিল ৪২ ম্যাচের লিগ মৌসুমে, হালান্ড অবিশ্বাস্যভাবে ৩৫ গোল করে ফেললেন ৩১ ম্যাচেই। ১৯৯৫-৯৬ মৌসুম থেকে লিগ নেমে এসেছে ২০ দল আর ৩৮ ম্যাচে। এই ৩৮ ম্যাচের লিগ মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড আগেই নিজের করে নিয়েছেন তিনি। ৩২ গোলের আগের রেকর্ড ছিল মোহামেদ সালাহর। ম্যাচের পর স্কাই স্পোর্টসে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় নিজের অনুভূতি প্রকাশের উপযুক্ত ভাষা যেন খুঁজে পাচ্ছিলেন না হালান্ড, ‘এটা স্পেশাল এক রাত, স্পেশাল মুহূর্ত। সত্যিই দারুণ খুশি ও গর্বিত। জানি না, এছাড়া আর কী বলতে হবে। রেকর্ডের কথা জানতাম আগে থেকে। আমরা গোলের সুযোগ তৈরির চেষ্টাও করছিলাম। তবে কাজটা সহজ ছিল না, কারণ ওরা রক্ষণাত্মক খেলছিল। প্রথমার্ধে লড়াই করতে হয়েছে ছন্দ পেতে। তবে গোল আসতই, এবং শেষ পর্যন্ত তা এসেছেই।’

মাঠের বক্সে বসে ছেলের রেকর্ড গড়া উপভোগ করেন একসময় ম্যানচেস্টার সিটির হয়েই খেলা আলফি হালান্ড। রেকর্ডের পর তার মুখে দেখা যায় চওড়া হাসি। আশপাশ থেকে অন্যরা অভিনন্দন জানান গর্বিত বাবাকে।

প্রিমিয়ার লিগের জমানা ছাড়িয়ে ইংল্যান্ডের শীর্ষ ফুটবল লিগে এত বেশি গোল কেউ সবশেষ করতে পেরেছিল ৫৬ বছর আগে। ১৯৬৬-৬৭ মৌসুমে সাউথ্যাম্পটনের হয়ে ৩৭ গোল করেছিলেন ওয়েলসের ফরোয়ার্ড রন ডেভিস। ইংল্যান্ডের শীর্ষ লিগের কোনো খেলোয়াড়ের সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে মৌসুমে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ড ডিক্সি ডিনের; ১৯২৭-২৮ মৌসুমে এভারটনের হয়ে ৬৩ গোল করেছিলেন।