বাংলাদেশের প্রধান কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহের মতে, এই সিরিজ বিশ্বকাপে খুব একটা কাজে লাগবে না। তবু জিততে চান তারা। ভিন্ন কন্ডিশন ও ওয়ানডে সুপার লিগের চিন্তা করে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সেরা একাদশ নিয়েই নামে বাংলাদেশ। কিন্তু ব্যাটারদের ব্যর্থতায় প্রথম এই ওয়ানডেতে ৯ উইকেটে ২৪৬ রান তুলেছে বাংলাদেশ।
সিরিজ আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে হলেও খেলা হচ্ছে ইংল্যান্ডে। ২৪ বছর পর ওয়ানডে ফেরা চেমসফোর্ড কাউন্টি গ্রাউন্ডে টস হেরে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। ১৫ রানে হারায় দুই উইকেট। ওপেনার লিটন গোল্ডেন ডাক মারেন। অধিনায়ক তামিম ফিরে যান ১৪ রান করে। মিডল অর্ডারের মূল ব্যাটাররা ওই ধাক্কা সামাল দিতে পারেননি।
পুরো ইনিংসে একটি ছক্কা, সেটাও মেরেছেন পেসার শরিফুল ইসলাম। এটাই বলে দেয়, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে ব্যাটিংটা চাওয়া মতো হয়নি বাংলাদেশের। বাংলাদেশের ইনিংসের অবস্থা বুঝতে স্কোরকার্ডের ছক্কার ঘরে তাকালেই চলছে। ৫০ ওভারের ইনিংসে একটি ছক্কা, সেটাও মেরেছেন পেসার শরিফুল ইসলাম। বুঝতে বাকি থাকে না আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে ব্যাটিংটা যে মন মতো হয়নি তামিম ইকবালের দলের। এলোমেলো শুরুর পর নাজমুল হোসেন শান্ত ও সাকিব আল হাসানের জুটিতে কিছুটা প্রতিরোধ। এই দুজনের বিদায়ের পর মুশফিকুর রহিমের হাফ সেঞ্চুরির সঙ্গে আরো কয়েকটি ছোট ইনিংস, সব মিলিয়ে লড়াইয়ের পুঁজি মিললো।
গত মঙ্গলবার ইংল্যান্ডের চেমসফোর্ডে টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামা বাংলাদেশ ৯ উইকেটে ২৪৬ রান তুলেছে। সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলা মুশফিক ইনিংসের একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করতে পেরেছেন। শান্ত কাছে গিয়ে ৫০ ছুঁতে পারেননি। বাংলাদেশের আরো কয়েকজন ব্যাটসম্যান ভালো শুরু করে থিতুও হয়েছেন, কিন্তু আর কেউ-ই ৩০ এর কোটা পেরোতে পারেননি।
প্রথম ওভারেই বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। ইনিংসের চতুর্থ বলেই আইরিশ পেসার জশ লিটলের অসাধারণ এক ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ হয়ে বিদায় নেন লিটন কুমার দাস। প্রথম বলেই থামতে হয় তাকে। দেখেমুনে খেলা তামিমও বেশি সময় টিকতে পারেননি। চতুর্থ ওভারে আউট হওয়ার আগে ১৯ বলে ২টি চারে ১৪ রান করেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক।
শুরুর চাপ কাটিয়ে তৃতীয় উইকেটে ৩৭ রানের জুটি গড়েন শান্ত ও সাকিব। দলীয় ৫০ পেরিয়ে বিদায় নেন সাকিব। এগিয়ে গিয়ে টেনে খেলার চেষ্টা করা অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডারের স্টাম্প ভেঙে দেন গ্রাহাম হিউম। এরপর আবারো প্রতিরোধ। এবার তাওহিদ হৃদয়ের সঙ্গে ৫০ রানের জুটি গড়েন শান্ত। এই জুটি ভাঙার আগে ৬৬ বলে ৭টি চারে ৪৪ রান করেন বাঁ-হাতি এই ব্যাটসম্যান।
হৃদয়কে বেশি সাবলীল দেখাচ্ছিল, থিতুও হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ইনিংসটা বড় করা হয়নি তরুণ ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানের। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেয়া হৃদয় ৩১ বলে ২টি চারে ২৭ রান করেন। এরপর ইনিংসের সবচেয়ে বড় জুটিটি পায় বাংলাদেশ। মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে ষষ্ঠ উইকেটে ৬৫ রান যোগ করেন মুশফিক।
৩৪ বলে ৪টি চারে ২৭ রান করে মিরাজ বিদায় নেন। ৭০ বলে ৬টি চারে ইনিংস সর্বোচ্চ ৬১ রান করেন মুশফিক। এটা তার ৪৪তম ওয়ানডে হাফ সেঞ্চুরি। তার বিদায়ের পর বাংলাদেশকে আড়াই’শ এর কাছাকাছি নিয়ে যান তাইজুল ইসলাম ও শরিফুল ইসলাম। তাইজুল ৩৬ বলে ১৪ ও ইনিংসে একমাত্র ছক্কাটি মারা শরিফুল ১৫ বরে ১৬ রান করেন। আয়ারল্যান্ডের জশ লিটল ৩টি এবং মার্ক অ্যাডায়ার ও গ্রাহাম হিউম ২টি করে উইকেট পান।