ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নারী ক্রিকেট বিভাগে কি চলছে?

নারী ক্রিকেট বিভাগে কি চলছে?

৪ মে ম্যাচে ক্যাচ নিতে গিয়ে ডান হাতে চোট পান পেসার লতা মণ্ডল। বোলিং হাতের দুই আঙুলের (তর্জনী ও মধ্যমা) মাঝে ছিঁড়ে যাওয়ায় তিনটি সেলাই লেগেছে। এক সপ্তাহের মধ্যে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে বোলিং করা কঠিন মনে করেন বিসিবির চিকিৎসকরাই। অথচ লতাকে শ্রীলঙ্কাতেই দলের সঙ্গে রেখে দেয়া হয়েছে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে। লতার চোট সম্পর্কে বিসিবি নারী কমিটির চেয়ারম্যান শফিউল আলম নাদেলকে কিছুই জানায়নি টিম ম্যানেজমেন্ট, অবগত ছিলেন না স্বর্ণা আক্তারের চোট সম্পর্কেও।

জাতীয় দল ঢেলে সাজাতে গিয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের বাদ দেয়ার মতো ঘটনাও ঘটছে নারী ক্রিকেটে। অভিযোগ উঠেছে, নির্বাচক মঞ্জুরুল ইসলাম একক সিদ্ধান্তে সব কিছু করছেন। বিসিবি কর্মকর্তারাই মনে করেন, নারী বিভাগে মঞ্জুরুল ইসলাম একমাত্র নির্বাচক হওয়ায় তার সিদ্ধান্তকেই সঠিক বলে ধরে নেন, যেটা স্বেচ্ছাচারিতার পর্যায়ে পৌঁছে গেছে বলে অভিযোগ। গত এক বছর নারী ক্রিকেটে এত কিছু ঘটে গেলেও দেখার নেই কেউ।

অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলার সময় কবজিতে চোট ছিল স্বর্ণার। বিসিবির মেডিক্যাল বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী বিশ্রামেও ছিলেন তিনি। চোট পরিচর্যা করে খেলায় ফিরলেও খুলনার ক্যাম্পে নিয়মিত অনুশীলন করতে পারেননি। বিসিবি চিকিৎসকদের বক্তব্য হলো, ‘স্বর্ণার কবজিতে ব্যথা কমে যাওয়ায় মনে করা হচ্ছিল, সে খেলতে পারবে। সে কারণেই শ্রীলঙ্কায় নিয়ে গেছে। ওখানে যাওয়ার পর ব্যথা বেড়ে যাওয়ায় খেলতে পারেনি।’

কবজিতে ব্যথা থাকায় শ্রীলঙ্কা থেকে স্বর্ণাকে দেশে ফেরত পাঠালেও লতাকে রেখে দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ম্যানেজার এসএম গোলাম ফাইয়াজ বলেন, ‘ফিজিও রিপোর্ট অনুযায়ী লতা শেষ ম্যাচ খেলতে পারবে। চোট পাওয়ার ১০ দিন হয়ে যাবে।’

স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা নারী দলের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শেষে বাংলাদেশ নারী দল তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলা শুরু করেছে। এরই মধ্যে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে জিতেছে বাংলাদেশ। তবে এ সময়ে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ম্যাচ খেলা কতটা বাস্তবসম্মত, বলা কঠিন। পাঁচ দিনের মধ্যে সেলাই কেটে বোলিং করা যাবে কি না, বলতে পারছেন না বিসিবির চিকিৎসকরা। তবে ম্যানেজারের ভাষ্য মতে, জাতীয় দলের খণ্ডকালীন শ্রীলঙ্কান ফিজিওর কাছ থেকে লতার খেলার নিশ্চয়তা পাওয়া গেছে।

দেশের নারী ক্রিকেটারদের অভিযোগ, জাতীয় দল থেকে সিনিয়র খেলোয়াড়দের কৌশলে বাদ দেয়া হচ্ছে। নির্বাচক মঞ্জু একক ক্ষমতাবলে তা করছেন। নারী বিভাগের চেয়ারম্যান শফিউল আলম নাদেলকে অন্ধকারে রেখেই এ কাজ করছেন বলে গুঞ্জন বিসিবিতে। এরপরও নির্বাচক মঞ্জুর চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে চান চেয়ারম্যান নাদেল।

ক্ষমতায় ভারসাম্য আনতে ছেলেদের জাতীয় দলের মতো নির্বাচক প্যানেল গঠন করা হবে কিনা জানতে চাওয়া হলে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘দ্বৈত মতের ভিত্তিতে জাতীয় দল গড়া গেলে ভালো হতো। কিন্তু আমাদের বিভাগ খুব ছোট, খেলোয়াড়ও কম। সে কারণে দুজন নির্বাচক নেয়া কঠিন। তবে শ্রীলঙ্কা থেকে দল ফেরার পর একাধিক নির্বাচকের পাশাপাশি কোচকে নিয়ে প্যানেল করা যায় কিনা, চেষ্টা করে দেখব। আসলে কিছুদিন ধরে সমন্বয়ের ঘটতির কারণে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। এগুলো যাতে আর বাড়তে না পারে, সে চেষ্টা করা হবে।’

সালমা খাতুন, রুমানা আহমেদকে এখনো দেশের সেরা স্পিন অলরাউন্ডার মনে করা হয়। বিশেষ করে রুমানার বাদ পড়া সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। দেশের এ চ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটারকে বাদ দিয়ে চোটাক্রান্ত স্বর্ণাকে দলে নেয়া নির্বাচক মঞ্জুর স্বেচ্ছাচারিতাই প্রমাণ করে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত