ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

রোমাঞ্চকর জয়ে অস্ট্রেলিয়া ভারতের উপরে

রোমাঞ্চকর জয়ে অস্ট্রেলিয়া ভারতের উপরে

ম্যাচের লাগাম ছিল আইরিশদের হাতে। জয় ছিল সময়ের ব্যাপার। ওই জয় ছিনিয়ে এনেছেন টাইগার পেসার মুস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে চেমসফোর্ডে সিরিজের শেষ ম্যাচে ৪ রানের রোমাঞ্চকর জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। সিরিজ জিতে নিয়েছে ২-০ ব্যবধানে।

ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে সুপার লিগের সিরিজের প্রথম ম্যাচটি বৃষ্টিতে ভেসে যায়। সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন ভাঙে আয়ারল্যান্ডের। দ্বিতীয় ম্যাচে রেকর্ড রান তাড়া করে শেষ ওভারে অসাধারণ জয় তুলে নেন টাইগাররা। গত রোববার শেষ ম্যাচেও বুক কাঁপিয়ে জিতলন লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। টস হেরে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। অভিষিক্ত ওপেনার রনি তালুকদার (৪) ব্যর্থ হয়ে ফিরে যান। এরপর তামিমণ্ডশান্ত-লিটনরা সেট হয়ে সাজঘরে ফেরেন। তাদের ছোট ছোট সংগ্রহে সাত বলতে থাকতে অলআউট হওয়ার আগে ২৭৪ রান তোলে চন্ডিকা হাথুরুসিংহের দল। বাংলাদেশ দলের হয়ে তামিম ইকবাল সর্বোচ্চ ৬৯ রান যোগ করেন। শান্ত ও চারে নামা লিটনের ব্যাট থেকে আসে ৩৫ করে রান। এছাড়া মুশফিক ৪৫ ও মেহেদি মিরাজ ৩৭ রান যোগ করেন। জবাব দিতে নেমে শুরুতে উইকেট হারায় আইরিশরা। তবে দ্বিতীয় উইকেটে শতক ছাড়ানো জুটি গড়েন আন্দ্রে বালবির্নি ও পল র্স্টালিং। তারা ফেরার পরে ম্যাচের লাগাম হাতে নেন হ্যারি টেক্টর ও লরকান টাকার, জুটিতে জয় দেখছিল আইরিশরা। নাজমুল শান্ত বল হাতে নিয়ে জুটি ভেঙে ব্রেক থ্রু দেন। টেক্টর ৪১.৫ ওভারে ফিরে যান দলের ২২৫ রানে। স্বাগতিকরা জয় হতে তখন ৫০ রান দূরত্বে। মুস্তাফিজ ৪৩তম ওভারে কার্টুস ক্যাম্পার ও ৪৫তম ওভারে জর্জ ডকরেলকে ফিরিয়ে ম্যাচ জমিয়ে দেন। ৪৭তম ওভারে ৫০ রান করা টাকারকে বোল্ড করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেন।

শেষে ১০ বলে ২০ রান করে ভয় ধরিয়েছেন মার্ক এডায়ার। পথের ওই কাঁটা সরান হাসান মাহমুদ। শেষ ম্যাচে দলে ফেরা মুস্তাফিজ ১০ ওভারে ৪৪ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন। এছাড়া হাসান নেন ২ উইকেট। আইরিশদের হয়ে মার্ক এডায়ার নেন ৪ উইকেট।

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে ওয়ানডে সুপার লিগ শেষ করেছে বাংলাদেশ। নাটকীয় কিছু না ঘটলে এটিই সুপার লিগের শেষ সিরিজ। যেখানে ৩ নম্বরে থেকে লিগ শেষ করেছে বাংলাদেশ, ওপরে আছে কেবল নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ড। পাকিস্তান, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দলকে টপকে বাংলাদেশ জায়গা করে নিয়েছে তিনে। ২৪ ম্যাচ খেলে সবচেয়ে বেশি ১৬ জয় ও ৩টি পরিত্যক্ত ম্যাচ মিলিয়ে মোট ১৭৫ পয়েন্ট সংগ্রহ করে নিউজিল্যান্ড। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৫ জয় ও ১টি পরিত্যক্ত ম্যাচ মিলিয়ে ইংল্যান্ডের পয়েন্ট ১৫৫। বাংলাদেশর মোট পয়েন্টও ইংল্যান্ডের সমান ১৫৫। তবে বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের নেট রান রেট ০.৯৭৬ আর বাংলাদেশের ০.২২০। রান রেটে পিছিয়ে থাকায় তৃতীয় স্থানে বাংলাদেশ। টাইগাররা ২৪ ম্যাচে ৮ হারের বিপরীতে পেয়েছে ১৫ জয়, ১ ম্যাচে ফল বের হয়নি।

অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ খেলেছে ১৮টি। এর মধ্যে ১২টিতে জিতে ১২০ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার ৬ নম্বরে আছে তারা। ২১ ম্যাচে ১৩ জয়ে ১৩০ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচে পাকিস্তান। দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারতও খেলেছে ২১টি ম্যাচ। যদিও ২০২৩ বিশ্বকাপের স্বাগতিক হিসেবে ভারতের সুপার লিগের পয়েন্ট জরুরি না। এমনিতেই সরাসরি বিশ্বকাপ খেলত তারা।

হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিতে বাংলাদেশ সুপার লিগে মোট আটটি সিরিজ খেলেছে। ঘরের মাঠে চারটি। বাইরেও চারটি। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩-০, শ্রীলঙ্কাকে ২-১, আফগানিস্তানকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়েছে। কেবল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ হেরেছে। সেটাও ২-১ ব্যবধানে।

দেশের বাইরে জিম্বাবুয়েকে ৩-০ এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে ২-১ ব্যবধানে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হেরেছে ৩-০ ব্যবধানে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে শেষটা মধুর হলো।

ইতোমধ্যে বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত করেছে স্বাগতিক ভারত, বাংলাদেশ, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও সাউথ আফ্রিকা। বাকি দুই দল বাছাইপর্ব পেরিয়ে জায়গা নেবে। আগামী জুন-জুলাই মাসে জিম্বাবুয়ের মাটিতে হবে বাছাইপর্ব। সেখানে সুপার লিগ থেকে সরাসরি বিশ্বকাপে উঠতে ব্যর্থ হওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শ্রীলঙ্কা, আয়ারল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে ও নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে লড়বে প্রাক-বাছাই পেরিয়ে আসা আরো পাঁচটি দল- নেপাল, ওমান, স্কটল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও যুক্তরাষ্ট্র।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত