আয়ারল্যান্ড-বাংলাদেশ সিরিজ

বিশ্বমানের বোলিং করেছেন হাসান

প্রকাশ : ১৬ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  স্পোর্টস রিপোর্টার

বাংলাদেশের নাগালে থাকা জয় প্রতিপক্ষ শেষ মুহূর্তের ঝলকে কেড়ে নিয়েছে- এমন ঘটনা অতীতে বেশ কয়বার হয়েছে। জিততে জিততে হেরে যাওয়ার বেদনায় পুড়তে হয়েছে বাংলাদেশকে। কিন্তু চেমসফোর্ডে আয়ারল্যান্ডকে সেই যন্ত্রণায় পুড়িয়েছে তামিম ইকবালের দল। ২৭৪ রান তাড়ায় শেষ ৫৪ বলে ৫২ রান দরকার ছিল আইরিশদের, হাতে ছিল ৭ উইকেট। ওই অবস্থা থেকে ম্যাচ বের করে এনে বাংলাদেশকে জয় এনে দিয়েছেন বোলাররা, অন্যতম নায়ক পেসার হাসান মাহমুদ। এভাবে জয় পাওয়াকে ‘বিরল’ বলে উল্লেখ করেছেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল, ‘এ ধরনের ম্যাচ আমরা সবসময় অন্য পাশ থেকে দেখেছি। জেতার পর্যায় থেকে কোনো না কোনোভাবে হেরে গেছি। এ ধরনের পরিস্থিতিতে জেতাটা আমাদের জন্য বিরল ব্যাপার, বিশেষ করে বোলিংয়ের সময়।’

শেষ ওভারে ১০ রান আটকানোর দায়িত্ব ছিল হাসান মাহমুদের। প্রথম বলেই স্লোয়ার ডেলিভারিতে মার্ক অ্যাডাইরকে বোল্ড করেন হাসান। ‘ব্যাক অব দ্য হ্যান্ড’-এর আরেকটি স্লোয়ারে তৃতীয় বলে তুলে নেন অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনের উইকেটও। শেষ তিন বলেও দারুণ বুদ্ধিমত্তায় বড় শট খেলা থেকে আটকে দেন জশ লিটল ও ক্রেইগ ইয়ংকে। ৬ বলে ২ উইকেট তুলে নেয়া ছাড়াও মাত্র ৪ রান দেন হাসান, বাংলাদেশ জেতে ৫ রানে।

ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১১তম ম্যাচ খেলা হাসানকে ম্যাচ শেষে বিশ্বমানের বোলারের স্বীকৃতি দিয়েছেন অধিনায়ক তামিম। যে চাপ সামলে বোলিং করতে হয়েছে, সেটি ঠান্ডা মাথায় দারুণভাবে সামাল দেয়া নিয়ে তামিমের ভাষ্য এ রকম, ‘এই মুহূর্তে সে বিশ্বমানের বোলিং করছে। বিশেষ করে নতুন বলে দুর্দান্ত, ডেথ বোলিংয়েও। বয়সে এখনো তরুণ, কিন্তু বোঝাপড়ার দিক থেকে পরিপক্ব। চাপে শান্ত থাকতে পারে। অনুশীলনে হাজারো বল করতে পারেন। কিন্তু এ ধরনের পরিস্থিতিতে সঠিক কাজ করতে পারাটা বিশেষ কিছু।’

তবে নাজমুল হোসেন শান্তর ব্রেক থ্রোর পরই হারতে বসা ম্যাচ অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে জিতেছে বাংলাদেশ। অথচ ব্যাটিংয়ে ঝলক দেখিয়ে সিরিজ সেরা হয়েছেন শান্ত, ম্যাচ শেষে বলছেন, এখন থেকে বোলিংয়েও তার উপর বিশ্বাস রাখতে পারেন অধিনায়ক। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে হাতেগোনা কয়েক ওভার বল করার অভিজ্ঞতা ছিল শান্তর, ঘরোয়া ক্রিকেটেও বোলিং করতে দেখা দুষ্কর। স্রেফ অনিয়মিত বোলার হয়ে শান্তই দেখান ম্যাজিক। শান্ত যখন বল করতে আসেন ৯ ওভারে ম্যাচ জিততে ২৭৫ রান তাড়ায় আয়ারল্যান্ডের দরকার ৫২ রান। প্রথম চার বল থেকে ২ রান দেয়ার পর পঞ্চম বলটি করেন অফ স্টাম্পের বাইরে খানিকটা টেনে, ফিফটি করা টেক্টর লোভে পড়ে করে বসেন ভুল, টাইমিংয়ে গড়বড় করে পরিণত হন লিটন দাসের ক্যাচে। এরপরই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে আইরিশরা। মোস্তাফিজুর এসে দুর্দান্ত স্পেলে নেন তিন উইকেট। শেষ দিকে হাসান মাহমুদ স্নায়ু ধরে রাখায় ৪ রানে জিতে যায় বাংলাদেশ। ৩ ওভার বল করে ১০ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়ে তাতে বড় অবদান শান্তর।

আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করে ম্যাচ জেতানো শান্ত শেষ ম্যাচে ৩৫ রান করার পর বোলিংয়ের ওই ঝলক। সিরিজ সেরার পুরস্কার নিয়ে জানান নিয়মিত বোলিং অনুশীলন করারই ফল এটা, ‘আমি রঙ্গনা হেরাথের সঙ্গে অনেক অনুশীলন করেছি, স্পিন বোলিং কোচকে অনেক ধন্যবাদ। অধিনায়ক বললেন আমি বল করব। মিরাজও অনেক সাহায্য করেছে বোলিংয়ের সময়। আমি তার নির্দেশনা অনুসরণ করেছি।’ অফ স্পিন বল করেন কিছুটা মিরাজের মতো, জানান মিরাজকেই কপি করার চেষ্টা থাকে তার। আগামীতেও দলের হয়েও বল হাতে অবদান রাখতে চান শান্ত। তার আশা অধিনায়ক এখন তাকে বোলিংয়েও ভরসা করবেন, ‘আমি তাকে (অধিনায়ক) বলি আমাকে বল করতে দেয়া উচিত। আমি এখনো অলরাউন্ডার না তবে তিনি সম্ভবত এখন বিশ্বাস করবে যে আমি বল করতে পারি।’