ফাইনালে ম্যান সিটির সামনে ইন্টার

ম্যান সিটি (৫) ৪ : ০ (১) রিয়াল মাদ্রিদ

প্রকাশ : ১৯ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  স্পোর্টস রিপোর্টার

দীর্ঘ ১৩ বছর পর উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠেছে ইন্টার মিলান। ১১ জুলাই ইস্তানবুলে তাদের প্রতিপক্ষ ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যানচেস্টার সিটি, যে দলটি বুধবার রাতে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাস সেরা দল রিয়াল মাদ্রিদকে ৪-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে তিন বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে। অ্যাগ্রিগেটে ৫-১ গোলের এই বড় জয় পেপ গার্দিওলার জন্য একটি ট্যাকটিকাল জয়ও। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ট্যাকটিক্সের জন্য বারবার সমালোচিত হওয়া এই কাতালান ম্যানেজার এবার প্রতিটি নকআউট জিতেছেন হেসেখেলে। আর এক ম্যাচ জিততে পারলেই আর একটি অসাধ্য সাধন করবেন তিনি, গড়বেন সিটি ম্যানেজার হিসেবে সবকিছু জেতার ইতিহাস।

রিয়াল মাদ্রিদকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালে ৪-০ গোলে হারানো নিঃসন্দেহে ম্যান সিটির ইতিহাসের সবচেয়ে উজ্জ্বল মুহূর্তগুলোর একটি। কিন্তু সামনের দুই সপ্তাহে সিটির অর্জন তাদের পুরো ইতিহাসকে ছাপিয়ে যেতে পারে। এই দুই সপ্তাহে সিটির হাতে উঠতে পারে তাদের প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা, হ্যাটট্রিক প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা ও বহু-আরাধ্য ট্রেবল।

সেমিফাইনাল দ্বিতীয় লেগে স্বদেশি ক্লাব এসি মিলানকে ১-০ গোলে হারিয়ে (দুই লেগ মিলিয়ে ৩-০) ২০১০ সালের পর ফাইনালে নাম লিখিয়েছে ইন্টার মিলান। ২০০২-০৩ ও ২০০৪-০৫ মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দুই দফা এসি মিলানের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছিল ইন্টার। তবে ৫০ বছর পর এই প্রথম চলতি মৌসুমে চারবার এসি মিলানকে হারালো ইন্টার; সবশেষ ১৯৭৩-৭৪ মৌসুমে নগর প্রতিপক্ষকে চারবার হারাতে পেরেছিল। এবারই প্রথম চারবার মুখোমুখিতে একবারও ইন্টারের জালের নাগাল পায়নি মিলান।

রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে মহারণ তখন শুরুর অপেক্ষা। কিন্তু গার্দিওলা গোটা দলকে বললেন ইন্টার মিলানের কথা! আগের দিনই ফাইনাল নিশ্চিত করা দলটির সঙ্গে লড়াইয়ের হাতছানি দেখিয়ে নিজ দলের ফুটবলারদের উজ্জীবিত করলেন ম্যানচেস্টার সিটি কোচ। মাঠে নেমে তার দল ঠিকই রিয়ালকে উড়িয়ে পৌঁছে গেল ইন্টারের সঙ্গে ফাইনালের মঞ্চে। সেই ফাইনাল নিয়ে অবশ্য বেশ সতর্ক গার্দিওলা।

সমতায় থেকে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগ খেলতে নেমেছিল ম্যান সিটি। গতবার এই দ্বিতীয় লেগেই শেষ সময়ে দুঃসহ হারের স্মৃতি এবারও তাড়া করতে পারত পিছু পিছু। তবে ম্যাচের আগে পেছন ফিরে না তাকিয়ে গার্দিওলা দলের সামনে মেলে ধরেন ফাইনালের ছবি। দলের মনোজগতে ঢুকিয়ে দেন ইন্টারের সঙ্গে ফাইনাল খেলার হাতছানি, ‘মাঠে নামার আগে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘ইন্টারের সঙ্গে ফাইনাল খেলতে চাও নাকি নয়? যদি ৯০ মিনিট এই ভাবনা মাথায় রেখে খেলতে পারো যে ইন্টারের সঙ্গে ফাইনাল খেলবে, তাহলে রিয়াল মাদ্রিদকে হারাতে পারবে।’ ছেলেরা সেই তাড়না নিয়েই খেলেছে।’

আগামী ১০ জুন ইস্তানবুলে ইন্টারের সঙ্গে সিটির সেই ফাইনাল। ইন্টার নামবে ইউরোপ সেরার প্রতিযোগিতায় চতুর্থ ট্রফি জয়ের জন্য। ম্যান সিটি এখনও এই স্বাদ পায়নি একবারও। গতবার রিয়ালের কাছে হেরে তাদের স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছিল। এবার সেই রিয়ালকে বিধ্বস্ত করার পর ফাইনালে পরিষ্কার ফেভারিট হয়েই নামবে সিটি। তাদের প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়কে এখন অনেকে স্রেফ সময়ের ব্যাপার মনে করছেন। হাতছানি আছে তাদের সামনে প্রিমিয়ার লিগ ও এফএ জিতে ‘ট্রেবল’ জয়ের ইতিহাস গড়াও। তবে ইন্টারকে হারানো খুব সহজ হবে না মনে করেন গার্দিওলা, ‘চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠলে তা উদযাপন করাই উচিত। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের সেই সময়টা নেই। কারণ রোববার প্রিমিয়ার লিগ জিততে পারি আমরা। একটা দিন পরিবারের সঙ্গে কাটাবে এবং এরপর প্রস্তুতি নিতে হবে রোববারের ম্যাচের জন্য।’