সেই সাকিব-তামিম আসেননি এজিএমে!

প্রকাশ : ২১ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  স্পোর্টস রিপোর্টার

২০১৯ সালের ২১ অক্টোবর দেশের ক্রিকেটকে রীতিমতো কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন সাকিব-তামিমদের নেতৃত্বে ৬০ জনের মতো ক্রিকেটার। মিরপুর স্টেডিয়ামে উপস্থিত হয়ে ১১টি দাবি নিয়ে মুখোমুখি হন গণমাধ্যমের। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের ক্রিকেট কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার ঘোষণা দেন ক্রিকেটারদের পক্ষ থেকে সাকিব। চার বছর পর এই আলোচনা আবার কেন? সেই ১১ দফা দাবির প্রথমটি ছিল, ‘ক্রিকেটারদের হাতে ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) নেতৃত্ব নির্বাচনের অধিকার দেয়া।’ চার বছর পর গতকাল মিরপুর স্টেডিয়ামে মিডিয়া প্লাজায় অনুষ্ঠিত হয়েছে কোয়াবের এজিএম ও কাউন্সিল। এজিএমে উপস্থিত ছিলেন না ধর্মঘটের অগ্রভাগে থাকা সাকিব, ছিলেন না তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মাশরাফি বিন মুর্তজা, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদসহ সিনিয়র কোনো ক্রিকেটার। জাতীয় দলে থাকা নাজমুল হোসেন শান্ত ও মেহেদি হাসান মিরাজকে দেখা গিয়েছিল। উপস্থিত ক্রিকেটারদের আহব্বান করা হয়েছিলে নেতৃত্বে আগ্রহী থাকলে নাম দেয়ার জন্য। কিন্তু কেউ আগ্রহী না হওয়ায় বিসিবির মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান তানভীর আহমেদ টিটু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নাইমুর রহমান দুর্জয় ও দেবব্রত পালের নাম প্রস্তাব করেন। উপস্থিত সকলের সাঁয় পেয়ে তারাই আবার নির্বাচিত হন। তারা ২০১৪ সাল থেকে এই পদে আছেন। নতুন মেয়াদের আরও চার বছর দায়িত্ব পালন করবেন তারা।

কোয়াবের গঠনতন্ত্রে সংশোধনী এনে আরও ৮টি পদ বাড়ানো হয়েছে। কার্যনির্বাহী পরিষদ ছিল ১১ জনের, ১ জন সভাপতি, চারজনসহ সভাপতি, ১ জন সাধারণ সম্পাদক, ২ জন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ১ জন সাংগঠনিক সম্পাদক, ১ জন কোষাধ্যক্ষ, ১ জনসহ কোষাধ্যক্ষের সঙ্গে ৬ জন বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ২ জন সদস্য রাখা হবে কমিটিতে। দুই মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেয়ার কথা রয়েছে।

সাকিব-তামিমরা কেন এলেন না কোয়াবের নেতৃত্বে? কাউন্সিল শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন দুর্জয়। এ সময় সাকিব-তামিমদের না আসার কারণ হিসেবে দুর্জয় জানান, তিনি তাদের আহ্বান করেছিলেন নেতৃত্বে আসার জন্য, ‘নির্বাচনে অংশ নেয়নি ওরা হয়তো চিন্তা করেছে আমরা এখনো খেলছি, আরও খেলব। আমি ব্যক্তিগতভাবে আহ্বান করেছি আসো দায়িত্ব নাও। আমরা তো অনেকদিন করলাম। আসলে এটাতো জোর করার বিষয় না, আগ্রহের বিষয়। ওরা হয়তো খেলাধুলায় আরও সময় দিতে চায়। বর্তমান জাতীয় দলের খেলোয়াড়, এখনো জাতীয় দলকে সেবা দিচ্ছে।’

সাকিব-তামিমণ্ডমুশফিকরা দেশে নেই। মাহমুদউল্লাহ থাকলেও আসেননি কোয়াবের এজিএমে। প্রশ্ন উঠেছিল সাকিবদের সঙ্গে দূরত্ব নিয়েও। এ সময় দুর্জয় পাল্টা প্রশ্ন করেন দূরত্ব থাকলে রাত ৩টা পর্যন্ত সাকিবের সঙ্গে কিভাবে কথা বলি? প্রসঙ্গ আসে ধর্মঘট নিয়েও। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক দুর্জয় জানান, সাকিবরা তখন ভুল বুঝেছিল, গঠনতন্ত্র দেখার পর সঠিকটা বুঝতে পেরেছে, ‘তারা যখন কোয়াবের বিরুদ্ধে আন্দোলন করল, যারা আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিল পরে তাদের সাথে বসেছি। বসার পর তাদের বুঝিয়েছি আসলে ওদের ধারণাটা ছিল যে, কমিটিতে যারা আছে, তারা ছেড়ে দিবে, এবং তারা যেমন খুশি, নিজেদের মতো করে কমিটি গঠন করবে। কিন্তু কোয়াবের গঠনতন্ত্র সেটা অনুমোদন করে না। আমরা তাদের বলেছি, কোয়াব একটি রেজিস্টার্ড সংগঠন, সেটার একটা গঠনতন্ত্র আছে। কমিটিতে নতুন যারা আসতে চায়, তাদের ওয়েলকাম করি। কিন্তু কোয়াবের যে গঠনতন্ত্র, সংবিধানের মাধ্যমে কমিটিতে আসতে হবে। তাদের সঙ্গে দুই একবার বসার পরে আসলে আগ্রহটা আসলে হারিয়ে ফেলেছে’ -আরও যোগ করেন দুর্জয়। ফেডারেশন অব ইন্টারন্যাশন্যাল ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ফিকা) সভাপতি লিসা স্টালেকার বাংলাদেশে আসছেন। বিশ্বজুড়ে থাকা এইসব ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের মূল প্রতিষ্ঠান ফিকা। অজ কোয়াবের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে স্টালেকার। দেশের ক্রিকেটে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ পঞ্চ পান্ডবসহ ২৯ জনকে সম্মনানা দিয়েছে কোয়াব।