আফগানদের জন্য কেমন উইকেট

‘সাকিবকে ছাড়াই আফগানিস্তানের বিপক্ষে ভালো করবে বাংলাদেশ'

প্রকাশ : ২২ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  স্পোর্টস রিপোর্টার

২০১৯ সালে নিজেদের পায়ে নিজেই কুড়াল মেরেছিল বাংলাদেশ! রশিদ খান, কাইস আহমেদ, জহির খান ও মোহাম্মদ নবীদের বোলিং অ্যাটাক দেখেও চট্টগ্রামের ২২ গজকে বানিয়েছিল স্পিন স্বর্গ। চ্যালেঞ্জটা সাকিব আল হাসান নিজেই নিয়েছিলেন। তাইতো নিজের একাদশে কোনো পেসার না রেখে তাইজুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাঈম হাসানকে সুযোগ করে দেয়। ভাবনায় ছিল, নিজেদের কন্ডিশনে স্পিন দুর্গ বানিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করবে। কিন্তু নিজেদের পাতা ফাঁদে সাকিব অ্যান্ড কোং আটকা পড়ে নিজেরাই। হিতে বিপরীত হয়ে রশিদ খানের ১১ উইকেট পাওয়া ম্যাচ বাংলাদেশ হেরে যায় শেষ দিনে শেষ সেশনে। বৃষ্টিতে প- হওয়া টেস্ট স্বাগতিকরা চাইলেই ড্র করতে পারত। কিন্তু অতো ধৈর্য কোথায়?

চার বছর পর আফগানিস্তানের সঙ্গে আবার টেস্ট খেলার অপেক্ষায় বাংলাদেশ। এবারও স্বাগতিক বাংলাদেশ। খেলা চট্টগ্রাম থেকে মিরপুরে। এবার কী বদলা নিতে পারবে বাংলাদেশ? বদলা নেয়ার জন্য মাঠে যথেষ্ট ভালো ক্রিকেট খেলার পাশাপাশি মাঠের বাইরের পরিকল্পনাও যুৎসই হতে হবে। উইকেট কেমন হবে তা নিয়েই যত আলোচনা। বলার অপেক্ষা রাখে না, ৪ বছরে রশিদ খানরা আরো ক্ষুরদার, আরো আক্রমণাত্মক। বাংলাদেশের রণকৌশল কেমন হওয়া উচিত জানতে চাওয়া হয়েছিল বিসিবির পরিচালক ও সাবেক অধিনায়ক আকরাম খানের কাছে। উত্তরে তিনি, নিজেদের মৌলিক ক্রিকেট খেলার কথা বলেছেন। তার ভাষ্য, ‘উইকেটের ব্যাপার? আমরা যে উইকেটে খেলে অভ্যস্ত, কারণ হোমে খেলা। হোমে যে ধরনের উইকেটে খেলি, ওই রকম উইকেটে খেললে অবশ্যই সুবিধা থাকবে।’ আফগানিস্তানকে বাড়তি ভয় না পেয়ে নিজেদের শক্তিতে বিশ্বাস রাখার পরামর্শ তার, ‘ওরা সবসময় স্পিনে আমাদের চেয়ে ভালো। ওদের এক্সট্রা অর্ডিনারি কিছু স্পিনার আছে। রশিদ খান আছে, মুজিব আছে। ওদেরকে রিড করা ডিফিকাল্ট। আমাদের কিন্তু সেন্সিবল ক্রিকেট খেলতে হবে। আমরা যেন, স্পিনে সুবিধা পাই, সেই ধরনের উইকেট হলে ভালো। তারপরও এটা ডিপেন্ড করছে অধিনায়ক এবং কোচ কী ধরনের উইকেট চাচ্ছে।’ বাংলাদেশ সবশেষ যে দুটি টেস্ট মিরপুরে খেলেছে, দুটিতেই স্পিন ট্র্যাক বানিয়েছিল। ভারতের বিপক্ষে লড়াই করে হারলেও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ জিতেছিল। কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে নিজের প্রথম সংবাদ সম্মেলনে হোম অ্যাডভান্টেজ নেয়ার কথা বলেছিলেন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সেই পথেই হয়তো এগোবে বাংলাদেশ!

এদিকে সাকিবের চোট নিয়ে বিসিবি যে সময়সীমা বেধে দিয়েছে তাতে স্পষ্ট, আফগানদের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে জাতীয় দলের অধিনায়ককে পাবে না বাংলাদেশ। ১৪ জুন মিরপুরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডে চলাকালীন ক্যাচ ধরতে গিয়ে আঙুলে চোট পান সাকিব। বিসিবি পরদিন জানায়, ৬ সপ্তাহ বিশ্রামে থাকতে হবে বাঁ-হাতি অলরাউন্ডারকে। তখন থেকেই বোঝা যাচ্ছিল সাকিবকে ছাড়াই খেলতে হবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট। তাকে ছাড়া খেলা মানে বাড়তি চিন্তা। প্রথমত, অধিনায়কত্ব কে করবেন? দ্বিতীয়ত, তার জায়গায় কে খেলবেন? তবে আকরাম খান সাকিবের অনুপস্থিতিতি নিয়ে বিচলিত নন। তার কণ্ঠে উৎকণ্ঠা নয়, বরং আত্মবিশ্বাসের সুর পাওয়া গেল, ‘সাকিব গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার। কিন্তু চোট থাকবেই, এটা নিয়ে আমরা খুব চিন্তিত। আমরা যে হারে খেলছি, এই সমস্যা থাকবেই। তারপরেও ভালো ব্যাকআপ খেলোয়াড় আসছে, তরুণ খেলোয়াড় আসছে। পেস বোলিং ভালো হচ্ছে। আমার মনে হয়, ও থাকলে অবশ্যই শক্তি বাড়ত। ইতোমধ্যেই যে টিম আছে, এটাও ভালো। যদি সেন্সিবল ক্রিকেট খেলে তিনটা বিভাগ যদি ভালো করতে পারি, তাহলে জিতব।’

সাকিবের পরিবর্তে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব কে দিতে পারে তা নিয়ে কোনো কথা বলেননি আকরাম, ‘এটা তো পুরোপুরি বোর্ডের সিদ্ধান্ত। বোর্ড সিদ্ধান্ত নিবে কে অধিনায়ক হবে না হবে। এখন এই নিয়ে কিছু বলার যাবে না।’ অধিনায়ক হিসেবে লিটনকেই বেছে নিতে পারে টিম ম্যানেজমেন্ট। সঙ্গে মিরাজ ও শান্তর নামও আসছে। তাদের নিয়ে আকরাম খান বলেছেন, ‘ওরাই তো ফিউচার। যখনই এদেরকে পিক করা হয়েছিল, কিছু প্লেয়ারের ক্যাপ্টেনসি গুণ থাকে। এগুলো তাদের মধ্যে আছে। পাঁচ থেকে ছয়জন প্রার্থী আছেন। এটা ডিপেন্ড করছে বর্তমান অধিনায়ক যে আছে, সিলেক্টর, কোচ আছে। ওরা মিলে সিদ্ধান্ত নেবে। ক্যাপ্টেন আছে পাঁচ থেকে ছয়জন।’