বাংলাদেশ-আফগানিস্তান সিরিজ

২৭ মে’র পর টেস্ট দল ঘোষণা

প্রকাশ : ২৫ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  স্পোর্টস রিপোর্টার

আফগানিস্তানের বিপক্ষে জুনে একটি টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। ম্যাচটা হবে মিরপুরে। এর আগে বাংলাদেশের কোনো ম্যাচ নেই। তবে ক্রিকেটারদের প্রস্তুতির সুযোগ করে দিতে বড় পরিকল্পনা টিম ম্যানেজমেন্টর। সিলেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দলের বিপক্ষে তিনটি চার দিনের ম্যাচ খেলছে বাংলাদেশ ‘এ’ দল। তৃতীয় ও শেষ চার দিনের ম্যাচে মুমিনুল হক, খালেদ আহমেদ, ইবাদত হোসেনরা খেলবেন। এছাড়া সাদমান ইসলাম, জাকির হাসানরা খেলছেন প্রথম ম্যাচ থেকে। স্বাগতিকদের পরিকল্পনা কেমন হতে পারে সেই ধারণা পাওয়া যেতে সিলেট থেকে। দ্বিতীয় চার দিনের ম্যাচের জন্য সিলেটে ঘাসের উইকেটের প্রস্তুত করা হয়েছে। উইকেটে সবুজাভ। সতেজ ঘাস চোখে পড়ছে। যেখানে স্পিনারদের জন্য তেমন সুবিধা দেখা যাচ্ছে না, সুবিধা পাবেন পেসাররা। তৃতীয় চার দিনের ম্যাচেও থাকবে এমন সবুজ ঘাসের উইকেট। তাতে বোঝা যাচ্ছে রশিদ খানদের সামনে স্পিন নয়, পেস বোলিংয়ের উইকেট দেবে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে এর আগে একটি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হওয়া ম্যাচ বাংলাদেশ হেরেছে বাজেভাবে। চার বছর পর সেই হারের বদলা নিতে মিরপুরে গতিময় উইকেট থাকলে অবাক হওয়ার থাকবে না। যেখানে ব্যাটসম্যানরাও রান পাবেন। প্রস্তুতি সেভাবে হচ্ছে।

কেউ কেউ এরই মধ্যে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্টের ব্যক্তিগত পর্যয়ে অনুশীলন শুরু করেছেন। লিটন দাস মঙ্গলবার ব্যাট হাতে নেমে পড়েন শেরে বাংলায়। বরাবরের মতো উৎসাহি মুশফিকুর রহিমও হয়ত আজকালের মধ্যেই ব্যাটিংটা ঝালিয়ে নিতে মাঠে নেমে পড়বেন। তবে আফগানদের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের আগে বাংলাদেশের টিম প্র্যাকটিস শুরু হবে ২৯ মে থেকে। ১৪ জুন মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে একমাত্র টেস্টের প্রস্তুতির জন্য ২ সপ্তাহের বেশি সময় পাবেন টাইগাররা।

গত কয়েক দিন ক্রিকেট পাড়ায় একটিই কৌতূহলী প্রশ্ন- আফগানদের বিপক্ষে অনুশীলনে ডাক পাবেন কারা? তাদের সংখ্যাই বা কত? খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগামী ২৭-২৮ মে দল ঘোষণা করতে পারেন নির্বাচকরা। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু জানিয়েছেন, আমরা দল চূড়ান্ত করে ফেলবো দুয়েক দিনের মধ্যেই। তবে জালাল ভাই (বিসিবি পরিচালক ও ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস) যুক্তরাজ্য থেকে ফেরার আগে দল ঘোষণা করার সম্ভাবনা খুব কম। তিনি দেশে ফেরার পরই (বর্তমানে তিনি স্কটল্যান্ডে অবস্থান করছেন, ফিরবেন ২৭ মে) দল ঘোষণা করা হবে।

নির্বাচকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা আগে একটি প্রাথমিক দল ঘোষণা করবেন। সেখান থেকে টেস্ট স্কোয়াড বেছে নেয়া হবে। এখন সে দলে চার থেকে পাঁচজন বাড়তি ক্রিকেটারের থাকার সম্ভাবনা আছে। তার কারণও আছে, প্রাথমিক দলে ডাক পাওয়া বেশ কয়েকজন পারফরমার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিলেটে চার দিনের ম্যাচ খেলায় ব্যস্ত থাকবেন। নির্বাচকদের সূত্র নিশ্চিত করেছে, শেষ চার দিনের ম্যাচে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে মুমিনুল হক, শরিফুল আর ইয়াসির আলী রাব্বিকে খেলানো হবে। তার মানে, তারা ২৯ মে থেকে অনুশীলনে যোগ দিতে পারবেন না। ৩০ মে থেকে শুরু হতে যাওয়া চার দিনের খেলা শেষ করে তারপর জাতীয় দলের প্র্যাকটিসে এসে যোগ দেবেন।

টেস্ট খেলতে আগ্রহী নন সাকিব, নিষেধাজ্ঞা পরবর্তী আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারের চিত্র-তে তা স্পষ্ট। নিষেধাজ্ঞাদেশ কাটিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাকিব ফেরার পর খেলেছেন ১০ টেস্ট। এই সময়ে বাংলাদেশ খেলেছে ২২টি টেস্ট। যার মধ্যে অধিনায়ক হওয়ার আগে নিষেধাজ্ঞাদেশ পরবর্তী সময়ে খেলেছেন সাকিব মাত্র পাঁচটি টেস্ট। যে সময়ে বাংলাদেশ খেলেছে ১৭টি টেস্ট। অধিনায়কত্ব ফিরে পেলে টেস্ট দলে নিয়মিত দেখা যাবে সাকিবকে। এই আইডিয়ায় গত বছর জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর সামনে রেখে মুমিনুলের পরিবর্তে সাকিবকে অধিনায়ক করা হয়েছে। তার সুফলও পেয়েছে বিসিবি। বাংলাদেশের সর্বশেষ পাঁচটি টেস্টের সব ক’টিতেই পেয়েছে বিসিবি সাকিবকে। তবে চেম্পসফোর্ডে আয়ারল্যান্ডর বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে সাকিবের আঙুলে ইনজুরি আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট থেকে সাকিবকে ছিটকে ফেলেছে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে বদলা নেয়ার প্রধান হাতিয়ার সাকিবকে পাচ্ছে না বাংলাদেশ।

সাকিবের অনুপস্থিতি ভাবনায় ফেলেছে বিসিবিকে। এমন পরিস্থিতিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট অধিনায়ক নির্বাচনও ভাবনায় ফেলেছে বিসিবিকে। টেস্টে মুমিনুল, তামিম, মুশফিকুর রহিমের অধিনায়কত্ব করার অভিজ্ঞতা আছে। তবে বিসিবি যে প্রক্রিয়ায় তাদের বাদ দিয়েছে, তাতে এদের কেউ আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে অধিনায়কত্ব নিতে চাইবেন বলে মনে হচ্ছে না। লিটন অধিনায়কত্ব নিয়ে আগ্রহী নন। নিয়মিত ক্রিকেটারদের মধ্যে অবশিষ্ট থাকছেন শুধু মিরাজ এবং শান্ত। এই দুইজনের মধ্যে অধিনায়কের সব গুনাবলী আছে বলে মনে করছেন আকরাম খান- ‘অধিনায়ক মনোনয়ন তো বোর্ডের সিদ্ধান্ত। এখন এই নিয়ে কিছু বলার যাবে না। তবে ওরাই তো ফিউচার। কিছু প্লেয়ারের ক্যাপ্টেনসি গুণ থাকে। এগুলো তাদের মধ্যে আছে। বর্তমান অধিনায়ক, সিলেক্টর, কোচ মিলে সিদ্ধান্ত নেবেন।’