ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বাংলাদেশ-আফগানিস্তান সিরিজ

কেমন উইকেটে খেলবে বাংলাদেশ?

কেমন উইকেটে খেলবে বাংলাদেশ?

বিসিবি ইনডোরের বাইরের নেটে প্রায় ঘণ্টাখানেক ব্যাটিং করলেন লিটন দাস। তার ফেরার পথে নেটে গেলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। গত কয়েক দিন ব্যক্তিগত অনুশীলন করে চলেছেন মুশফিকুর রহিম, মেহেদী হাসান মিরাজরাও। জাতীয় দলের দায়িত্ব থেকে আপাতত এখন তাদের ছুটি। তবে সামনেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ, এই সময় নিজেদের তো আর ছুটি দেয়া যায় না! মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে আগামী ১৪ জুন শুরু আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট। ওই ম্যাচের আগে মুশফিক-লিটনরা যেমন শুরু করেছেন অনুশীলন, তেমনি বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্টও অনেকটা গুছিয়ে নিয়েছে নিজেদের পরিকল্পনা। আফগানদের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত একটিই টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে বৃষ্টিবিঘিœত ওই ম্যাচে ২২৪ রানে বিব্রতকর এক পরাজয়ের স্বাক্ষী হয় বাংলাদেশের ক্রিকেট। সেবার ম্যাচে প্রথম দিন থেকেই উইকেট নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন সাকিব আল হাসান। স্পিনবান্ধব উইকেটের আশায় কোনো বিশেষজ্ঞ পেসার ছাড়া খেলতে নামলেও অধিনায়ক সেই সময় বলেছিলেন, নিজেদের প্রত্যাশা মতো উইকেট পাননি তারা। সবশেষ টেস্টের ওই নেতিবাচক অভিজ্ঞতার পর এবার আরেকটি আফগান টেস্টের আগে আলোচনার কেন্দ্রে থাকা উইকেট। এই সংস্করণের নবীন দলটির বিপক্ষে কোন পরিকল্পনায় এগোবে বাংলাদেশ, তা নিয়ে চলছে জল্পনা

আগামী মাসে দুই ধাপে বাংলাদেশ সফরে আসবে আফগানরা। মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে প্রথম দফায় আগামী ১৪ জুন খেলবে একটি টেস্ট। ২০১৯ সালে স্পিন উইকেট বানিয়েও সফরকারী আফগানিস্তানের কাছে বিধ্বস্ত হয়েছিল বাংলাদেশ। পূর্বের অভিজ্ঞতা সুখকর না হওয়ায় এবার উইকেট কেমন হবে, সেই প্রশ্নই সর্বত্র। তবে জাতীয় দলের নির্বাচক ও জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার উইকেটের ধরন নিয়ে বিস্তারিত জানাতে চাইলেন না!

চার বছর আগে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে চট্টগ্রামকে স্পিন স্বর্গ বানানোর পর দেখা গেলো সেটা নিজেদের জন্যই মৃত্যুকূপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ তাদের জানা ছিল সফরকারীদের দুর্দান্ত স্পিন আক্রমণে রশিদ খান, কায়েস আহমেদ, জহির খান ও মোহাম্মদ নবীদের মতো স্পিনার রয়েছেন। ফলে বিশ্বমানের স্পিনারদের সামনে নিজেরাই খেই হারান স্বাগতিকরা।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২০১৯ সালের সেই হারের স্মৃতি নিয়ে বাশার বলেন, ‘আমরা এখন অনেক আত্মবিশ্বাসী। আফগানিস্তান খুব ভালো দল। তাদের সাথে শেষ টেস্ট ম্যাচ আমরা ভালো খেলি নাই। আমরা হেরেছিলাম। কিন্তু এবারের ম্যাচটাতে অবশ্যই ভালো খেলতে চাই। আমার মনে হয় এখন দলটা অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী। কোন উইকেটে খেলতে চাই, কোন উইকেটে খেলা উচিত আমরা পরিষ্কার। কাজেই যে সিদ্ধান্ত নেই, আমাদের অসুবিধা হবে না।’ আসন্ন সিরিজের একমাত্র টেস্টের উইকেট নিয়ে গতকাল মিরপুরে গণমাধ্যমকে হাবিবুল বাশার বলেছেন, ‘উইকেট কেমন হবে সেটা তো বলতে পারব না। যে পরিকল্পনা সেটা আমাদের মধ্যে থাকুক। সেটা ডিসক্লোজ করতে পারবো না। বাংলাদেশ দল দুটি ডিপার্টমেন্টেই ভালো। সাকিবের বোলিং তো বাংলাদেশ ডেফিনেটলি মিস করবে। বাট সাকিব ছাড়া তাইজুল আছে, মিরাজ আছে; তারাও কিন্তু যথেষ্ট ভালো বল করে টেস্ট ম্যাচে। আমাদের ফাস্ট বোলিং ডিপার্টমেন্টটা অনেক রিচ। সো আমাদের যে রকম দরকার, টিম অনুযায়ী ওই রকম সিদ্ধান্ত নিতে পারি। সেটা নিয়ে অনেক আগেই চিন্তা ভাবনা হয়ে গেছে।’

আফগানদের স্পিন আক্রমণের পাশাপাশি পেস আক্রমণও দুর্দান্ত। সবমিলিয়ে কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্বেও আছে টিম ম্যানেজমেন্ট। যদিও হাবিবুল বাশার বিষয়টি স্বীকার করলেন না, ‘আমাদের তো প্ল্যান আছেই। নিজেরা প্ল্যান নিয়ে যথেষ্ট পরিষ্কার। মিরপুরের উইকেট কেমন হতে পারে, না পারে সেটা সম্পর্কে আমাদের খুব ভালো ধারণা আছে। সেভাবেই মনের মতো করে উইকেট তৈরি করা হচ্ছে।’

আফগানিস্তান সিরিজের প্রস্তুতি আগামী সপ্তাহের প্রথম দিন থেকে শুরু হবে। তার আগে মুশফিক, লিটন, শান্তরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনুশীলন করছেন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে কারা থাকবেন তা নিয়ে এই মাসের মধ্যেই সিদ্ধান্ত হয়ে যাওয়ার কথা, ‘যেহেতু ‘এ’ দলের খেলা চলছে। আমরা ওই খেলাটাও দেখছি। আমাদের কোচ আসবেন ৩ জুন। তো এই মাসের শেষের দিকে দলটা হয়ে যাবে।’ টেস্ট দলে খুব একটা চমক থাকবে না বলেই জানালেন হাবিবুল, ‘চমক বলে তেমন কিছু নেই। টেস্ট দলটা করবো যে দলটা ডেফিনিটলি জিততে পারে। বেস্ট পসিবল প্লেয়ারদের নিয়ে দলটা করবো।’ উইকেটের কারণেই কি দল নির্বাচনে দেরি হচ্ছে? এমন প্রশ্নে হাবিবুল বলেছেন, ‘না সিদ্ধান্ত নিতে টাফ হচ্ছে না। কারণ, আমরা এখন অনেক কনফিডেন্ট টিম। আফগানিস্তান খুব ভালো দল। তাদের সঙ্গে লাস্ট টেস্ট ম্যাচ ভালো খেলি নাই, হেরেছিলাম। এবারের ম্যাচটাতে ডেফিনেটলি ভালো খেলতে চাই। আমার মনে হয় এখন দলটা অনেক বেশি কনফিডেন্ট।’

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডেতে ক্যাচ ধরতে গিয়ে চোটে ছিটকে গেছেন সাকিব। তার অবর্তমানে কিছুটা অসুবিধা হলেও হাবিবুল অন্যদের ওপরও আস্থা রাখছেন, ‘সাকিব না থাকলে একটা প্লেয়ার কমে যায়। সাকিব থাকলে আমরা একটা বাড়তি ব্যাটসম্যান নিয়ে খেলতে পারি অথবা একজন বোলার বেশি নিয়ে খেলতে পারি। কন্ডিশন অনুযায়ী সেটা আমরা করে থাকি। ওর না থাকাটা স্টেপ ব্যাক। ওয়ার্ল্ড ক্রিকেটে খুব কম ক্রিকেটারই আছেন যারা ব্যাটিং-বোলিং করে দলে আসতে পারে। সাকিবের ব্যাটিং-বোলিং আমরা মিস করবো। আমার মনে হয় বাকি যারা দলে আছে, তাদেরও দায়িত্ব থাকবে।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত