জেসি হতে চান অনুপ্রেরণা

প্রকাশ : ২৭ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  স্পোর্টস রিপোর্টার

আগামী ১২ থেকে ২১ জুন হংকংয়ে বসবে নারী ইমার্জিং এশিয়া কাপের আসর। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের এই আসরে আম্পায়ার হিসেবে থাকবেন বাংলাদেশের সাথিরা জাকির জেসি। একসময় মাঠ দাপিয়ে বেড়ানো এই নারী ক্রিকেটার ধারাভাষ্যকার হিসেবেও প্রশংসা কুড়িয়েছেন। এরপর মনোনিবেশ করেন আম্পায়ারিংয়ে। ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আম্পায়ার হিসেবে পদচারণা তার।

বাংলাদেশ ক্রিকেটের সুপরিচিত মুখ সাথিরা জাকির জেসি জানান, ‘ছোটবেলা থেকে আমার একটা স্বপ্নই ছিল ক্রিকেটার হব, জাতীয় দলে খেলব। স্বপ্ন পূরণও হয়েছে। যখন ক্রিকেট ক্যারিয়ার শেষের দিকে তখন আমি ধারাভাষ্য দেওয়া শুরু করি। আন্তর্জাতিক পর্যায়েও ধারাভাষ্য করেছি। খেলা ছাড়ার সময় যখন ঘনিয়ে আসছে তখন আমার মনে হয়েছে মাঠের মাঝখানে কীভাবে থাকা যায়? ক্রিকেটের যেই উত্তেজনা সেটা কীভাবে ধরে রাখা যায়! তখন আমার মনে হলো, আম্পায়ারিং সবচেয়ে ভালো জায়গা।’

ক্রিকেটের প্রতি ভালো লাগা কবে থেকে, কার খেলা অনুপ্রাণিত করত? এমন প্রশ্নের জবাবে গণমাধ্যমকে জেসি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটের প্রতি ভালোলাগা ও ভালোবাসা জন্মায়। মামা ও বড় ভাইদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলতাম। ছোটবেলা থেকে শচীন টেন্ডুলকারের খেলা দেখে বড় হয়েছি। তার খেলা ভালো লাগত। একের পর এক সেঞ্চুরি আমাকে মুগ্ধ করত। শচীনের বড় একটা পোস্টার আমার রুমে ছিল। শচীন, সৌরভ, আফ্রিদি তাদের খেলা দেখেই ক্রিকেটার হওয়ার ইচ্ছে জাগে।’

মেয়ে হিসেবে সমাজে সীমাবদ্ধতা থাকে, যখন ক্রিকেট খেলা শুরু করলেন তখন পরিবার ও আশপাশের মানুষ বিষয়টাকে কীভাবে নিয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে জেসি বলেন, ‘আমি যখন অনেক ছোট তখনই আশপাশের মানুষ অনেক কথা বলত। তারা বলত, মেয়ে হয়ে সারা দিন ছেলেদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলি, ইত্যাদি। মেয়েরা চিরাচরিত যেই খেলাগুলো খেলে, তা কখনো খেলা হয়নি। আমার যেটা সুবিধা ছিল, আম্মু আমাকে এভাবেই বড় করেছে, সব ধরনের খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করিয়েছে। আম্মু আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে, তারা কখনোই না করেনি।’

জ্যোতি-জাহানারাদের খেলা দেখে মাঠের ক্রিকেট কতটা মিস করেন? এই প্রশ্নের জবাবে জেসি বলেন, ‘২০০৭ সাল থেকে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের সঙ্গে আমি আছি। দলের সহঅধিনায়ক ছিলাম, এশিয়া কাপ খেলেছি, এশিয়ান গেমসে খেলেছি, বহু টুর্নামেন্ট খেলেছি। জাহানারা-জ্যোতিদের খেলা যখন দেখি তখন তো অবশ্যই খেলার মাঠ মিস করি। খুব বেশি মিস করি তাও না, যেহেতু প্রিমিয়ার লিগ, ন্যাশনাল লিগ খেলছি, শুধু জাতীয় দলের হয়ে খেলা হচ্ছে না। তাদের সঙ্গে আমি এখনও ড্রেসিং রুম শেয়ার করছি। সামনে প্রিমিয়ার লিগ, এবারই হয়তো শেষবারের মতো ড্রেসিং রুম শেয়ার করা হবে, যেহেতু আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আম্পায়ারিংয়ে ঢুকে গেছি।’ তিনি বলেন, ‘আমি ১০ জুন ইমার্জিং এশিয়া কাপে আম্পায়ারিং করতে যাব হংকং-এ। বাংলাদেশ থেকে প্রথম কোনো নারী হিসেবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আম্পায়ারিং করব। আমার জন্য এটা বড় অর্জন। নারী ক্রিকেটের জন্যও। মেয়েরা যে শুধু ক্রিকেটে আটকে থাকবে এমন না, খেলার পরে কোচিং আছে। আম্পায়ারিং আছে, স্কোরিং আছে, ধারাভাষ্য আছে। বাংলাদেশি হিসেবে আমরা অনেক অনেক পিছিয়ে আছি। আমাকে দেখে অনেকে হয়তো আগ্রহী হবে।’