ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সবকিছু ‘শূন্য’ মনে হচ্ছে

সবকিছু ‘শূন্য’ মনে হচ্ছে

দীর্ঘ ১১ বছর পর জার্মান বুন্দেস লিগার শিরোপা জয়ের দ্বারপ্রান্তে ছিল বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। প্রয়োজন ছিল কেবল একটি জয়। গত শনিবার রাতে মেইঞ্জের বিপক্ষে জিতলেই অপেক্ষার অবসান হতো। কিন্তু পারল না কালো-হলুদ জার্সিধারীরা। মেইঞ্জের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে তারা ২-২ গোলে ড্র করে। অন্যদিকে বায়ার্ন মিউনিখ শেষ ম্যাচে এফসি কোলনকে ২-১ গোলে হারিয়ে সমান পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে এগিয়ে টানা ১১তম লিগ শিরোপা জিতে নেয়। তাও আবার অন্তিম মুহূর্তের গোলে! শিরোপা হাতছাড়া করতে বসা বায়ার্ন শিরোপা জয়ের উল্লাসে মাতে। ম্যাচ শেষ হলেও তাদের উল্লাস আর উচ্ছ্বাস থামছিল না। ঠিক বিপরীত চিত্র ছিল বরুশিয়ার মাঠ সিগন্যাল ইদুনা পার্কে। খেলোয়াড়রা কান্নায় ভেঙে পড়েন। দীর্ঘ ১১ বছর পর শিরোপার উল্লাস করতে মাঠে প্রবেশ করা ৮১ হাজার দর্শক ভগ্ন হৃদয়ে মুষড়ে পড়েন। প্রায় পেয়েও হারানোর বেদনার ছাপ স্পষ্ট ছিল তাদের চোখে-মুখে।

বায়ার্ন মিউনিখের সমান পয়েন্ট নিয়েও স্রেফ গোল পার্থক্যে পিছিয়ে বুন্দেসলিগা চ্যাম্পিয়ন না হতে পেরে ডর্টমুন্ডের কষ্টের শেষ নেই। কোচ এডিন টেরজিক যেমন, অনুভূতি প্রকাশের ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন। লিগে এই মৌসুমে ডর্টমুন্ডকে অনেক চড়াই-উতরাই পার করতে হয়েছে। আসরের মাঝামামাঝি সময়ে তারা শিরোপার দৌড়েই ছিল না। নভেম্বরে বিশ্বকাপ বিরতির আগে লিগ টেবিলে বায়ার্ন মিউনিখের চেয়ে ৯ পয়েন্টে পিছিয়ে ষষ্ঠ স্থানে ছিল তারা।

এরপর থেকে বদলে যেতে থাকে চিত্র। ছন্দপতন হয় বায়ার্নের। গত মার্চে সবাইকে অবাক করে দিয়ে কোচ ইউলিয়ান নাগেলসমানকে বরখাস্ত করে টমাস টুখেলকে দায়িত্ব দেয় দলটি। তবে এরপরও তাদেরকে চিরচেনা বিধ্বংসী রূপে দেখা যায়নি। বরং নিজেদের অধারাবাহিকতায় শিরোপা লড়াই জমিয়ে তোলে বায়ার্ন।

শেষের আগের রাউন্ডে বায়ার্ন হারলে নিজেদের ম্যাচ জিতে টুখেলের দলের চেয়ে ২ পয়েন্ট এগিয়ে শীর্ষে বসে ডর্টমুন্ড। মেইঞ্জের বিপক্ষে শনিবারের ম্যাচে তাই জিতলেই চ্যাম্পিয়ন হতো ডর্টমুন্ড। ঘরের মাঠের ম্যাচটিতে উৎসবের আমেজে ভীড় করে দলটির সমর্থকরা। তবে বিধিবাম। ২৪ মিনিটের মধ্যে দুই গোল হজম করে বসে দল। মাঝে পেনাল্টি মিস করেন সেবাস্টিয়ান হলার। ৬৯ মিনিটে গিয়ে ব্যবধান কমান রাফায়েল গেরেইরো। এরপর যোগ করা সময়ের ষষ্ঠ মিনিটে সমতা টেনে ডর্টমুন্ড শিবিরে ক্ষীণ সম্ভাবনা জাগান নিকলাস সুলে। তবে জয়সূচক গোলের দেখা আর মেলেনি। একই সময়ে শুরু হওয়া নাটকীয়তায় ভরা অন্য ম্যাচে কোলনকে ২-১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে যায় বায়ার্ন। দুই দলের পয়েন্ট সমান ৭১ হলেও গোল পার্থক্যে পিছিয়ে রানার্সআপ ডর্টমুন্ড।

ইএসপিএনের সঙ্গে আলাপচারিতায় টেরজিক বললেন, চেষ্টার কোনো কমতি রাখেনি তার দল, ‘এই মুহূর্তে অনূভুতি প্রকাশের ভাষা খুঁজে পাওয়া কঠিন। সবকিছু শূন্য মনে হচ্ছে। কারণ সামনে কী সুযোগ ছিল, আমরা জানতাম। স্টেডিয়াম ও এই শহরে মানুষদের মধ্যে তা অনুভব করতে পারছিলাম। আমরা সবাই এটি খুব করে চেয়েছিলাম। আমরা খুব কাছাকাছি ছিলাম - স্রেফ একটি গোলের ঘাটতি ছিল, এটা ছিল অন্য স্টেডিয়ামে একটি গোল কম করার মতো। জানতাম যে, আমরা শিরোপা জয় থেকে ৯০ মিনিট দূরে আছি।’ হতাশা পেছনে ফেলে আগামী মৌসুমে আবার শুরু থেকে লড়াইয়ের প্রত্যয় টেরজিকের কন্ঠে, ‘মেইঞ্জের বিপক্ষে ম্যাচের আগে আমরা শিরোপা থেকে ৯০ মিনিট দূরে ছিলাম। আর এখন আবার সেই চেষ্টা করার জন্য আমরা ৩৪ ম্যাচ দূরে আছি। সেই লক্ষ্যে আগামীকাল থেকে আমরা আবার চেষ্টা শুরু করব।’

বায়ার্ন ম্যানেজার থমাস টুখেল গণমাধ্যমে বলেছেন, ‘শিরোপা জয়ের পর উদযাপনটা কঠিন ছিল। কারণ ক্লাবের পক্ষ থেকে শিরোপা জয় সত্ত্বেও প্রধান নির্বাহী অলিভার কান ও স্পোর্টিং ডাইরেক্টর হাসান সালিহামিডিজের বরখাস্তের ঘোষণা এসেছে। জয়ের উৎসব বাদ দিয়ে এখন আমাদের অন্য বিষয় নিয়ে কথা বলতে হচ্ছে। গতকালই আমি এই সিদ্ধান্ত জানতে পেরেছি।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত