২৬ জনের দলেও নেই মাহমুদউল্লাহ!

প্রকাশ : ৩০ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  স্পোর্টস রিপোর্টার

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ শেষ হওয়ার পর দুই-তিনজন ক্রিকেটার ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনুশীলন করলেও মিরপুর ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এতদিন ব্যস্ততা দেখা যায়নি। তবে সোমবার সকাল হতেই ক্রিকেটাদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে মিরপুর ইনডোর, একাডেমিসহ মূল মাঠ। আগামী মাসের শুরুতে একটি টেস্ট খেলতে বাংলাদেশে আসবে আফগানিস্তান। তার আগে মিরপুরে ক্রিকেটারদের প্রি-সিরিজ ক্যাম্প শুরু হয়েছে গতকাল। প্রধান কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহে না থাকলেও সকালে বিসিবি একাডেমিতে স্পিন বোলিং কোচ স্পিনারদের নিয়ে কাজ শুরু করেন। জাতীয় দলের স্পিনার ছাড়া তরুণ বেশ কয়েজন স্পিনার ভ্যারিয়েশন ক্যাম্পে ছিলেন। তাছাড়া জাতীয় দলের সহকারী কোচ নিক পোথাসও ইনডোরে প্রি-সিরিজ ক্যাম্পের ব্যাটসম্যান-বোলারদের নিয়ে কাজ করেছেন। প্রধান কোচ হাথুরুসিংহের পরিকল্পনায় ক্যাম্প পরিচালিত হচ্ছে জানিয়েছেন ম্যানেজার নাফিস ইকবাল। আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের একমাত্র টেস্ট শুরু ১৪ জুন। এরপর কিছুটা বিরতি দিয়ে ঈদের পর ওয়ানডে সিরিজের ৩ ম্যাচ ৫, ৮ ও ১১ জুলাই। সেজন্য ২৬ ক্রিকেটারের ডাক পড়েছে। যদিও লম্বা তালিকা থেকে বাদ পড়েছে মাহমুদউল্লাহর নাম। মাহমুদউল্লাহ ছাড়া প্রি-সিরিজ ক্যাম্পের পাঁচজন ক্রিকেটার সিলেটে ‘এ’ দলের সঙ্গে থাকায় গতকাল উপস্থিত ছিলেন না।

অনুশীলনের ফাঁকে দলের ম্যানেজার ও সাবেক জাতীয় ক্রিকেটার নাফিস ইকবাল প্রি সিরিজ ক্যাম্প নিয়ে বলেছেন, ‘প্রি-সিরিজ ক্যাম্পে যা হয়, সাধারণত একটা সিরিজের আগে যদি সময় থাকে, তখন আমরা এমন একটা ক্যাম্প করি। এরপর যখন যে সংস্করণে খেলা হয়, তখন সে সংস্করণটাকে গুরুত্ব দিয়ে এগোতে হয়। আমাদের এখন ২৬ জনের দল দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৫ জন ‘এ’ দলে আছে। বাকিরা এখানে যোগ দিয়েছে। যেহেতু ‘এ’ দলের খেলা আছে। ৩ জুন ‘এ’ দলের চার দিনের খেলা শেষ হলে দু-এক দিন বিশ্রাম নিয়ে আমাদের সঙ্গে বাকিরা যোগ দেবে। তখন আমাদের সবাই একসঙ্গে অনুশীলন করবে।’ এত ক্রিকেটারের ভিড়ে মাহমুদউল্লাহর না থাকার কারণ জানতে চাইলে নাফিসের জবাব, ‘এই প্রশ্নটা মনে হয় না আমার জন্য। এটা নির্বাচকদের ব্যাপার।’

মাহমুদউল্লাহ জাতীয় দলে নেই গত মার্চে ইংল্যান্ড সিরিজের পর থেকে। টেস্ট ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়েছেন আগেই। টি-টোয়েন্টি দলেও জায়গা হারিয়েছেন গত বছর। এরপর শুধু ওয়ানডে দলে ছিলেন। গত মার্চে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে ওয়ানডে দল থেকে ‘বিশ্রাম’ দেয়া হয় তাকে। বিশ্রাম চলতে থাকে চলতি মাসে ইংল্যান্ড সফরে আয়ারল্যান্ড সিরিজের সময়ও। আফগানদের বিপক্ষে হোম সিরিজেও সেই বিশ্রাম পর্ব চলে কি না, দেখার ছিল তা। তবে দল ঘোষণার অনেক আগেই গতকাল বিসিবিতে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সেই কৌতূহলের সমাপ্তি টেনে দেন বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস, ‘রিয়াদ (মাহমুদউল্লাহ) আমাদের কাছে আবেদন করেছে, সে হজে যাচ্ছে। ২২ জুন থেকে ৫ জুলাই হজে থাকবে। আমরা সেটা অনুমোদন দিয়েছি। হজের পর সে ক্যাম্পে যোগ দেবে। ওয়ানডে সিরিজ সে মিস করবে। প্রথম ম্যাচই ৫ জুলাই।’

ভারতে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপে তার থাক-না থাকা নিয়ে আলোচনা চলছে। আফগানিস্তান সিরিজের পর ও বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশ ওয়ানডে খেলবে সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপ ও নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে সিরিজ। দুটিই একদম বিশ্বকাপের আগে। ওই দুই আসরে বিশ্বকাপ দলটিরই খেলার সম্ভাবনা প্রবল। তাই আফগানিস্তান সিরিজে না থাকা মানে বিশ্বকাপ দলে থাকার সম্ভাবনায় বড় চোট হওয়ারই কথা। জালাল ইউনুস অবশ্য মনে করেন, মাহমুদউল্লাহর এবারের ছুটির সঙ্গে বিশ্বকাপ দলে থাকার সম্ভাবনায় কোনো সংঘাত হবে না, ‘দেখুন, এটা খুব স্পর্শকাতর ইস্যু। সে হজ পালন করতে চাচ্ছে, আমরা সবাই চাই। এখানে সবাইকে আপস করতেই হবে। হজ পালন করা আমাদের মুসলমানদের জন্য ফরজ। সে একটা ফরজ কাজ করতে যাচ্ছে, সেখানে তো অবশ্যই আমাদেরও সাপোর্ট দিতে হবে, বিবেচনায় নিতে হবে। সেখানেৃ সেদিক থেকে তার হ্যাম্পার হওয়ার কথা নয়। নির্বাচিত হবে নাকি হবে না, এটা তো নির্বাচকরাই বলে দেবেন। তবে এটার জন্য (হজ) ওটার কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’