কুমিল্লায় আগের দিন চিরশত্রু মোহামেডানের কাছে ফেডারেশন কাপের ফাইনাল হেরেছে আবাহনী। ক্রিকেটেও হার দেখল দেশের প্রথম আধুনিক ঘরানার দলটি। ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলি স্টেডিয়ামে ঢাকা প্রিমিয়ার নারী ক্রিকেট লিগে গতকাল তাদের বিপক্ষে ৮ রানের রোমাঞ্চকর জয় পায় খেলাঘর সমাজকল্যাণ সংঘ, ১৭০ রানের পুঁজি নিয়ে আবাহনীকে ১৬২ রানে বেঁধে ফেলে তারা!
সুলতানা খাতুনের অফ স্টাম্পের বাইরের বল সুইপ করলেন জাহানারা আলম। ওপরের কানায় লেগে বল চলে গেল ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে থাকা বৃষ্টি দাসের হাতে। উল্লাসে মেতে উঠলেন খেলাঘরের ক্রিকেটাররা। তখনও বাকি ১ উইকেট। কিন্তু জয়ের পথে বড় কাঁটা উপড়ে ফেলার উচ্ছ্বাস তখন খেলাঘর শিবিরে। পরের ওভারে শেষ উইকেট নিয়ে দারুণ জয়ের উল্লাসে মেতে উঠল তারা। অথচ রান তাড়ায় শামিমা সুলতানা ও মুর্শিদা খাতুনের উদ্বোধনী জুটিতে ভালো শুরু পায় আবাহনী। কিন্তু মিডল অর্ডারের ব্যাটাররা হতাশ করলে পরাজয়ই তাদের সঙ্গী হয়। আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করা লতা এবার ৭২ রানের ইনিংস খেলে হন ম্যাচসেরা। বল হাতে তিনটি করে উইকেট নেন সুলতানা ও ফাহিমা খাতুন।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে খেলাঘরের পক্ষে ঝড়ো শুরু করেন দিলারা আক্তার, স্রেফ ২৬ বলে ৩৭ রান করেন কিপার-ব্যাটার। টপ-অর্ডারের বাকি দুজন ব্যর্থ হলে পঞ্চাশের আগে ৩ উইকেট হারায় তারা। চতুর্থ উইকেটে ৭৫ রান যোগ করেন লতা ও স্বর্ণা আক্তার। সবশেষ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের সেরা একাদশে জায়গা পাওয়া স্বর্ণা খেলেন ১ চার ও ২ ছয়ে ৪৭ বলে ৩২ রানের ইনিংস। বাকি ব্যাটারদের কেউ লতাকে সঙ্গ দিতে পারেননি। এক প্রান্তে লড়াই করে খেলাঘরকে দেড়শ পার করান অধিনায়ক। আবাহনীর পক্ষে ৩ উইকেট নেন ইশমা তানজিম।
রান তাড়ায় ৬১ রানের জুটি গড়েন আবাহনীর দুই ওপেনার। মুর্শিদা ৩২ রান করে ফিরলেও অন্য প্রান্তে এগোতে থাকেন শামিমা। ৭৮ বলে ৪ চারে ৫০ ছুঁয়ে ফেলেন জাতীয় দলের এই কিপার-ব্যাটার। ফাহিমার বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে আউট হন শামিমা। পরে হতাশ করেন শম্পা, একা মল্লিক, আফিয়া আনাম প্রত্যাশারা। ভারতীয় ব্যাটার শিভানি সিংয়ের সঙ্গে সপ্তম উইকেটে জুটি বেধে জয়ের আশা বাঁচিয়ে রাখেন অধিনায়ক জাহানারা। দলের স্কোর ১৫০ ছোঁয়ার ঠিক আগে রান আউটে কাটা পড়েন ২২ রান করা শিভানি। তবু একপ্রান্তে চেষ্টা করেন জাহানারা। তাকে ১৯ রানে ফিরিয়ে খেলাঘরের জয় প্রায় নিশ্চিত করে দেন জাতীয় দলে সদ্য অভিষেক হওয়া অফ স্পিনার সুলতানা। পরের ওভারে দারুণ ফিরতি ক্যাচে ফাতেমা জাহানকে ফিরিয়ে জয় নিশ্চিত করেন জাতীয় দলের লেগ স্পিনার ফাহিমা।
