ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

‘উন্নতমানের নয়, সেরাদের একজন’

‘উন্নতমানের নয়, সেরাদের একজন’

বাংলাদেশের ক্রিকেটের সঙ্গে চন্দিকা হাতুরাসিংহের সম্পর্কটা আবারও পুনঃস্থাপিত হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় জাতীয় দলের দায়িত্ব নিয়ে সবকিছু নতুন করে সাজাচ্ছেন। ছেঁটে ফেলা হয়েছে মাহমুদউল্লাহকে। দলে তারুণ্যের ছড়াছড়ি। সাফল্যও আসছে বেশ। তবুও হাতুরাসিংহেকে ‘উন্নতমানের কোচ’ বলতে নারাজ বিসিবির অন্যতম পরিচালক আকরাম খান। জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়কের কাছে, হাতুরাসিংহে বাংলাদেশে কাজ করা কোচদের মধ্যে অন্যতম সেরা। এটা সত্য যে, ক্রিকেট দুনিয়ার হাইপ্রোফাইল কোচদের তালিকায় হাতুরাসিংহের নাম আসে না। তার অধীনেই আগেরবার দারুণ সব সাফল্য পেয়েছিল বাংলাদেশ দল। এবারও দল ভালো করতে শুরু করেছে। ড্রেসিংরুমের পরিবেশ ঠিক হচ্ছে। ফিরেছে শৃঙ্খলা। হাতুরার এই ম্যাজিক্যাল কোচিং নিয়ে আকরাম বলেন, ‘আমি এটা বলব না যে, সে অনেক উন্নতমানের কোচ। তবে বাংলাদেশে যতগুলো কোচ এসেছে, সে সেরাদের একজন। ওর ক্রিকেটীয় জ্ঞান তো আছেই, এর বাইরে যে কার্যক্রমগুলো আছে, সেটা অন্য কোচদের থেকে পাই না। সেজন্যই আমরা ওর সঙ্গে পারফরম্যান্সটা ভালো করি।’ চলতি জুন মাসে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ফরম্যাটে হোম সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। আগের বার বাংলাদেশে এসে টেস্ট জিতে গিয়েছিলেন রশিদ খানেরা। এবার হাথুরাসিংহে থাকায় তেমন আশঙ্কা দেখছেন না আকরাম, ‘আশা করছি, হাথুরাসিংহে যেহেতু দলের সঙ্গে আছে, আমরা ভালো পারফরম্যান্স করব। দুইজনের দিক থেকে, কোচ হিসেবে এবং প্লেয়াররাও রিসেন্টলি অনেক ভালো ভালো ইনিংস খেলেছে। তরুণ ক্রিকেটাররা ভালো করছে, ফাস্ট বোলাররাও ভালো করছে। তো আমার মনে হয়, আমাদের সম্ভাবনা বেশি।’

তিন ফরম্যাটের পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে আগামী ১০ জুন বাংলাদেশে আসছে আফগানিস্তান দল। এই সফরে নিঃসন্দেহে তাদের সেরা অস্ত্র হবেন রশিদ খান। যদিও এই তারকা লেগ স্পিনার এখন ইনজুরিতে আছেন। বিসিবির পরিচালক তথা সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান মনে করেন, রশিদ খান শুধু টি-টোয়েন্টিতেই হুমকি হয়ে উঠতে পারেন, বাকি দুই ফরম্যাটে নয়। মিরপুরের টিপিক্যাল ঘূর্ণি উইকেটে ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারেন রশিদ খান। তাই পেস সহায়ক উইকেট তৈরির একটা আলোচনা শোনা যাচ্ছে। আফগান সিরিজের উইকেট নিয়ে মুখ খুলতে রাজি নন আকরাম খানও।

চার বছর আগে আফগানিস্তানের বিপক্ষে স্পিন উইকেট বানিয়ে বাংলাদেশ-ই বিপদে পড়েছিল। আসন্ন টেস্টটিতে সেই ঝুঁকি নিতে চায় না স্বাগতিকরা। বরং স্পোর্টিং উইকেটে বানিয়ে ম্যাচটাকে উপভোগ্য করার পরিকল্পনা। বিসিবির পক্ষ থেকে সেসবের বিস্তারিত জানানো হচ্ছে না যদিও। তা নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনাও। তবে বিসিবির পরিচালক আকরাম খান জানিয়েছেন, তিনি অধিনায়ক হলে বাংলাদেশের চিরাচরিত উইকেটে আফগানদের খেলতে আমন্ত্রণ জানাতেন।

সাধারণত প্রতিপক্ষের শক্তি-দুর্বলতার পাশাপাশি নিজেদের শক্তিমত্তা বিবেচনা করে টিম ম্যানেজমেন্ট ও অধিনায়ক উইকেট তৈরির প্রস্তাব দিয়ে থাকেন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে আগের সিরিজে অধিনায়ক সাকিব স্পিনিং উইকেটে খেলতে চেয়েছিলেন। এবার নতুন অধিনায়ক কী চাইবেন সেটিই প্রশ্ন। যদিও আকরাম জানিয়েছেন, অধিনায়ক হলে বাংলাদেশ সব সময় যেমন উইকেটে খেলে সেটাই চাইতেন তিনি, ‘আমি অধিনায়ক হলে ১২ মাস যেমন উইকেটে খেলি, সে ধরনের উইকেট চাইতাম।’

বাংলাদেশের ঘরোয়া লিগ সাধারণত স্লো উইকেটে হয়ে থাকে। ইদানিং অবশ্য উইকেট থেকে পেসারদের কিছুটা হলেও সহায়তা মিলছে। পেসবান্ধব উইকেটে সুবিধা বেশি হবে কি না- এমন প্রশ্নে আকরাম খান বলেছেন, ‘আমার মনে হয়, উইকেটের চেয়ে দলের এপ্রোচটা কেমন থাকে সেটা গুরুত্বপূর্ণ। আপনি ভালো উইকেটেও হারতে পারেন, খারাপ উইকেটেও জিততে পারেন। আমার মনে হয় অন্যদের বোলার কে কী করছে, শক্তি কী- এসব না ভেবে নিজেদের দিকটা চিন্তা করলে ভালো করব।’

আফগানদের মূল অস্ত্র লেগ স্পিনার রশিদ খান। তবে লংগার ভার্সন ক্রিকেটে রশিদকে নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই বলেই মন্তব্য আকরামের, ‘রশিদ খান অবশ্যই ভালো বোলার এবং সে টি-টোয়েন্টিতে ভালো। ওয়ানডে ও টেস্টে কিন্তু ওরকম আহামরি পারফরম্যান্স নেই। টি-টোয়েন্টিতে প্রত্যেকটা বল রানের জন্য খেলতে হয়, সুযোগ নিতে হয়। তো সতর্কতার সঙ্গে খেললে অত কষ্ট হবে না।’ প্রথম সফরে আগামী ১৪ জুন থেকে মিরপুরে একমাত্র টেস্ট খেলবে আফগান দল। তার পর তারা ভারত সফরে চলে যাবে। ঈদুল আজহার পর শুরু হবে বাংলাদেশের বিপক্ষে সীমিত ওভারের সিরিজ। আফগানদের বিপক্ষে এই সিরিজে কঠিন পরীক্ষায় পড়তে হবে বলে মনে করেন সাবেক এই অধিনায়ক, ‘আফগানিস্তানকে কোনওভাবে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। ওদের কোয়ালিটি ক্রিকেটার, বোলার অনেক আছে। ব্যাটার যারা আছে ওদের ধারাবাহিকতা অনেক ভালো। ফলে ওদের সহজভাবে নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। ওরা শক্তিশালী একটা দল এবং শ্রীলঙ্কাকে ওদের মাটিতেই সম্প্রতি হারিয়েছে।’

৪ বছর আগে আফগানিস্তানের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে হার প্রসঙ্গে আকরাম বলেছেন, ‘আমরা যে টেস্টটা হেরেছি, তাতে ওদের মতোও ভালো খেলছিলাম। কিন্তু একটা ঘণ্টা খারাপ খেলায় টেস্টটা হেরে যাই। যেটা শুরুতে বলেছি, আপনাকে ভালো খেলতেই হবে। যে দলের বিপক্ষেই খেলেন না কেন।’ আকরাম মনে করেন, মিরপুর টেস্ট সেই হারের প্রতিশোধ নেয়ার মোক্ষম সুযোগ, ‘এটাই তো একটা সুযোগ। যেহেতু বাংলাদেশে আমরা ওদের বিপক্ষে হেরেছি, এখনই সঠিক সময় ওই ম্যাচের প্রতিশোধ নেয়ার। ৪ বছর আগে আমাদের এত ভালো ফাস্ট বোলার ছিল না। এখন আমাদের ফাস্ট বোলিং ইউনিট অনেক শক্তিশালী। আশা করি ভালো কিছুই হবে।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত