ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আল ইত্তিহাদে নাম লেখালেন বেনজেমা!

আল ইত্তিহাদে নাম লেখালেন বেনজেমা!

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে গুঞ্জন ছিল রিয়াল মাদ্রিদ ছাড়ছেন করিম বেনজেমা। একদিন আগে ক্লাবটি বিবৃতি দিয়ে বেনজেমার রিয়াল ছাড়ার বিষয়টি নিশ্চিতও করে। অবশেষে গুঞ্জনই সত্যি হয়েছে। দলবদল বিষয়ক প্রখ্যাত ইতালিয়ান সাংবাদিক ফ্যাব্রিজিও রোমানিও গতকাল জানান, এরই মধ্যে সৌদির ক্লাব আল ইত্তেহাদের সঙ্গে চুক্তি সেরে ফেলেছেন ব্যালন ডি’অর জয়ী এই তারকা! বারবার চোট ও মৌসুমে আশানুরূপ দলীয় সফলতা না পাওয়ায় রিয়ালে বেনজেমা অধ্যায় শেষ হওয়ার গুঞ্জন ওঠে। তাছাড়া মৌসুম শেষেই সাবেক ফরাসি ফরোয়ার্ডের সঙ্গে লস ব্লাঙ্কোসদের চুক্তির মেয়াদ শেষ। তবে একাদশে আসা-যাওয়ার মাঝেও রিয়ালের হয়ে ৩০ গোল করেছেন বেনজেমা। ফলে বয়স বাড়লেও, এই তারকা উইঙ্গার বুঝিয়ে দিয়েছেন ফুরিয়ে যাননি, এর মাঝেই সৌদি আরবের ক্লাব থেকে উচ্চ বেতনে যোগ দেয়ার প্রস্তাব পান। জানা যায়, গত শুক্রবারই সৌদি ক্লাব আল-ইত্তিহাদ প্রস্তাব দিয়েছিল বেনজেমাকে। রোমানিও জানান, বার্ষিক ২০০ মিলিয়ন ইউরোতে আগামী ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত সৌদির ক্লাবটির হয়ে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন বেনজেমা; সুযোগ থাকছে চুক্তি নবায়নের। আজ আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে রিয়াল মাদ্রিদকে বিদায় জানাবেন বেনজেমা। এরপর সৌদিতে পাড়ি জমাবেন ফরাসি এই তারকা ফুটবলার।

গত রোববার রাতে অ্যাটলাটিকো বিলবাওয়ের বিপক্ষে রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে নিজের শেষ ম্যাচ খেলেন। ক্লাব ছেড়ে দেয়ার ঘোষণার পর বেনজেমার জন্যই ম্যাচটি হয়ে উঠে বিশেষ। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে পিছিয়ে পড়ে পরে বেনজেমার গোলে ১-১ গোলে ড্র করে রিয়াল। বিদায়ি ম্যাচে তেমন কিছু করতে পারছিলেন না বেনজেমা। ৭২ মিনিটে তার সামনে সুযোগ আসে সমতা ফেরানোর। স্পট কিকে ঠান্ডা মাথায় মাঝ বরাবার শট নিয়ে কাজে লাগান তিনি। ক্লাবের হয়ে নিজের ৩৫৪তম গোলের পরপর মাঠ ছাড়েন ফরাসি স্ট্রাইকার। দাঁড়িয়ে তাকে অভিবাদন জানান রিয়াল সমর্থকরা। ২০০৯ সালে রিয়ালে যোগ দেন ফরাসি তারকা। এরপর ক্রমেই হয়ে উঠেন রিয়ালের কিংবদন্তিদের একজন। ১৪ বছরের ক্যারিয়ারে বেনজেমা রিয়ালের হয়ে জিতেছেন সম্ভাব্য সব ট্রফি। সব আসর মিলিয়ে রিয়ালের হয়ে ৬৪৮ ম্যাচে ৩৫৪ গোল করেছেন বেনজেমা। তার চেয়ে বেশি গোল আছে কেবল রোনালদোর (৪৫০)।

২০২১-২২ মৌসুমে দুর্দান্ত খেলেন বেনজেমা, স্প্যানিশ লা লিগার পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগও জেতে রিয়াল। মৌসুমে ৪৬ ম্যাচে ৪৪ গোল করেন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১৫ গোলের মধ্যে ১০ গোলই করেন নক আউট রাউন্ডে। পিছিয়ে পড়ে রিয়াল কয়েকটি ম্যাচে বেনজেমার অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্সে ঘুরে দাঁড়ায়। অসাধারণ নৈপুণ্যের জন্য ব্যালন ডি’অরও জেতেন বেনজেমা।

তরুণ বয়সে লিঁওতে থাকাকালীন ফুটবল বিশ্বের নজরে আসা এই নাম্বার নাইন মাদ্রিদ ছাড়ছেন সম্ভাব্য সকল শিরোপা জিতে, রিয়াল মাদ্রিদ ও সার্বিকভাবে ফুটবলের সর্বকালের সেরা স্ট্রাইকারদের একজন হিসেবে। সর্বকালের সেরাদের মধ্যে বেনজেমার জায়গা কোথায় হবে, এখনই বলা কঠিন। তবে নিচের পরিসংখ্যানগুলো সাহায্য করবে ধারণা নিতে।

ক্লাবের জগতে রিয়ালের চেয়ে বড় ক্লাব আর নেই; ১৪ বছর সেই মাদ্রিদের ফ্রন্টম্যান ছিলেন বেনজেমা। সাদা জার্সিতে কিংবদন্তি রাউল গঞ্জালেস (৩২৩) ও ডি স্টেফানোর (৩০৮) চেয়েও তার গোল বেশি, ৩৫৪টি। মাদ্রিদের ইতিহাসে তারচেয়ে বেশি গোল করেছেন মাত্র একজনই, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, ৪৫০। তার চেয়ে বেশিবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতেনি কোনো ফুটবলার। সর্বোচ্চ পাঁচবার ক্লাব ফুটবলের সর্বোচ্চ শিরোপা জেতা বেনজেমা চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও সর্বকালের সেরাদের একজন, করেছেন ৯০ গোল।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত