ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বাংলাদেশ-আফগানিস্তান টেস্ট

সবুজ উইকেটে আফগান বধের পরিকল্পনা টাইগারদের

সবুজ উইকেটে আফগান বধের পরিকল্পনা টাইগারদের

আয়ারল্যান্ডের পর ঘরের মাঠে আরো একটি টেস্ট খেলতে মাঠে নামতে যাচ্ছে বাংলাদেশ দল। ১৪ জুন থেকে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হতে যাওয়া সিরিজের একমাত্র সেই টেস্টে স্বাগতিকদের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। হোম অব ক্রিকেটে বরাবরই স্পিনিং উইকেটে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করেছেন টাইগাররা। তবে আফগানিস্তাানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে আর এমন ঘূর্ণি উইকেট থাকছে না। সবুজ ঘাসের উইকেটে ক্রিকেটের অভিজাত সংস্করণে আফগানদের বধ করার পরিকল্পনা এঁটেছে বাংলাদেশ। গতকাল সোমবার মিরপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন পরিকল্পনার কথা জানান বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক লিটন কুমার দাস। তিনি জানান, ঘাসের উইকেটে বাংলাদেশ কেমন খেলে সেটা পরখ করতে চান তারা। বাাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘অনেক দিন ধরে মিরপুরে যখন খেলা হয় সবগুলাই ঘূর্ণি উইকেটে খেলা হয়। আমাদের চ্যালেঞ্জ এটাই আমরা কীভাবে ঘাসের উইকেটে ভালো খেলি। এখন বিষয় এটা যে আমরা কীভাবে সারভাইব করি, বড় স্কোর করতে পারি। এরকম টিমের সাথে আপনি নরমাল ইভেন (বাউন্সি) উইকেটে খেলবেন এটাই স্বাভাবিক।’ লিটনের আগে সংবাদ সম্মেলনে আফগানিস্তান অধিনায়ক হাশমতুল্লাহ শাহিদিও সবুজ উইকেট নিয়ে মন্তব্য করেন। হাশমতুল্লাহ জানান, এমন উইকেটে খেলার জন্য তাদের পর্যাপ্ত সিমার আছে। তার সুরে তাল মিলিয়ে লিটনও জানান বাংলাদেশের কোয়ালিটি পেস অ্যাটাকের কথা। ‘আফগানিস্তান অধিনায়ক যেটা বলেছেন সিমিং কন্ডিশন, আমাদের হাতেও ভালো কোয়ালিটি পেস অ্যাটাক আছে। দেখা যাক।’ এ প্রসঙ্গে লিটন বলেন, ‘যে কোনো টিমের সঙ্গে আপনি জেতার জন্যই যাবেন। কেন জেতার জন্য যাবেন না? এতদিন পরিশ্রম করতেছি, শুধুমাত্র একটা জিনিসের জন্যই। আমরা যেকোনো টিমের সঙ্গে খেলার জন্য এই জিনিসটাই চেষ্টা করি। রেজাল্ট সবসময় আপনার হাতে আসবে না। এটা মানতে হবে।’ টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে অভিষেক হতে যাচ্ছে লিটন দাসের। সাদা পোশাকে লিটন হবেন বাংলাদেশ দলের ১২তম অধিনায়ক। সবচেয়ে বেশি ৩৪ টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম, সবচেয়ে কম একটি করে তামিম ইকবাল ও মাশরাফি বিন মর্তুজা। লিটন নাম লেখাবেন একটি ইতিহাসেও। মোহাম্মদ আশরাফুল, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম ও মাশরাফি বিন মর্তুজার পর পঞ্চম ক্রিকেটার হিসেবে বাংলাদেশকে সব ফরম্যাটে নেতৃত্ব দেবেন তিনি। টেস্ট অধিনায়ক লিটনের রোমাঞ্চটা আসলে কেমন? এমন প্রশ্নে লিটন বলেন, ‘বিশেষ কিছু না। এটা তো অবশ্যই একটা ভালো লাগার ব্যাপার কাজ করে। টেস্ট ক্রিকেটকে সবাই প্রাধান্যদেয়। টেস্ট ক্রিকেটার হওয়াটাই অনেক বড় বিষয়। তার মধ্যে দেশের হয়ে অধিনায়কত্ব করা তো অবশ্যই গর্বের বিষয়।’ গত বছর টেস্টে অধিনায়ক করা হয় সাকিবকে, তার সঙ্গে সহ-অধিনায়কত্ব দেয়া হয় লিটনকে। এরপর থেকে মাঠের বিভিন্ন কাজেই সাহায্য করেছেন, এমন দাবি তার। লিটন বলেছেন, অধিনায়কত্ব আলাদা কোনো ওজন হবে না তার জন্য। বাঁ-হাতি অর্থডক্স স্পিনের পাশাপাশি মিডল অর্ডারে ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে ব্যাটিং সবমিলিয়ে কার্যকরী একজন অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। এমন একজন ক্রিকেটার যেকোনো সংস্করণেই দলের ভারসাম্য এনে দেয়। আর টেস্টে বাংলাদেশের মতো দলের জন্য সাকিব যেন বাড়তি পাওয়া। অন্যদিকে তার অনুপস্থিতিতে একাদশ সাজাতে হিমশিম খেতে হয় টিম ম্যানেজমেন্টকে। এবার তা অকপটে স্বীকার করে নিলেন লিটন দাস। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে আঙুলের চোটে পড়েন সাকিব। ফলে ৬ সপ্তাহের জন্য মাঠের বাইরে আছেন তিনি। যদিও এরই মধ্যেই হালকা অনুশীলনে ফিরেছেন তবে খেলতে পারছেন না আফগানিস্তানের বিপক্ষে। এই অভিজ্ঞ অলরাউন্ডারের অনুপস্থিতিতে নিশ্চিতভাবেই ভুগবে দল। এ প্রসঙ্গে লিটন বলেন, ‘সাকিব ভাই থাকা মানে দুই দিক থেকে ব্যালেন্স। কিছু ওভার বোলিং পাবেন ব্যাটিংও পাবেন। স্বাভাবিকভাবে সাকিব ভাই যখন না খেলেন, বিশেষ করে ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টিটা বেশি কঠিন হয়ে যায় বাংলাদেশ দলের জন্য। কিন্তু টেস্টে আমাদের এখন পর্যাপ্ত পরিমাণে বোলার আছে ফলে বোলিংয়ে খুব বেশি ঘাটতি নাও হতে পারে।’ বাংলাদেশের নিয়মিত অধিনায়ক সাকিবের অনুপস্থিতিতে আফগানিস্তান টেস্টে দলকে নেতৃত্ব দেবেন লিটন। এদিকে চোটের কারণে দেশ সেরা ওপেনার তামিম ইকবালের খেলা নিয়ে নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। তবে অধিনায়ক লিটন জানালেন ফিট থাকলে খেলবেন তামিম। ‘তামিম ভাইয়ের ব্যাপার মেডিকেল টিম দেখবে অবশ্যই। তিনি যদি ফিট থাকেন ম্যাচ খেলবেন।’ গতকাল অবশ্য অনুশীলনের শুরুতে ওয়ার্মণ্ডআপ করেন তামিম। পরবর্তীতে ইনডোরে এসে থ্রোয়ারদের বিপক্ষে ব্যাটিং অনুশীলন করেন। এরপর বিশ্রাম শেষে আবারও নেট বোলারদের বিপক্ষে ব্যাটিং করেন তিনি। তবে অনুশীলনের পুরোটা সময়জুড়ে তার শরীরী ভাষায় ছিল স্পষ্টত ইনজুরির ছাপ। বারবারই কোমড়ে হাত দিয়ে মাঠে বসে পড়তে দেখা গিয়েছিল তাকে। তামিমের ইনজুরির সবশেষ অবস্থা জানতে যোগাযোগ করা হয় বিসিবি চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরীর সঙ্গে। বিসিবির এই প্রধান চিকিৎসক বলেন, ‘কোনো কিছু টেস্ট করতে হলে তো মাঠে নামতে হবে। মাঠে নেমে

নিজেদের পুশ করুক, ব্যাটিং ও ফিল্ডিং করুক। তাহলে ফিজিও বা কোচরা যারা আছে তারা বুঝতে পারবে কী অবস্থা। যদি বিশ্রাম দেন তাহলে তো বুঝবেন না কী অবস্থা। যেসব ট্রেনিং আছে করে দেখুক। তার জন্য শেষ সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত