ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নেশন্স লিগ ফাইনাল

ক্রোয়েশিয়ার প্রতিপক্ষ স্পেন

বদলা নিতে পারল না ইতালি
ক্রোয়েশিয়ার প্রতিপক্ষ স্পেন

২০২১ সালে নেশন্স লিগের সেমিফাইনালে স্পেনের কাছে গোলে হেরে বিদায় নিয়েছিল ইতালি। দুই বছর পর সেই প্রতিশোধের সুযোগ এসেছিল আজ্জুরিদের সামনে। কিন্তু বদলা নিতে পারল না তারা। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে রবার্তো মানচিনির শিষ্যদের ২-১ গোলে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে উঠে গেল স্পেন। শিরোপার লড়াইয়ে আগামী রোববার ক্রোয়েশিয়ার মুখোমুখি হবে গতবারের রানার্সআপরা। এবারের ফাইনালটি হচ্ছে নেদারল্যান্ডসে। ইয়েরিমো পিনোর গোলে শুরুতে লুইস দে লা ফুয়েন্তে দল এগিয়ে যাওয়ার খানিক পরই সমতা টানেন চিরো ইম্মোবিলে। তবে প্রতিপক্ষের টানা আক্রমণের মুখে মাঠে কখনোই আধিপত্য করতে পারেনি ইতালি। তারপরও অনেকটা সময় প্রতিপক্ষকে আটকে রাখতে পারে তারা। শেষ দিকে ব্যবধান গড়ে দেন হোসেলু। দুই বছর আগে এই সেমি-ফাইনালেই স্পেনের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছিল ইতালি। সেবারও তারা হেরেছিল ২-১ গোলে। ইতালির বিপক্ষে লড়াইয়ের আগে যে কোনো দলের ভাবনাতেই বড় জায়গা জুড়ে থাকে তাদের রক্ষণের দৃঢ়তা। তবে এদিন শুরুতে ওই রক্ষণেই গড়বড় করে ফেলে দলটি। দায় প্রায় পুরোটাই দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার ও অধিনায়ক লিওনার্দো বোনুচ্চির। গোলরক্ষকের পাস নিয়ন্ত্রণে নিতে একটু বেশিই দেরি করে ফেললেন তিনি, সেই সুযোগে ছুটে গিয়ে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন ইয়েরিমো পিনো। এরপর ভিয়ারিয়াল মিডফিল্ডার নিখুঁত কোনাকুনি শটে দলকে এনে দেন আনন্দের উপলক্ষ্য। পাল্টা জবাব দিতে অবশ্য দেরি করেনি ইতালি। একাদশ মিনিটে সফল স্পট কিকে সমতা টানেন লাৎসিও ফরোয়ার্ড ইম্মোবিলে। ডি-বক্সে ফ্রান্সে জন্ম নেয়া স্প্যানিশ ডিফেন্ডার লি নমোঁর হাতে বল লাগলে পেনাল্টিটি পায় ইতালি। ২১ মিনিটে সতীর্থের থ্রু বল দারুণ নৈপুণ্যে দাভিদে ফ্রাত্তেসি জালে পাঠালে এগিয়ে যাওয়ার উল্লাসে ফেটে পড়ে ইতালিয়ান সমর্থকরা। তবে ভিএআরের সাহায্যে অফসাইডের বাঁশি বাজান রেফারি। প্রথমার্ধে বল দখলের পাশাপাশি আক্রমণেও আধিপত্য করা স্পেন ৪৮ মিনিটে মুহূর্তের ব্যবধানে নিশ্চিত দুটি সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি। প্রথমে মিকেল মোরিনোর ভলি কোনোমতে এক হাত দিয়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক জানলুইজি দোন্নারুম্মা। আলগা বল গোলমুখে পেয়ে যান মোরাতা; কিন্তু তার শট পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। চার মিনিট পর আবারো ইতালির বক্সে ভীতি ছড়ায় স্পেন। এবার বক্সে রদ্রি বল প্রথম ছোঁয়ায় নিয়ন্ত্রণে নিয়ে কিছুটা ওভারহেড কিকের মতো করতে চেষ্টা করেন, বল ক্রসবারের একটু ওপর দিয়ে চলে যায়। প্রতিপক্ষের একের পর এক আক্রমণ সামলে নিজেদের সীমানা থেকে বের হতেই পারছিল না ইতালি। ৬৫ মিনিটে তারাই দারুণ এক প্রতি-আক্রমণে এগিয়ে যেতে পারত। বাঁ থেকে সতীর্থের বক্সে বাড়ানো পাস পেয়ে প্রথম ছোঁয়ায় জোরাল শট নেন ফ্রাত্তেসি, দারুণ ক্ষিপ্রতায় রুখে দেন গোলরক্ষক উনাই সিমোন। প্রবল চাপ ধরে রেখে ৮৮ মিনিটে জয়সূচক গোলের দেখা পায় স্পেন। ভাগ্যকেও পাশে পায় তারা। তাদের পাসিং ফুটবলে শানানো আক্রমণ প্রথম দফায় ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হয় ইতালি। ফিরতি বল ডি-বক্সের বাইরে পেয়ে জোরাল শট নেন রদ্রি। বক্সে বল প্রতিপক্ষে দুজনের গায়ে লেগে চলে আসে গোলমুখে হোসেলুর কাছে। দোন্নারুম্মাকে কোনো সুযোগ না দিয়ে বল বাতাসে থাকা অবস্থায় টোকায় বাকি কাজ সারেন দুই মিনিট আগেই মোরাতার বদলি নামা হোসেলু। গত আসরে ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে হেরে খালি হাতে ফিরতে হয়েছিল স্পেনকে। এরপর গত বছরের শেষ দিকে কাতার বিশ্বকাপে শেষ ষোলো থেকে ছিটকে পড়ার হতাশা হয় সঙ্গী। এবার দলটির সামনে সেসব হতাশা ঝেড়ে ফেলে শিরোপা উল্লাসে ভাসার সুযোগ। সেই লক্ষ্যে আগামী ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার মুখোমুখি হবে আলবা- মোরাতারা। এদিকে নেশন্স লিগের সেমি-ফাইনাল থেকে ছিটকে দলের ব্যর্থতার কারণ খুঁজে পেয়েছেন রবের্তো মানচিনি। অন্যান্য পজিশনে মানসম্পন্ন খেলোয়াড় থাকলেও আক্রমণভাগে মেধাবী ফরোয়ার্ডের অভাব দেখছেন ইতালি কোচ। ম্যাচ শেষে ফরোয়ার্ডদের মলিনতার বিষয়টি উঠে আসে মানচিনির কথায়। ‘এরই মধ্যে আমরা সবকিছু নতুনভাবে করতে শুরু করেছি এবং এভাবেই এগিয়ে যাব। এই লেগুলো ভালো, কিন্তু এ মুহূর্তে আমাদের দলে ভালো মিডফিল্ডার এবং ডিফেন্ডার আছে, কিন্তু মেধাবী ফরোয়ার্ডের ঘাটতি আছে। জানি না কেন।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত