মিরপুরে বাংলাদেশের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে গত শনিবার ৫৪৬ রানের রেকর্ড ব্যবধানে হারে আফগানিস্তান। চোট থেকে সেরে উঠলেও সতর্কতার অংশ হিসেবে সে ম্যাচে রাখা হয়নি আফগান বোলিংয়ের মূল অস্ত্র রশিদ খানকে। তবে ওয়ানডে সিরিজের দলে আছেন এই লেগ স্পিনার। আরো দুই স্পিনার মোহাম্মদ নবি ও মুজিব উর রহমান এবং পেসার ফজলহক ফারুকিকে নিয়ে তাদের বোলিং আক্রমণ শক্তিশালীই।
বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে পূর্ণ শক্তির দল পাচ্ছেন আফগানরা। সিরিজে আফগান বোলারদের সামলানো কঠিন হবে বলে মনে করেন বাংলাদেশের প্রধান কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহে। বিষয়টি মাথায় রেখে পরিকল্পনা সাজাতে চান বাংলাদেশের প্রধান কোচ। গতকাল মিরপুরে গণমাধ্যমকে হাথুরুসিংহে জানান আফগান বোলিং সামলানো কঠিন হলেও বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা এগিয়ে থাকবে, ‘ওয়ানডে ক্রিকেটে বোলিংয়ের দিক থেকে তারা অবশ্যই সেরা দলগুলোর একটি। তাদের বোলিং বড় হুমকি। তাদের বিপক্ষে পরিকল্পনা সাজানোর সময় আমরা বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রাখব। আমার মনে হয়, আমাদের ব্যাটসম্যানরা কিছুটা এগিয়ে থাকবে।’
দুই দলের সবশেষ ওয়ানডে সিরিজে গত বছর বাংলাদেশ সফরে ২-১ ব্যবধানে হেরেছিলেন আফগানরা। চট্টগ্রামে শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে ১৯২ রানে গুটিয়ে ৭ উইকেটে জিতেছিল তারা। সে মাঠেই আগামী ৫ জুলাই শুরু হবে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ।
একমাত্র টেস্টে আফগানিস্তানকে নাকানিচুবানি খাইয়ে পাক্কা দশটি সেশন আধিপত্য দেখিয়েছে লিটন দাসের দল। ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং তিন বিভাগে দারুণ ক্রিকেট খেলে ইতিহাস সেরা ৫৪৬ রানের বিশাল জয় তুলে নিয়েছে। এমন জয়ের আগে অনেক কিছু নিয়ে সংশয়ও ছিল। তীব্র রোদ গায়ে মেখে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা ৪ বছর আগের প্রতিশোধ নেয়ার মিশনে নেমেছিলেন। দিনশেষে শুধু সফলই হননি, টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের নতুন সূর্যোদয় করেন। একদিন আগে টেস্ট ম্যাচ শেষে হলেও প্রধান কোচসহ ক্রিকেটারদের ব্যস্ততা কমেনি। গতকাল মিরপুরে মিটিংয়ের পাশাপাশি অনুশীলনও করেছেন। তারই ফাঁকে গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন হাথুরুসিংহে।
তিন ফরম্যাটের ক্রিকেটের মধ্যে বাংলাদেশ দল সবচেয়ে নাজুক টেস্ট ক্রিকেটে। ১৩৮ টেস্টের মধ্যে বহু ম্যাচ ইনিংস ব্যবধানে হেরেছেন। ২/৩ দিনে অসংখ্য ম্যাচ হেরে যাওয়া বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য এমন প্রভাব বিস্তার করে জয়তো বিশেষ কিছু হবেই। সংবাদ সম্মেলনে হাথুরুসিংহে সেই কথাই বলে গেলেন, ‘জানি না দেখেছেন কি না, আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছি এটা শুধুমাত্র একটা টেস্ট জয় নয়, তার চেয়েও বিশেষ কিছু। এটা দিয়ে বুঝিয়েছি, যেভাবে এই ম্যাচের জন্য প্রস্তুত হয়েছি, সেটা এর আগে কখনও হয়নি। আমরা এই প্রথম সবুজ উইকেট তৈরি করেছি। এ ধরনের উইকেটে খেলে জেতা বিরাট ব্যাপার। আমরা এখানে সাধারণত ভিন্ন ধাঁচের ক্রিকেট খেলি। কিউরেটর গামিনিকে কৃতিত্ব দিতে হবে এই ধরনের উইকেট তৈরির জন্য। সেদিক থেকে এটা একটা টেস্ট জয় থেকেও বেশি কিছু। এখান থেকে অনেক নতুন নায়ক বেরিয়ে এসেছে।’
মিরপুরে তো বটেই এমন সবুজ উইকেটে খেলার অভিজ্ঞতা প্রথমবার হয়েছে বাংলাদেশের। পেস বান্ধব উইকেটে পেসারদের পাশাপাশি ব্যাটারদের কিছুটা সুবিধা ছিল। আফগানিস্তানের বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে বাংলাদেশের ব্যাটাররা দারুণ প্রভাব রাখতে পেরেছে। বোলিংয়ে তো তাসকিন-এবাদত-শরিফুলরা শিখিয়েছেন টেস্টে কীভাবে লাইন-লেন্থ মেনে বোলিং করতে হয়। ঢাকা টেস্টের সবুজ উইকেটে সব কিছুই বাংলাদেশের পরিকল্পনায় হয়েছে। ভবিষ্যতেও কি এমন উইকেটে বাংলাদেশ টেস্ট খেলবে? জবাবে হেড কোচ বলেছেন, ‘যদি কন্ডিশন সাহায্য করে, তাহলে অবশ্যই এভাবে খেলবো। আমরা সেভাবেই অনুশীলন করেছি।