ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দল নির্বাচনে নির্বাচকদের ভাবনায় যেসব খেলা করে

দল নির্বাচনে নির্বাচকদের ভাবনায় যেসব খেলা করে

রেকর্ড গড়ে সিরিজের একমাত্র টেস্ট জয়ের পর আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে স্কোয়াড ঘোষণা করা হয়েছে কয়েকদিন আগেই। তবে জাতীয় দল নির্বাচকদের যে প্রশ্নটা বেশি শুনতে হয়েছে তা হলো নাঈম শেখকে দলে নিলেন কিন্তু এনামুল হক বিজয়কে কেন নিলেন না? এ বিষয়ে গণমাধ্যমে তিন নির্বাচকদের আলাদা আলাদা বক্তব্যে একটা জায়গায় মিল ছিল, দুজনকে নিয়ে প্রচণ্ড কাটাছেঁড়া হয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত জাতীয় দলের জন্য সেরা খেলোয়াড়কেই তারা বেছে নিয়েছেন। মাঠে পারফর্মার বেড়ে যাওয়ায় নির্বাচকদের কাজ কঠিন হয়েছে। একই পজিশনে এখন একাধিক পারফর্মার। প্রত্যেকেই জাতীয় দলে নিজের জায়গা করে নিতে ধারাবাহিক পারফর্ম করছেন। নিজেদের মধ্যেই চলছে অলিখিত প্রতিযোগিতা। তাতে নির্বাচকদের কাজটা বিড়ম্বনা হচ্ছে ঠিকই কিন্তু স্বস্তি এনে দিয়েছে। কেননা দল বাছাইয়ে তারা সেরা খেলোয়াড়টাকেই বেছে নিচ্ছেন। নির্বাচক হাবিবুল বাশার যেমন বলছিলেন, ‘পারফর্মার বেড়ে যাওয়া মানে ক্রিকেট ভালো পথেই এগোচ্ছে। আমাদের জন্য মধুর বিড়ম্বনা, কাকে রেখে কাকে নেব! বিষয়টা অনেকটা তেমনই। কিন্তু এই বিড়ম্বনাতেও স্বস্তি আছে যে, আমাদের সব ক্রাইটেরিয়া মিলে যাওয়ার পরই আমরা একজন খেলোয়াড়কে নিতে পারছি। অনেক অপশন যেটা আমাদের কাজটাকে কঠিন পাশাপাশি সহজ করে দিয়েছে।’ তিনি বলেন, দল নির্বাচনে নির্বাচকদের ভাবনায় যেসব খেলা করে তা হলো, এখন পারফর্মার বেশি। খুব কাছাকাছি তাদের রান। বোলারদের উইকেট। এখন যেটা হয় প্রত্যেককে নিয়ে আলাদা আলাদা করে চিন্তা করতে হয়। ম্যাচ সিনারিও দেখতে হয়। তাদের ইনটেনসিটি দেখা হয়। কোথায় কীভাবে কেমন বোলিংয়ে রান করল? আবার বোলারদের জন্য কেমন উইকেটে উইকেট পেল। কোন পরিস্থিতিতে গিয়ে ভালো বোলিং করলো... এসব অনেক কিছু বিবেচনা করা হয়। সবকিছুর পাশে টিক মার্ক পেলেই খেলোয়াড়দের ডাক দেয়া হয় জাতীয় দলে। অপশন বাড়ায়, খেলোয়াড়দের ভেতরে প্রতিযোগিতা থাকায় কাজটা অনেকটা সহজ হয়ে যায় বলেও মনে করেন আরেক নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাক। সঙ্গে ব্যাকআপ ক্রিকেটার প্রস্তুত থাকে বলে স্বস্তিটা দ্বিগুণ বলে ব্যাখ্যা করলেন তিনি, ‘একই পজিশনে অনেক খেলোয়াড় থাকলেও আমরা সেরা খেলোয়াড়কে নেই। কিন্তু ম্যাচের আগে হঠাৎ কোনো দুর্ঘটনায় কাউকে মিস করলে আগে দুশ্চিন্তা করতে হতো। এখন সেটা কমে গেছে। কারণ হাতে অপশন আছে। ব্যাকআপ ক্রিকেটারও প্রস্তুত। তাই কাজটা স্বস্তির হয়ে যায়।’ প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুর মুখে সব সময়ই শোনা যায়, ‘আমরা কাউকেই চোখের আড়াল করি না।’ তার কথায় মিলও পাওয়া যায়। আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট দলে একেবারেই নতুন মুখ মুশফিক হাসানকে নিয়ে আসা হয়েছিল। যাকে শেষ একবছর নানা জায়গায় খেলিয়ে বড় মঞ্চের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছিল। এছাড়া তাওহিদ হৃদয় ঘরোয়া ক্রিকেটে দ্যুতি ছড়িয়েই এখন ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির ভরসা হয়ে উঠেছেন। টিম ম্যানেজমেন্ট ও নির্বাচকদের ভেতরে রসায়নও এখন জমাট। দলের চাহিদা খুব ভালোভাবেই টের পান নির্বাচকরা। সেই অনুযায়ী খেলোয়াড় সরবরাহের কাজটা করেন নির্বাচকরা। দুই পক্ষ এক বিন্দুতে মিলিত হয়েছে ভালোভাবে তা হলো, ‘আমরা কাউকেই পরীক্ষায় ফেলতে চাই না। আমরা যাকে নিচ্ছি তার ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস রাখছি। সুযোগ দিয়েই তাকে ছেঁটে ফেলতে রাজি নই। নিজেকে মেলে ধরার জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ পাবে ভাবনা তাদের দিয়ে দেয়া হয় শুরুতেই।’ বলছিলেন মিনহাজুল আবেদীন। বাংলাদেশের শেষ কয়েক বছরের ধারাবাহিক সাফল্যের কৃতিত্ব যায় নির্বাচকদের কোর্টেও। দল ভালো করলে প্রশংসিত হন তারাও।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত