ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

স্বপ্নের নায়ককে কাছে পেয়ে উচ্ছ্বসিত মাশরাফি

স্বপ্নের নায়ককে কাছে পেয়ে উচ্ছ্বসিত মাশরাফি

জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা যখন থেকে ফুটবল বুঝতে শিখেছেন, তখন থেকেই আর্জেন্টিনার ভক্ত। বাবার মতোই আর্জেন্টিনার পাড় ভক্ত তার দুই সন্তান হোমায়রা ও সাহেল। কিন্তু লম্বা সময় ধরে প্রিয় দলটির ব্যর্থতাই দেখতে হয়েছে তাদের। অবশেষে ৩৬ বছর পর আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ শিরোপার অপেক্ষা দূর হয়েছিল গত বছর। অপেক্ষা দূর হয়েছিল মাশরাফিরও। নিজের প্রিয় দলকে বিশ্বকাপ জিততে দেখবেন- এমন স্বপ্ন দেখেছিলেন নড়াই এক্সপ্রেসও। সেই স্বপ্ন পূরণে প্রত্যক্ষ অবদান রয়েছে আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজের। ফান্ডেড নেক্সট ডিজিটাল বিজনেস গ্রুপের কাছ তাই যখন মার্টিনেজের সঙ্গে সাক্ষাতের দাওয়াত ম্যাশ পান, তখনই হয়তো তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মার্টিনেজের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার সময় তার দুই সন্তানকে নিয়ে যাবেন। আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী সেই গোলরক্ষক সংক্ষিপ্ত সফরে এসেছিলেন বাংলাদেশে। নিজ দেশে তাকে পেয়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত মাশরাফি। গতকাল সোমবার ভোরে আমস্টারডাম থেকে বাংলাদেশে পা রাখেন মার্টিনেজ। যদিও ঢাকায় ১১ ঘণ্টা অবস্থানকালে গণমাধ্যম ও ভক্তদের সামনে হাজির হননি তিনি। ফলে সমর্থকদের উন্মাদনা দেখার উপায় নেই তার। স্পন্সর প্রতিষ্ঠান নেক্সট ভেঞ্চারসের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন তিনি। সেই অনুষ্ঠানে দুই সন্তানকে নিয়ে যোগ দেন মাশরাফি। বিশ্বকাপজয়ী এ গোলরক্ষককে স্বাগত জানান বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক। এরপর সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে এক বিবৃতি দিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন মাশরাফি- ‘এমিকে ভালো লাগার শুরু কোপা আমেরিকা থেকেই, যেখানে সে টাইব্রেকারে দুটি গোল আটকে দিয়ে দলকে জয় এনে দিল। কত বছর পর বড় কোনো শিরোপা জিতল আর্জেন্টিনা! লিওনেল মেসিও পেল দেশের হয়ে প্রথম বড় ট্রফির স্বাদ। স্বাভাবিকভাবেই পাখির চোখে তাকিয়ে ছিলাম বিশ্বকাপের দিকে। কিন্তু সৌদি আরবের সাথে হেরে মনে হয়েছিল, আরেকটি বিশ্বকাপও হয়তো শেষ হবে হতাশায়। কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়ানো এবং পরে বিশ্বকাপ জয় দেখতে পারাটা ছিল অনেক দিনের লালিত স্বপ্ন পূরণের মতো।’ এমিলিয়ানো সঙ্গে দেখা হওয়ায় অনুভূতিও প্রকাশ করেন সাবেক এ পেসার, ‘সেই জয়ের অন্যতম নায়ক এমির সঙ্গে দেখা হলো আমাদের এই ঢাকায়। খুব অল্প সময়ের জন্য দেখা, কিন্তু দারুণ এক অনুভূতি। বিশ্বকাপ জয়ী দলের গোলকিপার চোখের সামনে! সে তো জানে না, আমার এবং আমার মতো আরো কত কোটি মানুষের কত বছরের অপেক্ষা শেষ হলো, যেদিন তার ওই হাত ধরেই আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জয় করল!’ গত বছরের ডিসেম্বরে আর্জেন্টিনার তৃতীয় বিশ্বকাপ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন এমিলিয়ানো। ফ্রান্সের বিপক্ষে ফাইনালের অতিরিক্ত সময়ের অন্তিম মুহূর্তে কোলো মুয়ানির একটি শট অবিশ্বাস্য দক্ষতায় ঠেকিয়ে আর্জেন্টিনাকে ম্যাচে রাখেন। এরপর টাই-ব্রেকারেও রাখেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। সেই স্মৃতি তুলে ধরে আরো লিখেছেন- ‘আজকে সে ইন্টারভিউয়ের মাঝেই একবার ট্রাউজার উঠিয়ে দেখাল, পায়ের ঠিক সেই জায়গায় একটি ট্যাটু করিয়েছে, বিশ্বকাপ ফাইনালে শেষ বাঁশির ১৮ সেকেন্ড আগে কোলো মুয়ানির শটটি আটকিয়ে দিয়েছিল যে জায়গা দিয়ে। ১ সেকেন্ডের জন্য মনে হলো, আসলে বিশ্বকাপটাতো ওখানেই জিতে নিয়েছে।’ এমিলিয়ানোকে দেখে উচ্ছ্বসিত মাশরাফির সন্তানরাও। তার ভাষায়- ‘আজকে আসলে বেশি ভালো লাগছে আমার সন্তানদের জন্য। যখন বললাম, এমি আসছে, তোমাদের কি দেখা করার ইচ্ছা আছে? ওরা লাফাচ্ছিল। সবশেষ দুটি দিন ওরা ঠিকমতো ঘুমাতে পারছিল না- এমিকে দেখবে বলে। আজকে এমির সঙ্গে দেখা হওয়ার পর বললাম- ‘বাচ্চারা তোমার অটোগ্রাফ নিতে চায়। সে এত আন্তরিকতা দেখাল, এক কথায় অসাধারণ। এমনকি সে ছবিও তুলে দিল ওদের সঙ্গে। এখন তারা মহাখুশি, আর ওদের খুশিতে আমিও এখন মহাখুশি।’

এরপর এই গোলরক্ষককে স্বাগত জানিয়ে লিখেছেন- ‘এমি, আপনাকে স্বাগত এই বাংলার মাটিতে। এখানে আপনাদের অগুনিত ভক্ত আছে, যুগ যুগ ধরে। আশা করি, আপনারও ভালো লাগছে এই মাটিতে পা রেখে।’ একদিন বাংলাদেশও ফিফা বিশ্বকাপ খেলবেন বলে আশা করছেন মাশরাফি, ‘পাশাপাশি এটাও ভাবি, সত্যি বাংলাদেশ একদিন বিশ্বকাপ ফুটবলে কোয়ালিফাই করবে আর আমরা আমাদের পতাকা নিয়ে মিছিল করব, ইনশাআল্লাহ। অনেকের কাছে এখন এটা অবাস্তব মনে হতে পারে। তবে আমি বিশ্বাস করি, কাজটা কঠিন, খুব কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। স্বপ্ন পূরণের সেই দিনটির অপেক্ষায় আছি, ইনশাআল্লাহ।’ সাক্ষাতে এমির সঙ্গে সেলফি তোলেন ম্যাশের কন্যা হোমায়রা। এ সময় মাশরাফির দুই সন্তানকে নিজের স্বাক্ষর করা জার্সি আর গ্ল্যাভস উপহার দেন মার্টিনেজ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত