ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আজ মাঠে গড়াচ্ছে ওয়ানডে সিরিজ

আফগানিস্তানকে হালকাভাবে নিচ্ছে না বাংলাদেশ

আফগানিস্তানকে হালকাভাবে নিচ্ছে না বাংলাদেশ

তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে আজ আফগানিস্তানের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। ঈদের আগে একমাত্র টেস্টে আফগানদের হেসে খেলে ইতিহাস গড়া রেকর্ডগড়া জয় এলেও রঙিন পোশাকে তাদের সহজে হারানো যাবে না তা অনুমেয়। শক্তি বিবেচনায় বাংলাদেশ এগিয়ে থাকলেও আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ফর্ম যেন ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে। টেস্ট সিরিজে তারা কিছুটা দুর্বল হলেও রশিদ খানসহ আরো কয়েকজনকে ফিরিয়ে শক্তিশালী করা হয়েছে ওয়ানডে দলকে। তাই ওয়ানডে সিরিজ জিততে হলে টাইগারদের ২২ গজে ব্যাপক লড়াই করতে হবে। সামনেই ওয়ানডে বিশ্বকাপ। তার আগে নিজেদের সেরা কম্বিনেশন সাজাতে এই সিরিজকে বেছে নিচ্ছে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে দুপুর ২টায় শুরু হবে ম্যাচটি। আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগে নিজেদের জাত চিনিয়েছে আফগানিস্তান। ১৫ ম্যাচের মধ্যে ১১টিতে জয়ী হয়েছে তারা। তবে ওয়ানডে ক্রিকেটে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ঢের এগিয়ে বাংলাদেশ। দুই দলের মধ্যে ১১ বার লড়াইয়ে টাইগাররা জিতেছেন সাতটিতে, আফগানিস্তান চারটিতে। দুই দল গত বছর সর্বশেষ মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশের মাটিতে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখামুখি হলেও তিন ওয়ানডে সিরিজটি ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল বাংলাদেশ। এবারও তিন ম্যাচ না হলেও অন্তত দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ নিশ্চিত করতে চান স্বাগতিকরা। ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক তামিম বলেছেন, ‘আমার মনে হয় গত সিরিজ (ব্যবধান) যেভাবে ছিল, এই সিরিজেও এরকমই থাকবে। তারা ভালো দল, বিশেষ করে সাদা বলের ক্রিকেটে। বিশ্বের অন্যতম সেরা বোলিং আক্রমণ। গত সিরিজ থেকে কম কিছু আশা করছি না।’ তামিম জানালেন আফগানদের বিপক্ষে ভালো করলে আত্মবিশ্বাস বাড়বে বাংলাদেশের। ‘ওয়ানডে ক্রিকেট আমরা বেশ কিছু দিন ধরেই ভালো খেলছি। বিশ্বকাপের আগে এই সিরিজগুলো গুরুত্বপূর্ণ। এমন একটা দলের বিপক্ষে আমরা খেলছি যাদেও বোলিং বেশ ভালো। তাই ওদের বিপক্ষে ভালো করতে পারলে আত্মবিশ্বাস অর্জন হবে।’ তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের পর আফগানিস্তানের সাথে এশিয়া কাপে অন্তত একটি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। দুই দল সেমিফাইনাল কিংবা ফাইনাল খেললে আরও একবার মুখোমুখি হওয়ার সুযোগ। সব মিলিয়ে বিশ্বকাপের আগে অন্তত চারটি ম্যাচে মাঠে নামার সুযোগ বাংলাদেশের। বিশ্বকাপের আগে আফগানিস্তানের নাঁড়ি-নক্ষত্র সম্পর্কে জানতে এই ম্যাচগুলোকে গুরুত্ব দিচ্ছেন তামিম, ‘আমাদের জিততে হলে লড়াই করতে হবে, অনেক ভালো খেলতে হবে। মাঠে গেলাম জিতে গেলাম এমন হবে না। বিশ্বকাপের আগে ওদের সাথে চারটি ম্যাচ খেলব, এটা বেশ ভালো। দুই দলের জন্যই এটা সমান সুবিধা, পরস্পরের শক্তিমত্তা ও দুর্বলতা জানার জন্য। আমাদের জন্য যেমন ওদের জানার সুযোগ, একইভাবে ওদেরও। তবে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচের প্রতিপক্ষের সঙ্গে আগে চারটি ম্যাচ খেলব, অবশ্যই এটা ভালো।’ গত বছরও আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে ঘাসের উইকেটে খেলেছিল বাংলাদেশ। যেখানে আধিপত্য দেখা যায় দুই দলের পেসারদের। এবারও তেমন কিছুর আভাস। সিরিজ শুরুর আগের দিনও উইকেটে দেখা গেল বেশ খানিকটা ঘাস। ম্যাচের শুরুর দিকে তাই পেসারদের মুভমেন্ট পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। লাল সবুজ স্কোয়াডে থাকা পাঁচ পেসারের মধ্যে প্রতি ম্যাচেই অন্তত তিনজনের খেলা নিশ্চিত। তামিমের কথা স্পষ্ট ইঙ্গিত, সব পেসারকেই খেলানো হবে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে, ‘পেস বোলিং বিভাগে একটু বদল দেখতে পারেন। এখানে সবাই ভালো করছে। এ বিভাগে ভিন্ন ম্যাচ পরিকল্পনায় আমরা ভিন্ন কম্বিনেশন খেলাতে পারি। এটা নির্ভর করছে কালকের পিচ কন্ডিশন কেমন হয় সেটা শেষ মুহূর্তে দেখার ওপর। তবে এটুকু নিশ্চিত করে বলতে পারি পেস অ্যাটাকে ভিন্ন কম্বিনেশন দেখবেন তিন ম্যাচে।’ সিরিজটি আইসিসি সুপার লিগের অংশ না হলেও এটি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কাজটি অত্যন্ত কঠিন হলেও সিরিজটি ৩-০ ব্যবধানে জিততে পারলে ওয়ানডেতে নিজেদেও ইতিহাসে প্রথমবারের মতো র‌্যাংকিংয়ের পঞ্চম স্থানে উঠবে বাংলাদেশ। এছাড়া সফরকারী আফগানদের হোয়াইট ওয়াশ করতে পারলে প্রথমবারের মতো ১০০ রেটিং অর্জন করবে বাংলাদেশ। যদিও র‌্যাংকিংয়ে উন্নতি করাটা গুরুত্বপুর্ন একইভাবে টিম ম্যানেজমেন্টের জন্য গুরুত্বপূর্ণ যতটা সম্ভব খেলোয়াড়দের পরিবর্তন বা রোটেশন করানোটা। তাতে আসন্ন বিশ্বকাপের জন্য সেরা কম্বিনেশনটা খুঁজে পাওয়া যায়। ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসর বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশ দল আফগানিস্তান সিরিজ ছাড়াও এশিয়া কাপ ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ খেলার সুযোগ পাচ্ছে। এদিকে রশিদ খানকে দলে ফিরিয়ে এনেছে আফগানিস্তান। তারকা স্পিনারের উপস্থিতিতে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে অধিনায়ক হাশমতুল্লাহ শাহিদি বলেছেন তিনি (রশিদ) একাই ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিতে পারেন। শাহিদি বলেন, ‘অবশ্যই, তিনি (রশিদ) আমাদের জন্য অনেক বড় কিছু। তিনি দলে থাকায় অধিনায়ক হিসেবে আমি অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী। আমি জানি দলের জন্য তিনি সেরাটা দেবেন।’ টেস্ট সিরিজ থেকে অনেক কিছু শেখার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের জন্য এটা ইতিবাচক লক্ষন। তিনি টেস্ট ম্যাচটি খেলেননি, তবে এখন ওয়ানডে সিরিজে তাকে পাচ্ছি এবং দলের জন্য তিনি সেরাটাই দেবেন।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত