ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিশ্বকাপের আগে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বাংলাদেশ?

বিশ্বকাপের আগে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বাংলাদেশ?

গত কয়েক বছর ধরেই ওয়ানডে ক্রিকেট সমীহ জাগানিয়া এক দল বাংলাদেশ। বিশেষ করে ঘরের মাঠে রীতিমতো অজেয় বলা যায় তাদের। প্রায় এক দশক ধরে ঘরের মাঠকে দুর্গ বানিয়ে ফেলা বাংলাদেশ দল সাফল্য পায়নি শুধুমাত্র ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ২০১৪ সালের জুনের পর বাংলাদেশের মাটিতে ওয়ানডে সিরিজ জয়ী একমাত্র দল ইংল্যান্ড। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজটি শুরুর আগে সিরিজ জয় তো বটেই আরো অনেক চাওয়া পূরণ করতে চেয়েছিল বাংলাদেশ। বলা হয়েছিল বিশ্বকাপের জন্য সেরা প্রস্তুতি নেওয়ার লক্ষ্যের কথা। বলা হচ্ছিল বিশ্বকাপের আগে এবার সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে টাইগাররা। সেটি গণমাধ্যমের কাছে জানিয়েছিলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। কিন্তু ঘটনার দুর্বিপাকে বাকি চাওয়া দূরে থাক সিরিজও জেতা হলো না। এমনকি বাঁচা-মরার লড়াইয়ে হতশ্রী পারফরম্যান্স জন্ম দিলো অনেক প্রশ্নের। ওয়ানডে ক্রিকেটে এতোদিন ধরে বাংলাদেশের যে আধিপত্য ছিল তাতে নিশ্চিতভাবেই প্রশ্নবোধক চিহ্ন এঁকে দিলো আফগানিস্তান। ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবারের হঠাৎ অবসর ঘোষণা ঘিরে নানা জল্পনা, আলোচনা, সমালোচনায় মুখর দেশের ক্রিকেটাঙ্গন। তাতে হারিয়ে চোখের অগচরে চলে যায় বাংলাদেশ আফগানিস্তান সিরিজই। আস্তে আস্তে সেই প্রভাব পড়ে খেলোয়াড়দের উপর। আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স এতোটাই তালগোল পাকানো ছিল যে ক্রিকেটাররা মাঠ থেকে স্রেফ উঠে আসতে পারলেই গা-বাঁচানো সম্ভব, এমন কিছুই মনে হচ্ছিল। নির্বিষ বোলিংয়ের সঙ্গে, যাচ্ছেতাই ফিল্ডিং। শরীরী ভাষায় নেই লড়াইয়ের তাড়না। এরপর দায়িত্বহীন ব্যাটিং। খাপছাড়া মনোভাব। সব মিলিয়ে বাজে এক পারফরম্যান্স। যা শুধু হার-ই এনে দেয় না, বরং নিজেদের মানসিক শক্তি, একতা নিয়েও বড় প্রশ্ন তোলে! এ মুহূর্তে যেটি প্রয়োজন তা হলো দলের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনা। একজন মাশরাফি বিন মুর্তজার মতো নেতা। যিনি দলকে একতাবদ্ধ রাখতে পারতেন। ভালো খবর যে, কিংবদিন্ত তুল্য সাবেক এ অধিনায়কের প্রচেষ্টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে এরই মধ্যে অবসরের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছেন তামিম ইকবাল। তবে দেড় মাসের ছুটি নিয়েছেন দেশসেরা এ ওপেনার। আসন্ন এশিয়া কাপেই তার মাঠে ফেরার কথা। বিশ্বকাপ আসর শুরু হতে এখনো বাকি তিন মাস। বিশ্বকাপের আগে এশিয়া কাপ ছাড়াও আরো একটি সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। তাছাড়া আফগান সিরিজে এখনো একটি ম্যাচ বাকি রয়েছে। গত শনিবার বিশাল ব্যবধানে হেরে সিরিজ খুইয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের প্রতিনিধি হয়ে হাজির হন মেহেদী হাসান মিরাজ। তিনি সান্ত¦নার জন্য খুঁজে পেয়েছেন ইতিবাচক কিছু ফ্যাক্টর, ‘একটা জিনিস ভালো হয়েছে। এই সিরিজটা দিয়ে একটা জিনিস ভালো হয়েছে, হয়তো আমরা হেরেছি। কিন্তু আমাদের কোথায় ঘাটতি আছে, কোথায় উন্নতি করতে হবে এ জিনিসগুলো খুঁজে বের করতে পারব।’ বিশ্বকাপ পর্যন্ত আফগানিস্তানের সঙ্গে তিন মাসে আছে অনেক লড়াই। এবার তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ পর দুই দল এশিয়া কাপে মুখোমুখি হবে গ্রপ পর্বে। দুই দলই সুপার ফোরে উঠলে দেখা হবে অন্তত আরো একবার। এরপর ৭ অক্টোবর বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুদল। মিরাজের মতে বড় মঞ্চে লড়াই সামনে রেখে এ হার তাদের চোখ খুলে দিতে পারে, ‘যেহেতু এশিয়া কাপে ওদের বিপক্ষে খেলা আছে, বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচও ওদের বিপক্ষে। ব্যাটাররা কীভাবে রান করবে, ওদের কীভাবে হেন্ডেল করবে। বোলাররা কীভাবে বল করবে। এশিয়া কাপের দেড় মাস, বিশ্বকাপের বাকি তিন মাস। এই সময়ের মধ্যে প্রত্যেকটা খেলোয়াড় কাজ করতে পারব। যেহেতু লম্বা সময় পাচ্ছি আমাদের জন্য ভালো।’ এখন দেখার বিষয় বিশ্বকাপের আগে টাইগাররা ঘুরে দাঁড়াতে পারে কিনা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত