ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

অবশেষে বাফুফের চাকরি ছাড়লেন পল স্মলি

অবশেষে বাফুফের চাকরি ছাড়লেন পল স্মলি

চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলেন পল স্মলি। গতকাল শনিবার সংস্থাটির টেকনিক্যাল ডিরেক্টর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন ব্রিটিশ বংশো™ূ¢ত এই অস্ট্রেলিয়ান। এর আগে ২০১৯ সালে প্রথমবার চাকরি ছেড়ে ব্রুনেই জাতীয় দলের কোচ হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কিছুদিন পরই আবার পলকে ফিরিয়ে আনেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। আগামী বছর আগস্ট পর্যন্ত বাফুফের সঙ্গে চুক্তি ছিল তার। এক বছর আগেই তিনি দায়িত্ব ছাড়লেন। পল স্মলির পদত্যাগপত্র গৃহিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাফুফের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার। গত এপ্রিলে বাফুফের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগকে আর্থিক অনিয়মের কারণে নিষিদ্ধ করে ফিফা। এরপরই গুঞ্জন উঠে পদত্যাগ করবেন স্মলি। বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন নিজেও তা জানিয়েছিলেন। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, ‘পল স্মলি (বাফুফে টেকনিক্যাল ডিরেক্টর) আমাকে জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি আর থাকছেন না।’ অবশেষে সেটাই সত্যি হলো। পদত্যাগের কারণ হিসেবে সাংবাদিকদের স্মলি বলেন, ‘আমি গত প্রায় দেড় মাস যাবত সভাপতির সঙ্গে আলোচনা করছিলাম। কিছু বিষয় পরিবর্তনের জন্য। তিনি আমার পয়েন্টগুলো যৌক্তিক বললেও এটি স্থায়ীভাবে করতে সময় চেয়েছিলেন। সেই বিষয়গুলো পরিবর্তন না হওয়ায় আমি চলে যাচ্ছি। পল আরও যোগ করেন, ‘আমি কখনোই বর্তমান চুক্তির চেয়ে অতিরিক্ত অর্থ দাবি করিনি। কাজের পরিবেশ ও ব্যাপকতা নিয়েই আলোচনা হয়েছে গত দেড় মাস। বাফুফের বিভাগগুলো পুনর্গঠন করা প্রয়োজন। বিশেষ করে আমার টেকনিক্যাল বিভাগে আরো বিশেষজ্ঞ লোক দরকার। সেখানে মাত্র দুইজন এক্সিকিউটিভ। ফিন্যান্স বিভাগও জোরদার করা প্রয়োজন।’ মূলত সোহাগ কাণ্ডের কারণেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্মলি, ‘ফিফা ৫০ পাতার একটি বিশাল রিপোর্ট দিয়েছে। সেই রিপোর্টে কারা কারা যুক্ত সবই বর্ণনা রয়েছে। ফিফা যে প্রতিষ্ঠানে অনিয়মণ্ডঅসঙ্গতি রয়েছে, সেই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমি থাকতে পারি না। ফিফার রিপোর্টে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, কোনো চারজন জড়িত। বাফুফে তাদের বিপক্ষে এখনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি।’ ২০১৬ সালে ট্যাকনিক্যাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক ডাইরেক্টর হিসেবে বাংলাদেশে এসেছিলেন পল স্মলি। ২০১৯ সালের পর তিনি বাংলাদেশ ছেড়ে যান। এরপর ২০২০ সালে কাজী সালাউদ্দিন পুনরায় বাফুফে সভাপতি নির্বাচিত হলে তিনি ট্যাকনিক্যাল ডাইরেক্টরের দায়িত্ব নেন। এই চুক্তিতে তার মেয়াদ ছিল আগামী বছরের আগস্ট পর্যন্ত। চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসে ১৬ লাখ টাকা পারিশ্রমিক পেতেন ৫৬ বছর বয়সী স্মলি। বাংলাদেশে অর্ধযুগ কাটিয়ে তার পর্যবেক্ষণ, ‘এখানে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সম্ভাবনাগুলো কাজে লাগানোর প্রকৃত সময় এখন। সঠিক নির্দেশনা ও পরিকল্পনা থাকতে হবে।’ বাফুফে সভাপতির ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত ছিলেন পল স্মলি। পল স্মলির বিদায়ে বাফুফে সভাপতিও ব্যথিত, ‘বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য এটি দুঃখজনক দিন। আমি তাকে রাখার সর্বাত্মক চেষ্টাই করেছি। সে ফেডারেশনের অপারেশনগত কিছু পরিবর্তন চেয়েছিল, যা বাস্তবায়ন সময়সাপেক্ষ। সে কখনো তার নিজের আর্থিক বিষয় নিয়ে কিছু বলেনি। বাংলাদেশের ফুটবল তাকে মিস করবে।’ পল স্মলি বাফুফেতে মূলত বেশি কাজ করেছেন মেয়েদের নিয়েই। ছেলেদের বয়সভিত্তিক ফুটবলে সেভাবে তার সম্পৃক্ততা দেখা যায়নি। টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হিসেবে তার যে ভূমিকা, সেখানে দেখা গেছে অনেক ঘাটতি। ফলে তার কাজ নিয়ে সব সময়ই একটা বিতর্ক ছিল বরাবরই।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত