দাপুটে প্রত্যাবর্তনে আত্মবিশ্বাসের রসদ পেল টাইগাররা

প্রকাশ : ১৮ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  এম জাফিউল ইসলাম

এশিয়া কাপ মাঠে গড়াতে আর খুব বেশি দিন বাকি নেই। চলছে ৫০ ওভারের ক্রিকেট বিশ্বকাপের ক্ষণগণনা। দুটি বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট সামনে রেখে আফগানিস্তান সিরিজকে পাখির চোখ করেছিল বাংলাদেশ। কারণ, আগামী ৭ অক্টোবর ধর্মশালায় আফগানদের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করবে সাকিব-তামিমরা। সে লক্ষ্যে দুর্দান্ত দাপটে একমাত্র টেস্ট জিতে ওয়ানডে সিরিজে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ফেভারিটই ছিল বাংলাদেশ। আত্মবিশ্বাস নিয়েই আগাচ্ছিলো টাইগাররা। তবে পথিমধ্যে এলো বিপত্তি। সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে হারের তিক্ত স্বাদ পায় স্বাগতিকরা। পরদিন আচমকা সংবাদ সম্মেলন ডেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন তামিম ইকবাল। ৩০ ঘণ্টার ব্যবধানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপে সিদ্ধান্ত বদলালেও সিরিজে আর ফেরেননি দেশসেরা এ ওপেনার। তবে তামিম ইস্যুতে দলের ভিতর যে অস্বস্তিকর পরিবেশ তেরি হয় তা মাঠের পারফরম্যান্সে ব্যাপক প্রভাব পড়ে। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ১৪২ রানের ব্যবধানে হারে লিটন দাসরা। টানা দুই ওয়ানডে হেরে সিরিজ খুইয়ে হোয়াইটওয়াশের শঙ্কায় পড়েছিল বাংলাদেশ দল। তবে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে ম্যাচে আফগানদের ৭ উইকেটে হারিয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়িয়ে স্বস্তির জয় পায় লাল সবুজ দল। এতে অনেকটা আত্মবিশ্বাস ফিরে পায় সাকিব-লিটনরা। সেটিকে পুঁজি করেই সংক্ষিপ্ত সংস্করণে মাঠে নামে টাইগাররা। দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে আফগানিস্তানকে ধবলধোলাই করেছে বাংলাদেশ। এই জয়ের ফলে সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে টানা তিন সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে লাল-সবুজের দল। রোববার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বৃষ্টিবিঘিœত ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ১৭ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১১৭ রান সংগ্রহ করে আফগানরা। এরপর ডিএলএস পদ্ধতিতে ১১৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৫ বল হাতে রেখেই ৬ উইকেটের জয় তুলে নেয় স্বাগতিকরা। এমন সিরিজ জয় সামনের দিকে আরও ভালো করতে আত্মবিশ্বাস জোগাবে বলে মনে করেন টাইগার টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তার মতে, এই জয় আগামী এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপে আফগানদের বিপক্ষে লড়াইয়ে টাইগারদের আত্মবিশ্বাস জোগাবে। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার বলেন, ‘অবশ্য ভালো লাগছে। কারণ ওদের সঙ্গে টি-টোয়েন্টিতে খুব ভালো রেজাল্ট ছিল না এর আগ পর্যন্ত। যেহেতু এ রকম কন্ডিশনে ওদের সঙ্গে একটি সিরিজ জিততে পারলাম, আমার কাছে মনে হয় এটা আমাদেরকে সামনের দিকে আত্মবিশ্বাস দেবে ভালো ফলের জন্য।’ আগামী অক্টোবর-নভেম্বর মাসে ভারতে বসছে ওয়ানডে বিশ্বকাপের আসর। তার আগে হাইব্রিড মডেলে একই ফরম্যাটের এশিয়া কাপের আসর হবে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায়। তাই চলতি বছরে আর কোনো আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ নেই বাংলাদেশের। ওয়ানডেতে বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে সাফল্য পেয়ে আসছে। এই সংস্করণে তাদের সাফল্যের পাল্লা সবচেয়ে ভারী। অথচ এবার দেশের মাটিতে আফগানদের কাছে ওয়ানডে সিরিজ খুইয়েছে তারা। অন্যদিকে, টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তান বরাবরই বাংলাদেশের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জের নাম। দুই দলের অতীত পরিসংখ্যানও তাতে সায় দিচ্ছিল। তবে এবার এই সংস্করণেই সাফল্য ধরা দিয়েছে টাইগারদের। মূলত বাংলাদেশের খেলার ধরণই বদলে গেছে বলে মনে করেন সাকিব। তাই এই সিরিজ জয় অনেক বেশি তৃপ্ত অধিনায়ক, ‘অবশ্যই অনেক স্বস্তির। যে জিনিসগুলো আমরা চেষ্টা করছি ওই জিনিসগুলো যদি কাজে লাগে কিংবা পরিকল্পনাগুলো মাঠে যখন প্রতিফলন হয়, খেলোয়াড়রা বাস্তবায়ন করতে পারে এবং ফলাফলও আসে তাহলে, এর চেয়ে ভালো আর কি হতে পারে।’ সাম্প্রতিক সময়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের সঙ্গে তরুণ ক্রিকেটাররাও পারফর্ম করছেন সমান তালে। খেলছেন ভয়ডরহীন ক্রিকেট। যার সুফলটাই পাচ্ছে বাংলাদেশ। প্রায় সব তরুণ ক্রিকেটারই এখন পারফর্ম করছেন ধারাবাহিকভাবে। বিপদে কেউ না কেউ হাল ধরছেন ঠিকই। তরুণদের এই উত্থানেই বাংলাদেশের পরিবর্তন দেখছেন অনেকেই। এটা নিজেদের প্রক্রিয়ার একটি অংশ বলে মনে করেন সাকিব, ‘তাওহিদ হৃদয় বা যারাই আছে তারা কিন্তু বিশ্বকাপের পর থেকেই আছে। বেশিরভাগ বিশ্বকাপ ও এশিয়া কাপের ওই দল থেকেই আছে। মাঝে দুই চারজন আসছে যাচ্ছে এটা তো ধারাবাহিক প্রক্রিয়া।’ ঘরের মাঠে ভালো খেলছেন টাইগাররা, এবার সে ধারা দেশের বাইরে ভিন্ন কন্ডিশনেও করতে চান সাকিব, ‘সেরা কম্বিনেশন খুঁজে পাওয়ার এখনো অনেক কিছু বাকি রয়েছে।