সৌম্যর অলরাউন্ড নৈপুণ্য, জয়ের সেঞ্চুরি

ইমার্জিং এশিয়া কাপের সেমিফাইনালে বাংলাদশ

প্রকাশ : ১৯ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  স্পোর্টস রিপোর্টার

মাহমুদুল হাসান জয়ের সেঞ্চুরি, শেখ মেহেদী হাসানের ঝড়ো ব্যাটিং এবং সৌম্য সরকারের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে আফগানিস্তান বধ। স্বস্তির জয়ে ইমার্জিং এশিয়া কাপের সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করে পাহাড়সম স্কোর গড়ে জয়ের ভীতটা তৈরি করে রেখেছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। পরে বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে সাইফ হাসানের দল। মঙ্গলবার কলম্বোর পি সারা ওভালে ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে আফগানিস্তান ইমার্জিং দলকে ২১ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ ইমার্জিং দল। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ৩০৮ রান করে টাইগার জুনিয়ররা। জবাবে ৮ উইকেটে ২৮৭ রানের বেশি করতে পারেনি আফগানরা। তবে লক্ষ্য তাড়ায় এক পর্যায়ে ভীতি ছড়িয়েছিল আফগানিস্তান। ৩ উইকেটে ২১৮ রান তুলে ফেলেছিল দলটি। দলীয় ২৬ রানে জুবাইদ আকবরিকে হারালেও নুর আলী জাদরানের সঙ্গে রিয়াজ হাসানের ৯০ রানের জুটি গড়ে তারা। এ জুটি ভাঙেন তানজিম হাসান সাকিব। ফেরান নুর আলীকে। ৩২ রানের ব্যবধানে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা রিয়াজকে ফেরান সৌম্য। তবে অধিনায়ক শহিদুল্লাহর সঙ্গে বাহির শাহর ৭০ রানের জুটি ফের প্রতিরোধ গড়ে আফগানিস্তান। আফগান অধিনায়ককে বোল্ড করে দিয়ে জুটি ভাঙেন রাকিবুল হাসান। এরপর আর তেমন লড়াই করতে পারেনি আফগানরা। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে দলটি। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৮ রানের ইনিংস খেলেন রিয়াজ। ১০৫ বলে ৭টি চার ও ২টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। ৫০ বলে ৩টি চারের সাহায্যে ৫০ রান করে অপরাজিত থাকেন বাহির শাহ। নুর আলী ও শহিদুল্লাহ দুইজনই করেন ৪৪ রান করে। বাংলাদেশের পক্ষে ৬৭ রানের খরচায় ৩টি উইকেট পান সাকিব। এছাড়া রাকিবুল ও সৌম্য ২টি করে উইকেট পান। এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে মোহাম্মদ সেলিমের তোপে দলীয় ৩৪ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। আগের দুই ম্যাচে ভালো করলেও এদিন ব্যর্থ হন তানজিদ হাসান। ব্যক্তিগত ৯ রানে সেলিমের শিকার হন এ ওপেনার। ব্যর্থ হয়েছেন মোহাম্মদ নাঈম শেখও। ১৯ বলে ১৮ রান করে সেলিমের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন তিনি। আর অধিনায়ক সাইফ হাসান পড়েন এলবিডাব্লিউর ফাঁদে। ফলে বড় চাপেই পড়ে যায় বাংলাদেশ। এরপর জাকির হোসেনকে নিয়ে ইনিংস মেরামতের কাজে নামেন মাহমুদুল হাসান জয়। চতুর্থ উইকেটে ১১৭ রানের জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটার। প্রথমে দেখে শুনে খেললেও সময় গড়ানোর সঙ্গে আগ্রাসী হতে শুরু করেন তারা। এ জুটি ভাঙেন লেগ স্পিনার ইজহারুল হক নাভিদ। তাকে তুলে মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ধরা পড়েন জাকির। ৭২ বলে ৬টি চারের সাহায্যে ৬২ রান করেন তিনি। জাকিরের বিদায়ের পর উইকেটে নামেন সৌম্য সরকার। শুরু থেকেই আক্রমণ করার চেষ্টা চালান এই ব্যাটার। ফলে রানের গতি বাড়তে থাকে দ্রুত। ফিফটির পথেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে ইব্রাহিমের শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ তুলে দেন সৌম্য। পঞ্চম উইকেটে ৭৯ রানের জুটিতে ৪৮ রানই করেন তিনি। এরপর দ্রুত বিদায় নেন আকবর আলি। তবে এক প্রান্তে আগলে রেখে সেঞ্চুরি তুলে নেন জয়। ছক্কা মেরে স্পর্শ করেন তিন অঙ্ক। ১১৪ বলের ইনিংস থেমেছে খানিক পরই। ১২টি চার ও ২টি ছক্কায় ঠিক ১০০ রান তুলে মোহাম্মদ সেলিমের চতুর্থ শিকারে পরিণত হন তিনি। এরপর উইকেটে নেমে দারুণ ক্যামিও ইনিংস খেলেন শেখ মেহেদী হাসান। ১৯ বলে ৯টি চার ও একটি ছক্কায় খেলেন হার না মানা ৩৬ রান। ১২ বলে ১৫ রান করেন রাকিবুল হাসান। অষ্টম উইকেট জুটিতে অবিচ্ছিন্ন ৪১ রানের জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ ‘এ’ দল: ৫০ ওভারে ৩০৮/৭ (নাঈম ১৮, তানজিদ ৯, জাকির ৬২, সাইফ ৪, জয় ১০০, সৌম্য ৪৮, আকবর ৩৬, মেহেদি ৩৬*, রাকিবুল ১৫*; ইব্রাহিম ১০-০-৭৩-১, সেলিম ১০-১-৬৫-৪, জিয়া ৯-০-৪১-১, শহিদউল্লাহ ৩-১-১৫-০, শরাফউদ্দিন ১০-০-৪৬-০, ইজহারুলহক ৮-০-৫৯-১)

আফগানিস্তান ‘এ’ দল: ৫০ ওভারে ২৮৭/৮ (রিয়াজ ৭৮, আকবারি ১০, নুর ৪৪, শহিদউল্লাহ ৪৪, বাহির ৫৩*, ইকরাম ১, শরাফউদ্দিন ১৪, ইজহারুলহক ১৫, জিয়া ৬, ইব্রাহিম ৬*; মেহেদি ১০-২-৩৩-০, রিপন ১০-০-৯৩-১, রাকিবুল ১০-১-৩০-২, তানজিম ১০-০-৬৭-৩, সৌম্য ১০-০-৬১-২)

ফল: বাংলাদেশ ‘এ’ দল ২১ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: মাহমুদুল হাসান জয়