ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

‘স্টোকস ফের মেসেজ করলে সেটা ডিলিট করে দেব’

‘স্টোকস ফের মেসেজ করলে সেটা ডিলিট করে দেব’

মঈন আলীকে এক শব্দের একটি ম্যাসেজ পাঠিয়েছিলেন বেন স্টোকস, ‘অ্যাশেজ?’ তিনি শুরুতে ভেবেছিলেন, মজা করা হচ্ছে। আসলে তা ছিল জরুরি বার্তা। সেই বার্তার পথ ধরেই অবসর ভেঙে মঈনের টেস্টে ফেরা। রোমাঞ্চের দোলায় ভেসে সেই অ্যাশেজ শেষ হলো। মঈনের ফেরার পর্বও শেষ। ওভালে অ্যাশেজের পঞ্চম টেস্টে অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর পর, দ্বিতীয় বার নিজের অবসর ঘোষণা করলেন এই ইংলিশ অলরাউন্ডার। সেই সঙ্গে তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ফের যদি স্টোকসের কাছ থেকে ইংল্যান্ড দলে ফেরার জন্য আরো কোনো বার্তা তিনি পান, তবে সেটা ডিলিট করে দেবেন। অর্থাৎ আবার অবসরে যাওয়া নিশ্চিত করে এই অলরাউন্ডার স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, আর কারো কোনো অনুরোধেই সাড়া দেবেন না তিনি। এবার অ্যাশেজের আগে ইংল্যান্ডের মূল স্পিনার জ্যাক লিচ চোটে পড়ার পর মঈনের কথা মনে পড়ে স্টোকসের। অধিনায়কের অনুরোধেই শুধু এই সিরিজের জন্য সাদা পোশাকে আরেকবার ফেরেন এই স্পিনিং অলরাউন্ডার। দুজনের সম্পর্কের রসায়ন দারুণ। ফেরার পর তিনি বলেছিলেন, অন্য কোনো অধিনায়ক হলে হয়তো তিনি এই অনুরোধ রাখতেন না।

ফেরার সিরিজে পাঁচ টেস্টের মধ্যে চারটিতে খেলেছেন মঈন। সিরিজে তার সার্বিক পরিসংখ্যান চোখধাঁধানো কিছু নয়। ৪ টেস্টে ১৮০ রান, ৯ উইকেট।

এই পরিক্রমায় টেস্টে ৩ হাজার রান ও ২০০ উইকেটের ডাবলও পূর্ণ করে ফেলেন। সার্বিক পারফরম্যান্স অসাধারণ না হলেও নিজের কাজটুকু করে গুরুত্বপূর্ণ অবদান ঠিকই রাখেন তিনি। হেডিংলিতে ইংল্যান্ডের জয়ের ম্যাচে যেমন, অস্ট্রেলিয়ার দুই ব্যাটিং স্তম্ভ মার্নাস লাবুশেন ও স্টিভেন স্মিথকে অল্প সময়ের মধ্যে আউট করে ম্যাচের মোড় বদলে দেন তিনি। ওল্ড ট্র্যাফোর্ড টেস্টে দল প্রথম উইকেট দ্রুত হারানোর পর তিনি নেমে কার্যকর এক ইনিংস খেলেন ব্যাট হাতে। জ্যাক ক্রলির সেই ১৮২ বলে ১৮৯ রানের স্মরণীয় ইনিংসের পথে সঙ্গ দেন তিনি। দ্বিতীয় উইকেটে গড়েন ১২১ রানের জুটি। ৭ চারে খেলেন ৫৪ রানের ইনিংস। ওভাল টেস্টে তো তিনি ইংল্যান্ডের জয়ের নায়কদের একজন।

দুই ইনিংসে ৩৪ ও ২৯ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন। কুঁচকিতে টান লাগার কারণে প্রথম ইনিংসে বোলিং করতে পারেননি। কিন্তু সেই চোটকে হারিয়ে শেষ দিনে দুর্দান্ত বোলিং করেন। স্টিভেন স্মিথ ও ট্রাভিস হেডের জুটি যখন অস্ট্রেলিয়াকে জয়ের দিকে এগিয়ে নিচ্ছে, হেডকে ফিরিয়ে তখন তিনিই ভাঙেন জুটি। এরপর মিচেল মার্শের মহামূল্য উইকেট ও প্যাট কামিন্সের উইকেটও নেন। সব মিলিয়ে স্মরণীয় করে রাখেন শেষটা। অ্যাশেজে তো শেষ হলো। সামনে ইংল্যান্ডের আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ আগামী জানুয়ারিতে ভারত সফর। তখন তো স্টোকসের আবার মনে পড়তেই পারে মঈনকে! ওভাল টেস্ট শেষে স্কাই স্পোর্টসকে মজার ছলেই উত্তটা জানিয়ে রাখলেন মঈন, ‘স্টোকসি (বেন স্টোকস) যদি আবার আমাকে বার্তা পাঠায়, তা মুছে দেব। এখানেই আমার শেষ। সত্যিই উপভোগ করেছি এবং এভাবেই শেষ করাটা দারুণ।’ পরে বিবিবি টেস্ট ম্যাচ স্পেশালকে তিনি বলেন, নিজের সঙ্গে চ্যালেঞ্জ নিয়ে এই ফেরার পর্ব উপভোগ করেছেন। ‘অসাধারণ লাগছে। ফিরে আসাটা কিছুটা চ্যালেঞ্জিং ছিল সত্যি বলতে, কারণ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তত ভালো কখনোই খেলিনি। স্টোকসি যখন আমাকে জিজ্ঞেস করল ফেরা নিয়ে, আমার মনে হলো, ‘কেন নয়! দুর্দান্ত একটি দলে ঢুকব আমি এবং মোটামুটি কাজটা করতে পারব বলে বিশ্বাস করি এখনও।’ ব্রেন্ডন ম্যাককালামের কোচিংয়ে ও বেন স্টোকসের অধিনায়কত্বে ইংল্যান্ডের টেস্ট দল যে বদলে গেছে, ড্রেসিং রুমে ফিরেই সেই আবহের ছোঁয়া পান মঈন।

শেষটাও জয়ে রাঙাতে পেরে তিনি উচ্ছ্বসিত। ‘আমি খুবই খুশি যে ‘হ্যাঁ’ বলেছিলাম। আবার খেলার জন্য এবং দলের অংশ হওয়ার জন্য বাজ (ব্রেন্ডন ম্যাককালাম) ও স্টোকসির তত্ত্বাবধানে এই ড্রেসিং রুমে প্রথম দিনে যখন পা রাখলাম জিমি ও ব্রডিসহ এই ছেলেরা ছিল আমার শুরুর সময়ও ওরা ছিল সব মিলিয়ে অসাধারণ ছিল।’ ‘আমি খুবই রোমাঞ্চিত যে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয় দিয়ে শেষ করতে পেরেছি এবং সেখানে সামান্য সহায়তা করতে পেরেছি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত