শেখ রাসেল বলছে চুক্তি হয়েছে জামাল ভূঁইয়ার অস্বীকার

প্রকাশ : ১৮ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

গত কয়েক দিন ধরেই জামাল ভূঁইয়াকে নিয়ে টানাটানি শুরু হয়েছে। ফুটবলপ্রেমীদের প্রশ্ন জাতীয় দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করা এই মিডফিল্ডার আসলে কার? বাংলাদেশের প্রিমিয়ার লিগের দল শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র নাকি আর্জেন্টিনার তৃতীয় বিভাগের দল সোল দা মায়োর? শেখ রাসেলের দাবি- জামাল ভূঁইয়া আগামী মৌসুমে তাদের ক্লাবে খেলবে বলে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। অথচ, জামাল ভূঁইয়া বলছেন কোনো চুক্তি হয়নি শেখ রাসেলের সঙ্গে। উল্টো তিনি শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের বিরুদ্ধে ব্যাংকের চেক ডিজঅনারের অভিযোগ তুলেছেন। শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের কর্মকর্তা মো. ফখরুদ্দিন বলেছেন, ‘জামাল ভূঁইয়া আমাদের সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশ থেকে গিয়েছেন। অন্য কোনো ক্লাব যখন তাকে নেয়নি তখন তিনি গত বছরের পারিশ্রমিকের ৩০ ভাগ কমে আমাদের ক্লাবে থেকে যাওয়ার জন্য চুক্তি করেছেন। তবে তিনি আগে চলে যাওয়ায় বাফুফের ফরমে তার স্বাক্ষর নিতে পারিনি। কারণ, তখনো বাফুফের ফরম আমরা পাইনি। জামাল বলে গিয়েছেন ফিরে ওই চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করবেন।’ অপরদিকে জামাল ভূঁইয়া এখন আর্জেন্টিনায় রয়েছেন। আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের লোগোর সামনে ৬ নম্বর জার্সি হাতে একটা ছবি নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট করে জামাল ভূঁইয়া কোথায় আছেন সে প্রশ্নের জানান দিয়েছেন। কারণ, কয়েকদিন ধরে নিজের অবস্থান পরিস্কার করছিলেন না বাংলাদেশ অধিনায়ক। পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘আর্জেন্টিনায় বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করার এটাই সময়।’ একই সঙ্গে আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনকে তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন তাকে আমন্ত্রণ করার জন্য।’ এই পোস্ট বলে দিচ্ছে আগামী মৌসুমে আর্জেন্টিনার তৃতীয় বিভাগের ক্লাব সোল দ্য মায়োতে তার খেলার সম্ভাবনাই উজ্জ্বল। যদিও তিনি আর্জেন্টিনা থেকে নিজেদের ভবিষ্যত সম্পর্কে বলেছেন, ‘আগামী মৌসুমে কোথায় খেলবো সে সিদ্ধান্ত দ্রুতই নেবো।’ শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের কাছে এক মাসের বেতন পাওনা আছে জামালের। টাকার পরিমান ৭ লাখ ৫ হাজার। ডেনমার্ক যাওয়ার আগে শেখ রাসেল যে চেক দিয়েছিল তা নাকি ব্যাংক থেকে ডিজঅনার হয়েছে। তবে শেখ রাসেলের কর্মকর্তারা বলছেন, নির্ধারিত সময়ের আগে চেক ব্যাংকে জমা দিয়েছিলেন জামাল। যে কারণে, ডিজঅনার হয়েছে। শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের ওই কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আমরা জামালকে বিশ্বাস করেছিলাম। যে কারণে তার সঙ্গে এক মৌসুমের চুক্তি করেছি। জামাল গত মৌসুমের এক মাসের যে বেতন পাবেন তার চেক দেয়া হয়েছে। তাছাড়া ওই টাকা সে ফিরলেই পেয়ে যাবেন। অথচ তিনি দেশের বাইরে থেকে অভিযোগ করছেন টাকা পাচ্ছেন না। এটা তার কূটকৌশল।’ শেখ রাসেলের টাকার বিষয়ে বাফুফেকে কি জানিয়েছেন? জামাল ভূইয়া বলেছেন, ‘এখনো জানাইনি। তবে টাকা না পেলে প্রথমে বাফুফে ও পরে ফিফাকে জানাব।’ শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রতো আপনার পাওনা পরিশোধ করতে প্রস্তুত। তাছাড়া ৭ লাখ ৫ হাজার টাকা তো বড় কোনো ইস্যুও না। আপনি দেশে ফিরলেই তো টাকা পেয়ে যাবেন বলছেন তারা। ‘দেখি তারা দেয় কিনা’- বলেন জামাল ভূঁইয়া। আপনি শেখ রাসেলের সঙ্গে চুক্তি করছেন এমন একটা ছবিতো ক্লাব গণমাধ্যমকে সরবরাহ করেছে। এ প্রসঙ্গে জামাল ভূঁইয়া বলেন, ‘ওটা পুরোনো ছবি।’ আপনি কি ক্লাবকে জানিয়েছিলেন যে আগামী মৌসুমে খেলবে না। জামাল ভূঁইয়ার জবাব, ‘বলার প্রয়োজন ছিল না। কারণ, ৩১ জুলাই শেখ রাসেলের সঙ্গে আমার চুক্তি শেষ হয়ে গেছে।’ আপনি বলছিলেন বাফুফের ফরমে স্বাক্ষর করেননি। তাহলে কি প্রাথমিক চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেছেন? জবাবে জামাল ভূঁইয়া বলেছেন, ‘আমি শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের কোনো ধরনের চুক্তিতেই স্বাক্ষর করিনি। তারা আমাকে চুক্তি করার জন্য ডেকেছিল, আমি যাইনি।’ যখন ডেকেছিল তখন তাদের কি বলেছিলেন? ‘আমি ক্লাবকে বলেছিলাম কোনো ধরনের চুক্তিপত্রে স্বাক্ষরের আগে আমার সব পাওনা পরিশোধ করতে হবে। করেনি। তাই স্বাক্ষরও করিনি’- বলেন জামাল ভূঁইয়া।