লন্ডনে হাঁটুতে অস্ত্রোপচার হাওয়ায় মিলিয়ে গেল এবাদতের বিশ্বকাপ স্বপ্ন

প্রকাশ : ৩১ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

দুঃসংবাদ যেন পিছু ছাড়ছে না বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের। একের পর এক দুঃসংবাদ নিয়ে হাজির হচ্ছেন ব্যাটার, বোলাররা। ফলে এশিয়া কাপে মাঠে নামার আগে বড় এক ধাক্কা টাইগারদের জন্য। জ্বরের কারণে এশিয়া কাপ খেলতে পারবেন না লিটন দাস। গতকাল বুধবার সকালে এই ওপেনারের না খেলার বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছে বিসিবি। দুপুর হতে না হতেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের মাত্র একদিন আগে ইংল্যান্ড থেকে ভেসে এলো আরেক দুঃসংবাদ। বিশ্বকাপ থেকেই ছিটকে গেলেন পেসার এবাদত হোসেন। যে শঙ্কা নিয়ে তিনি লন্ডনে উড়াল দিয়েছিলেন, সেই শঙ্কাই সত্যিতে পরিনত হল। অস্ত্রোপচার নাকি পুনর্বাসন? ডানহাতি পেসারের বেলায় বেছে নেয়া হবে কোনটা? এই নিয়ে ছিল দ্বিধা। লম্বা সময়ের জন্য ফিট থাকতে তাকে অস্ত্রোপচার করানোর পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। গতকাল বুধবার সকালে লন্ডনের ক্রমওয়েল হাসপাতালে এবাদতকে ছুরি-কাচির নিচের যেতেই হলো। পুরোপুরি সুস্থ হতে তার অন্তত তিন মাস সময় লাগবে। অথচ, বিশ্বকাপই শুরু হবে ৫ অক্টোবর থেকে। ফলে এই পেসারের প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলার সম্ভাবনা হাওয়ায় মিলিয়ে গেল। এদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হাসপাতালে নিজের একটি ছবি পোস্ট করে এবাদত লিখেন- ‘জীবনে প্রথমবার অপারেশন থিয়েটারে, সবার কাছে দোয়া চাইছি, আল্লাহ ভরসা।’ বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশিষ চৌধুরি জানান, অস্ত্রোপচারের পর বোঝা যাবে এই পেসারের ফেরার সম্ভাব্য সময়। ‘আজকে এবাদতের সার্জারি হচ্ছে। (সুস্থ হতে কত দিন লাগবে) আমরা এখনও জানি না। সার্জারি হওয়ার পর বলা যাবে কত দিন লাগতে পারে। সার্জারির পর আমরা আবার ওখানের বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলব।’

এই চিকিৎসক বলেন, ‘আমরা দেশে কনজার্ভেটিভ ম্যানেজমেন্ট করে দেখেছি, ও (এবাদত) সেরে উঠতে পারছে কি না। কিন্তু সেভাবে আশানুরূপ উন্নতি হয়নি। এজন্য আমরা ওখানে পাঠিয়েছি দ্বিতীয় আরেকটি মতামতের জন্য। ওরা বলেছে, সার্জারি করলেই ভালো হবে। তাই এখন সার্জারি করা হচ্ছে।’ বাস্তবতা বিবেচনায় এবাদতের বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্নের মৃত্যু ঘণ্টা বেজে গেছে। তবে এখনই কোনো সিদ্ধান্তে নিতে চান না বিসিবির প্রধান চিকিৎসক। ‘এসিএল হোক বা অন্য কোনো অস্ত্রোপচার, একেকজনের সুস্থ হওয়ার সময় লাগে একেকরকম। তাই আগে-ভাগেই বলা সম্ভব নয়, এবাদতের ফিরতে কত দিন লাগবে। যিনি সার্জারি করেছেন, সেই সার্জনের কথা শুনে, তার বরাত দিয়ে আমরা এবাদতের অবস্থা সম্পর্কে জানাব।’ এদিকে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আজ এবাদতের অপারেশন হচ্ছে। এরপর রিহ্যাব আছে, সব মিলিয়ে সুস্থ হয়ে লম্বা সময় লাগতে পারে।’ তবে ঠিক কতদিন পর তাকে আবার মাঠে দেখা যাবে তা নিশ্চিত করেননি প্রধান নির্বাচক। সাধারণত এমন ইনজুরির কারণে ৬ থেকে ৮ মাস মাঠের বাইরে থাকতে হয় খেলোয়াড়দের। গত মাসে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বোলিং করার সময় আম্পায়ারের সঙ্গে কনুইয়ের ধাক্কায় ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যান এবাদত। ওই চোটে ম্যাচ থেকে তো বটেই, সিরিজ থেকেও ছিটকে যান ২৯ বছর বয়সি পেসার। এরপর পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় থাকায় জাতীয় দলের ফিটনেস ক্যাম্পে থাকতে পারেননি এবাদত। তবে দ্রুত সুস্থতার আশায় তাকে এশিয়া কাপের স্কোয়াডে নেন নির্বাচকরা। দলের সঙ্গে অনুশীলনও করছিলেন তিনি। কিন্তু আশানুরূপ উন্নতি হয়নি তার চোটের। কয়েক দফা স্ক্যান রিপোর্টে এসিএলের চোট শনাক্ত হওয়ায় তাকে এশিয়া কাপ থেকে বাইরে রাখার পরামর্শ দেয় বিসিবির চিকিৎসা বিভাগ। পরে অবস্থা বোঝার জন্য পাঠানো হয় লন্ডনে। এশিয়া কাপের পর যদি বিশ্বকাপেও না থাকেন এবাদত, তাহলে বড় ধাক্কাই লাগবে বাংলাদেশের। স্বল্প সুযোগেই উইকেট শিকারি বোলার হিসেবে নিজেকে মেলে ধরেছেন ২৯ বছর বয়সি এই পেসার। ১২ ওয়ানডে খেলে তার উইকেট ২২টি। বিশেষ করে মাঝের ওভারগুলোতে তার কার্যকরিতা দেখা গেছে বেশ কিছু ম্যাচে। গত অগাস্টে এই সংস্করণে তার অভিষেক। এরপর থেকে এই সময়টায় ওয়ানডেতে তার চেয়ে বেশি উইকেট নিতে পারেননি বাংলাদেশের আর কেউ।