শ্রীলঙ্কার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম বাংলাদেশ?

প্রকাশ : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ১৬৫ রানের লক্ষ্য বেঁধে দিয়েছিল বাংলাদেশ দল। ৫ উইকেট খরচায় সহজেই সেই লক্ষ্য পেরিয়ে যায় লঙ্কানরা। এবার সুপার ফোরের গুরুত্বপুর্ণ ম্যাচে লাল সবুজ দলের সামনে ২৫৮ রানের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে শ্রলঙ্কা। টাইগাররা কী পারবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলার পথে এক ধাপ এগিয়ে যেতে? অবশ্যই সেই সক্ষমতা বাংলাদেশের আছে। এখন সেটি করে দেখানোর সুযোগ তরুণ নাইম শেখ, তৌহিদ হৃদয়, শামিম হোসেনদের সামনে। মেহেদি হাসান মিরাজ, লিটন দাস, অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিমদের এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে পারলে অবশ্যই সম্ভব। ইতিমধ্যেই দলের পেসাররা নিজেদের সামর্থের প্রমাণ দিয়েছেন। যদিও শুরুতে বাংলাদেশি বোলারদের ওপর ইনিংসের শুরু থেকেই আক্রমণাত্বক ব্যাটিংয়ে শুরু করেছিলেন শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনার। তবে টাইগার পেসাররা দ্রুতই বেশ কয়েকটি উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছিল। কিন্তু মিডল অর্ডার ব্যাটার সামারাবিক্রমার নৈপুণ্যে চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পেয়েছে এশিয়া কাপের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে তারা তুলেছে ২৫৭ রান। অর্থাৎ এশিয়া কাপে টিকে থাকতে ২৫৮ করতে হবে বাংলাদেশকে। শনিবার প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। শুরু থেকেই দুর্দান্ত বোলিং করছিলেন তাসকিন আহমেদ এবং শরিফুল ইসলাম। তাসকিনের প্রথম তিন-চারটি বল তো চোখেই দেখছিলেন না লঙ্কান ওপেনাররা। এলবিডব্লিউ আউটও হয়েছিলেন পাথুম নিশাঙ্কা। যদিও ডিআরএস নিয়ে বেঁচে যান তিনি। ওই সময় আউট না হয়ে বাংলাদেশের বোলারদের ওপর চড়ে বসার চেষ্টা করেন লঙ্কান দুই ওপেনার। যে কারণে দেখা গেলো, ৫.৩ ওভার পর্যন্ত ৩৪ রানের জুটি গড়ে ফেলেন তারা। কিন্তু হাসান মাহমুদ এসেই ব্রেক থ্রুটা এনে দেন। নিজের করা দ্বিতীয় ওভারেই দিমুথ করুনারত্নেকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন তিনি। বলে দুর্দান্ত সুইং ছিল। ক্রিকইনফো লিখেছে, এমন বল নিয়ে দুঃস্বপ্নও দেখে থাকেন ব্যাটাররা। পায়ের ওপর বলটি পিচ করে অফস্ট্যাম্প দিয়ে বের হয়ে যাচ্ছিলো। স্কয়ার লেগে খেলার চেষ্টা করেঝিলেন করুনারত্নে। কিন্তু বল ব্যাটের কিনারা চুমু দিয়ে গিয়ে জমা পড়ে উইকেটরক্ষক মুশফিকের গ্লাভসে। ১৭ বলে ১৮ রান করে বিদায় নেন করুনারত্নে। ৩৪ রানের মাথায় প্রথম ব্রেক থ্রু উপহার দিয়েছিলেন হাসান মাহমুদ। এরপর উইকেটে বেশ ভালোভাবেই থিতু হয়ে যান পাথুম নিশাঙ্কা এবং কুশল মেন্ডিস। নিঃসন্দেহে বর্তমান সময়ে শ্রীলঙ্কার দুই সেরা ব্যাটার তারা। এই জুটি নিজেদের সেভাবেই প্রমাণ করতে শুরু করে। যদিও বাংলাদেশের ফিল্ডারদের মিস ফিল্ডিং তাদের ভালো করার পেছনে অনেকটাই অবদান রাখছিলো। শেষ পর্যন্ত পাথুম নিশাঙ্কা এবং কুশল মেন্ডিসের ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা জুটিকে ভাঙতে সক্ষম হন পেসার শরিফুল ইসলাম। ২৪তম ওভারের দ্বিতীয় বলে শরিফুলের বলে এলবিডব্লিউ আউট হন পাথুম নিশাঙ্কা। ৬০ বল খেলে ৫ বাউন্ডারির সাহায্যে ৪০ রান করেন তিনি। এরপর হাফ সেঞ্চুরি করা কুশল মেন্ডিসকেও তুলে নেন শরিফুল। ৭৩ বলে ৬ চার আর ১ ছক্কায় ৫০ রান করার পর মেন্ডিসকে তাসকিন আহমেদের হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন বাঁ-হাতি এই পেসার। উইকেট শিকারে এরপর মেতেছেন তাসকিনও। চারিথ আসালাঙ্কা (১০) তাকে তুলে মারতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বল উঠে যায় আকাশে। মিডঅন থেকে দৌড়ে এসে ক্যাচ নেন সাকিব। ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকেও সেট হতে দেননি হাসান মাহমুদ। ১৬ বলে ৬ রান করে টাইগার পেসারের দ্বিতীয় শিকার হন লঙ্কান অলরাউন্ডার। ১৬৪ রানে ৫ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। সেখান থেকে ষষ্ঠ উইকেটে সাদিরা সামারাবিক্রমা আর দাসুন শানাকা ৫৭ বলে ৬০ রান যোগ করে দেন। ৪৭তম ওভারে শানাকাকে (৩২ বলে ২৪) বোল্ড করে এই জুটি ভাঙেন হাসান মাহমুদ। তাসকিন আহমেদ ৬২ রানে আর হাসান মাহমুদ ৫৭ রানে নেন ৩টি করে উইকেট। ৪৮ রানে ২ উইকেট শিকার শরিফুল ইসলামের। সাকিব আর নাসুম উইকেট না পেলেও বেশ নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেন। সাকিব ১০ ওভারে দেন ৪৪, নাসুম মোটে ৩১ রান।