ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

এশিয়ান গেমসে কঠিন পরীক্ষার মুখে সাবিনা-কৃষ্ণারা

এশিয়ান গেমসে কঠিন পরীক্ষার মুখে সাবিনা-কৃষ্ণারা

চলতি মাসেই পর্দা উঠছে এশিয়ার অলিম্পিক নামে খ্যাত এশিয়ান গেমসের। ১৯তম এই আসরে প্রথম বারের মতো অংশগ্রহণ করবে বাংলাদেশের নারী ফুটবল দল। প্রথম অংশগ্রহণেই কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়েছে লাল-সবুজ দলের মেয়েরা। সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন জাপান এবং সবশেষ বিশ্বকাপ খেলা ভিয়েতনামের মুখোমুখি হতে হবে সাবিনা-কৃষ্ণাদের। তবে একমাত্র চেনা প্রতিপক্ষ নেপাল আছে একই গ্রুপে। গেমসের পুরুষ ফুটবল অনূর্ধ্ব-২৩ দল (তিনজন সিনিয়র) হলেও নারীদের দলে নেই বয়সের সীমারেখা।

তাই অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে হওয়া সর্বশেষ বিশ্বকাপের দল নিয়েই যে চীনে আসবে জাপান ও ভিয়েতনাম সেটা ধরেই নেওয়া যায়। জাপান ও ভিয়েতনাম পূর্ণশক্তির দল নিয়ে গেমসে অংশ নিলে এই দুই ম্যাচে বাংলাদেশের মেয়েদের কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হবে। সেপ্টেম্বরে সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর নারী ফুটবল দলের ওপর দিয়ে বেশ ঝড় বয়ে গেছে। অলিম্পিক ফুটবলের বাছাইয়ে খেলতে পাঠানো হয়নি ফ্র্যাঞ্জাইজি লিগ হবে- হচ্ছে করে কয়েকজন ফুটবলার অন্যদেশে খেলার প্রস্তাব পেলেও তাদের অনুমতি দেয়া হয়নি। জাতীয় দলের দুই অভিজ্ঞ খেলোয়াড় ডিফেন্ডার আঁখি খাতুন ও ফরোয়ার্ড সিরাত জাপান স্বপ্না ক্যাম্প ছেড়ে চলে গেছেন। দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন নারী ফুটবল জাগরণের অন্যতম কারিগর কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনও। এশিয়ান গেমসের জন্য সাবিনাদের প্রধান কোচের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সাইফুল বারী টিটুকে। পুরুষ জাতীয় দলের সাবেক এই কোচের অধীনেই অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন মেয়েরা। প্রথম অংশগ্রহণে নারী ফ্রটবল দল প্রধান টার্গেট করেছে নেপালকে। অন্য দুই ম্যাচের ফল নিয়ে ভাবনা নেই। নেপালে হারাতেই হবে- এমন মানসিকতা নিয়েই ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে চীনের উদ্দেশ্যে উড়াল দেবে নারী ফুটবল দল। প্রথম ম্যাচ ২২ সেপ্টেম্বর জাপানের বিপক্ষে। কোচ সাইফুল বারী টিটুও পাখির চোখ করেছেন নেপালের বিপক্ষে ম্যাচকে, ‘নেপালের বিপক্ষে ম্যাচটা আমাদের জিততে হবে। জাপান ও ভিয়েতনাম অন্য লেভেলের দল। বিশেষ করে জাপান। তারা একবার বিশ্বকাপ জিতেছে। ভিয়েতনাম প্রথম বিশ্বকাপ খেলেছে।

সেখানে যুক্তরাষ্ট্র, পর্তুগাল, নেদারল্যান্ডসের মতো দলগুলোর বিপক্ষে খেলার অভিজ্ঞতা হয়েছে তাদের। জাপান ও ভিয়েতনামের বিপক্ষে খেলা দারুণ অভিজ্ঞতা হবে আমাদের মেয়েদের’- বলছিলেন সাইফুল বারী টিটু। নেপালকে ফাইনালে হারিয়ে বাংলাদেশের মেয়েরা সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এর পর জুলাইয়ে নেপাল ঢাকায় এসে দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলে ড্র করে গেছে। নেপাল চাইবে ঘরের মাঠে হারের প্রতিশোধ চীনের মাটিতে নিতে। বাংলাদেশ অবশ্যই চাইবে না সেটা হতে দিতে। কোচ সাইফুল বারী টিটুর বলেছেন, ‘নেপালের বিপক্ষে কৌশল থাকবে- জিততেই হবে। জাপান ও ভিয়েতনামের বিপক্ষে খেলতে হবে অন্য কৌশলে। সাফের ফাইনালে নেপালকে হারিয়েছি, দক্ষিণ এশিয়ার সেরা হয়েছি। তাই এশিয়ান গেমসেও তাদের হারাতে চাই। সবাইকে সেই মানসিকতায়ই তৈরি করছি।’ এদিকে কঠিন গ্রুপে পরেও বিচলিত নন অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। নিজেদের সেরাটা দেয়ার জন্য ভালো প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সাবিনা খাতুন। ‘প্রস্তুতি মোটামুটি আলহামদুলিল্লাহ ভালো যাচ্ছে। যেহেতু আমাদের গ্রুপে বেশ কঠিন দল আছে। প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলতে পারে এবং ফুটবলে মেয়েদের পারফরমেন্সও বেশ ভালো তাই সবকিছু মিলিয়ে আমার মনে হয় যে, আমাদের প্রস্তুতি ভালোই চলছে এবং আশা রাখি যে ভালো ম্যাচ উপহার দিতে পারবো। ‘ডি’ গ্রুপে জাপান, ভিয়েতনাম অচেনা প্রতিপক্ষ হলেও নেপালই একমাত্র বাংলাদেশের কাছে সুপরিচিত দল।

এই প্রসঙ্গে সাবিনা খাতুন বলেন, ‘আমাদের গ্রুপে অনেক কঠিন দল রয়েছে। তারপরও বিশেষ করে যেহেতু নেপালের সঙ্গে খেলা আছে আমাদের চেষ্টা থাকবে নেপালের সঙ্গে ভালো করার। ইনজুরিতে আছেন দলের অন্যতম ভরসার নাম স্ট্রাইকার কৃষ্ণা রানী সরকার। তবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন নিজেকে পুরোপুরি ফিট করার। এ প্রসঙ্গে সাবিনা বলেন, ‘কৃষ্ণা হালকা একটু ইনজুরিতে ছিল, কিন্তু ও হয়তো রিকভারি করছে।

বাদ বাকি সবাই ফিট আছে।’ ২৩ তারিখেই মাঠে গড়াবে এশিয়ার এই টুর্নামেন্ট। একই দিনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে চীনের হ্যাংঝুতে। সেখানে বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা বাহনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে দুজনকে। তাদের মধ্যে সাবিনা একজন। তাকে বাংলাদেশ নারী ফুটবলের অধিনায়ক হিসেবে এই মর্যাদা দিয়েছে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত