পথশিশু ক্রিকেট বিশ্বকাপ

ওরাই ওড়াবে লাল-সবুজের বিজয়কেতন

প্রকাশ : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

ভারতে পঞ্চাশ ওভারের বিশ্বকাপের আগে আরেকটি বিশ্বকাপ শুরু হতে যাচ্ছে। সেটাও ক্রিকেট। তবে পথশিশুদের ক্রিকেট। পথশিশুদের নিয়ে দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ ক্রিকেট আয়োজন হতে যাচ্ছে। ২০১৯ সালে প্রথমবার এই আসরের আয়োজন করেছিল ইংল্যান্ড। ভারতের সেভ দ্য চিলড্রেন ও স্ট্রিট চাইল্ড ইউনাইটেড মিলে পথশিশুদের নিয়ে এই ক্রিকেট আয়োজন করে থাকে। ১০ দিনের এই আয়োজন শুরু হবে ২০ সেপ্টেম্বর থেকে। পুরো আয়োজন অনুষ্ঠিত হবে ভারতের চেন্নাইতে। বাংলাদেশ থেকে পথশিশুদের একটি দল বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা লোকাল এডুকেশন অ্যান্ড ইকোনমিক ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন। এই সংস্থার খুদে ক্রিকেটাররাই এবারের আসরে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে লিডোর তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম বলেন, ভারতের চেন্নাইয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া পথশিশু ক্রিকেট বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করা অত্যন্ত গৌরবের। বাংলাদেশ সরকারের সমর্থন ও সহায়তায় খেলায় প্রতিনিধিত্ব করা পথশিশুদের পাসপোর্ট প্রাপ্তি ও ভিসা আবেদন সম্পন্ন হয়েছে। তিনি জানান, পথশিশু ক্রিকেট বিশ্বকাপ শুধু প্রতিভা বিকাশের একটি মঞ্চ নয় বরং বিশ্বব্যাপী অসহায়-সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের ক্ষমতায়ন এবং তাদের অধিকার রক্ষায় বৈশ্বিক সচেতনতার একটি মাধ্যম। এই আয়োজন বিশ্বব্যাপী পথশিশুদের সামগ্রিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। সংবাদ সম্মেলনে লিডোর নির্বাহী পরিচালক ফরহাদ হোসেন বলেন, অসহায় সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য কিছু করতে পেরে আমরা আনন্দিত। বাংলাদেশের পথশিশুদের হয়ে বৈশ্বিক প্রতিনিধিত্ব করার যে অভিযানে আমরা অংশ নিতে চলেছি, তা সত্যিই অবিশ্বাস্যভাবে গর্বের। আমাদের এই আয়োজন বিশ্বব্যাপী পথশিশুদের অধিকার রক্ষায় আওয়োজ তুলবে এবং তা পথশিশুদের পরিচয় এবং অংশগ্রহণ নিশ্চত করতে সহায়ক হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। সংবাদ সম্মেলনে ইনার হুইল ক্লাব ঢাকা নর্থ ওয়েস্টের ভাইস চেয়ারম্যান রাখী চৌধুরী বলেন, এসব পথশিশুদের পাশে থাকতে পেরে আমরা আনন্দিত। এটা আমাদের জন্য গর্বের। আমরা সব সময় তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করবো। ফ্রেন্ডস অব স্ট্রীট চিল্ড্রেন বাংলাদেশের চেয়ারপারসন মাইক শেরিফ বলেন, আমরা লিডোকে সমর্থন দিচ্ছি। এই বিশ্বকাপ পথশিশুদের জন্য আগামীতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশ দলের কোচ আসাদ উল্লাহ আসাদ বলেন, এই পথশিশুরা তিন-চার বছর ধরে বিশ্বকাপ খেলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমি আমার একাডেমি থেকে তাদের প্রস্তুত করছি। যেহেতু তারা তিন-চার বছর ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছে, বিভিন্ন টুর্নামেন্ট খেলেছে, তাই তারা আত্মবিশ্বাসী। আমরা অভিজ্ঞ এবং নতুনদের সমন্বয়ে এই বিশ্বকাপ খেলার জন্য একটি দল তৈরি করেছি। দলের অধিনায়ক হাসান আলী মুসাফির বলে, আমরা দীর্ঘদিন ধরে অনুশীলন করছি। আমাদের দল অনেক শক্ত। আমাদের জন্য দোয়া করবেন, যেন আমরা জিতে আসতে পারি। এবারের পথশিশু ক্রিকেট বিশ্বকাপে বাংলাদেশসহ ১৫টি দেশের ২৪টি দল অংশ নেবে। ভারত সরকারের সমর্থন এবং শ্রী দায়া ফাউন্ডেশনসহ বেশ কয়েকটি সংস্থার সহায়তায় যুক্তরাজ্য ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা স্ট্রীট চাইল্ড ইউনাইটেডের নেতৃত্বে আয়োজিত হচ্ছে বিশ্বকাপের এবারের আসর। এ বছর বিশ্বকাপের মূল প্রতিপাদ্য “পরিচয়” এবং “প্রবেশাধিকার” অর্থাৎ মৌলিক পরিষেবাগুলোতে পথশিশুদের প্রাপ্যতা এবং তাদের অংশগ্রহণকে জোরালো করা। পথশিশুদের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দল: হাসান আলী মুসাফির (অধিনায়ক), ইমন ইসলাম (সহ-অধিনায়ক), হাসিব, রুবেল, আফরিন খাতুন, সাথী, রাজিয়া, জেসমিন, স্বপ্না, হামিদা।