ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিসিবির সতর্কবার্তা

ক্ষমা চাইলেন তানজিম সাকিব

ক্ষমা চাইলেন তানজিম সাকিব

কর্মজীবী নারীদের নিয়ে ফেসবুকে নেতিবাচক মন্তব্য করা ক্রিকেটার তানজিম হাসান সাকিব ক্ষমা চেয়েছেন। তরুণ এই পেসারকে সতর্ক করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বোর্ডের ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস জানিয়েছেন, এই ক্রিকেটারকে ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার মিরপুরে গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিসিবির এই পরিচালক। সদ্য শেষ হওয়া এশিয়া কাপের সুপার ফোরে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক হয় তানজিমের। অভিষেকেই ব্যাট হাতে ৮ বলে ১৪ রানের পাশাপাশি দুই উইকেট শিকার করে আলোচনায় আসেন তিনি। ভারতের বিপক্ষে জয়ে ভূমিকা ছিল তারও। তরুণ এই পেসারের এমন পারফর্মে মুগ্ধ হয়েছিলেন অনিল কুম্বলে-দীনেশ কার্তিকও। তবে প্রশংসার মধ্যেও তার ফেসবুকের কিছু পুরনো পোস্টও ভাইরাল হয়ে পড়ে। যাতে কর্মজীবী নারীদের প্রতি তার বিষোদগার দেখা যায়।

এসব পোস্ট ছড়িয়ে পড়ার পর নারী অধিকার কর্মী ও নারীবাদীরা সরব হয়েছেন সমালোচনায়। তানজিম গত বছর ফেসবুকে পোস্ট করেন, ‘স্ত্রী চাকরি করলে স্বামীর হক আদায় হয় না, স্ত্রী চাকরি করলে সন্তানের হক আদায় হয় না, স্ত্রী চাকরি করলে তার কমনীয়তা নষ্ট হয়, স্ত্রী চাকরি করলে পরিবার ধ্বংস হয়, স্ত্রী চাকরি করলে পর্দা নষ্ট হয়, স্ত্রী চাকরি করলে সমাজ নষ্ট হয়।’ তানজিমের আরেকটি পোস্ট ছিল এমন, ‘ভার্সিটির ফ্রি-মিক্সিং আড্ডায় অভ্যস্ত মেয়েকে বিয়ে করলে আর যাই হোক সন্তানের জন্য একজন লজ্জাশীলা মা দিতে পারবেন না।’ এসব বিষয় নিয়েই মুলত গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন জালাল ইউনুস। তিনি জানান তারা তানজিমের সঙ্গে আলাপ করেছেন, ‘আমরা ক্রিকেট বোর্ড থেকে তানজিম সাকিবের সঙ্গে আমাদের আলাপ আলোচনা হয়েছে, ওর সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। মিডিয়া কমিটি থেকেও যোগাযোগ করা হয়েছে এই ব্যাপারে। তাকে আমরা এই ব্যাপারটা অবগত করেছিলাম।’ তার বক্তব্য হচ্ছে- কাউকে আঘাত করার উদ্দেশে পোস্ট দেয়নি, সে যে পোস্ট দিয়েছে সে মনে করে নিজের থেকে দিয়েছে কিন্তু উদ্দেশ করে পোস্ট দেয়া হয়নি। এটা দিয়ে কারো মনে আঘাত লাগলে সে সেজন্য দুঃখিত। একটা কথা এসেছে নারীর ব্যাপারে। নারীর ব্যাপারে যে পোস্ট ছিল। সে বলেছে, এটার দায় দায়িত্ব নিচ্ছি, আসলে আমি নারী বিদ্বেষী নই। সে বলেছে, তার মা নারী, আমি নারী বিদ্বেষী হতে পারি না।’ একজন সাংবাদিক মনে করিয়ে দেন বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের ব্যাপারে আইসিসির কড়া নীতিমালা আছে। ইংল্যান্ডের পেসার ওলি রবিনসন কিশোর বয়েসে দেয়া পোস্টের কারণে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন। জালাল ইউনুস তখন বলেন, তারা কেবল তানজিমকে সতর্কই করছেন, ‘যে পোস্ট দিয়েছে তাকে আমরা সতর্ক করেছি, যাতে আগামীতে এই ধরনের কোনো পোস্ট না দেয়। সে বলেছে, অবশ্যই সে এই ধরনের পোস্ট থেকে বিরত থাকবে। যখন সে ভুল স্বীকার করেছে সে একটা বড় কথা বলেছে সে নারী বিদ্বেষী নয়, বলেছে আমার মাই তো একজন নারী। আমি কীভাবে নারী বিদ্বেষী হই।’

তিনি জানান আপত্তিকর পোস্টগুলো তানজিম মুছে দিয়েছেন। আগামীতে এই ধরনের পোস্ট দেবেন না বলে জানিয়েছেন। তবে তাকে তারা পর্যবেক্ষণে রাখবেন, ‘অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা তাকে পর্যবেক্ষণ করব। তার পরিবারও শঙ্কিত। তারাও দুঃখিত। যেহেতু সামনে বিশ্বকাপ আছে, যেহেতু সে তরুণ ছেলে। আমরা মনিটর করব। যদি কিছু থাকে আমরা তার বিরুদ্ধে অবশ্যই অ্যাকশন নেব।’ অন্য কারো প্ররোচনায় নয়, পোস্টগুলো নিজে থেকে দিয়েছেন বলে বিসিবিকে জানিয়েছেন তানজিম। সে যা দিয়েছে নিজে থেকে দিয়েছে পোস্টগুলো। ক্ষমা আমাদের কাছে চেয়েছে। তার সঙ্গে আমারা আলাপ-আলোচনা করব। জাতীয় দলের কোড অব কন্ডাক্টে ব্যাপার আছে, এসব তাকে মনে করিয়ে দেয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত