ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিপিএল প্লেয়ার্স ড্রাফট

দল সাজাতে তীব্র লড়াই কুমিল্লা-রংপুর-বরিশালের

দল সাজাতে তীব্র লড়াই কুমিল্লা-রংপুর-বরিশালের

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের জন্য ইমরুল কায়েস সৌভাগ্যের পরশ কি না, তা নিয়ে তর্কবিতর্কের কোনো সুযোগ নেই। বিপিএলে দলটির চার শিরোপার তিনটিই উচিয়ে ধরেছেন ইমরুল। এবারও তাকে দলে নেবে, এমন ভাবনাই কাজ করছিল। পারফরম্যান্স তেমন আহামরি না থাকুক, অধিনায়কত্বে ইমরুল তো একশতে একশ। কিন্তু ২০২৪ সালের বিপিএলের দশম আসরের প্লেয়ার্স ড্রাফটে ইমরুল শুরুতে উপেক্ষিত-ই থাকলেন। ড্রাফটে প্রথম ডাকে কুমিল্লা ডেকে নেয় মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীকে। এরপর জাকের আলী, মাহিদুল ইসলাম, রিশাদ হোসেনকে দলে নেয়। পাঁচ ডাকে ইমরুলের প্রতি আগ্রহ নেই অন্য কারো। তাহলে কি শেষ বিপিএলের চ্যাম্পিয়ন অধিনায়ক ইমরুল কায়েস অবিক্রিত থাকবেন? এমন ফিসফাস শুরু হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কুমিল্লা তেমনটা হতে দেয়নি। নিজেদের পঞ্চম ডাকে ফিরিয়েছেন সৌভাগ্যের পরশ ইমরুলকে। কুমিল্লার মালিকপক্ষ তাকে ডাক দেয়ার ক্ষেত্রেও ভিন্নতা দেখিয়েছে, ‘আমরা আমাদের অধিনায়ক, তিনবারের চ্যাম্পিয়ন অধিনায়ককে ফিরিয়ে আনছি। ইমরুল কায়েসকে আমরা নিচ্ছি।’ দলের চেয়ারম্যান নাফিসা কামাল পরবর্তীতে বললেন, ‘ইমরুল কায়েসকে আমরা দলে নিবই এমন পরিকল্পনা করেই এসেছি। আমাদের অন্যান্য খেলোয়াড়রা যেন হাতছাড়া না হয়, সেজন্য আগেভাগে তাদের নিয়েছি। ইমরুল আমাদের পরিবারের অংশ। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের অংশ। আমরা খুশি যে তাকে আবার ফিরিয়েছি।’ ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা এবারও শিরোপায় চোখ রেখে দল সাজিয়েছে। ড্রাফটের আগেই বিদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে মোহাম্মদ রিজওয়ান, সুনীল নারিন, আন্দ্রে রাসেল, মঈন আলী, ইফতেখার আহমেদ, খুশদিল শাহ, রশিদ খান, নাসিম শাহ ও জনসন চার্লসকে সাইন করিয়েছে। স্থানীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে তাওহীদ হৃদয়কে ১ কোটি টাকারও বেশি দিয়ে সিলেট স্ট্রাইকার্স থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে। ধরে রেখেছে লিটন, মোস্তাফিজ ও তানবীরকে। এছাড়া ড্রাফট থেকে ম্যাথু ওয়াল্টার ফোর্ড ও রাকিম কর্নওয়ালকে নিয়েছে তারা। সব মিলিয়ে সরাসরি সাইন বাদে কুমিল্লা ড্রাফটে খরচ করেছে ৩ কোটি ২৯ লাখ টাকা। কুমিল্লার মতো ড্রাফট গরম করেছে ফরচুন বরিশাল ও রংপুর রাইডার্স। তামিমের এবারের ঠিকানা বরিশাল। সাকিবের রংপুর। ড্রাফটের আগেই বোঝা যাচ্ছিল তারাও টাকার থলে নিয়ে মাঠে নামবে। কারণ সরাসরি সাইনে তারা স্থানীয় ও বিদেশী খেলোয়াড় সংগ্রহে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। তামিমের দল রিটেইন করেছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ ও সৈয়দ খালেদকে। ড্রাফট থেকে পেয়েছে মুশফিকুর রহিমকে। এছাড়া ইব্রাহিম জাদরান, শোয়েব মালিক, পল স্টারলিং, ফখর জামান, মোহাম্মদ আমির, ওয়েলাগে দুনিথ ও দিনেশ চান্দিমালকে দলভুক্ত করেছে। স্থানীয় খেলোয়াড়দের মধ্যে ড্রাফট থেকে পেয়েছে সৌম্য সরকার, সাইফ উদ্দিন, তাইজুল ও কামরুল ইসলাম রাব্বীকে। সরাসরি সাইন বাদে তাদের খরচটাও কম নয়, ২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। সাকিব আল হাসানকে প্রায় ছয় মাস আগে সাইন করিয়েছে রংপুর রাইডার্স। এবার শিরোপা পেতেই চায় তারা। দল বাছাইয়ে সেই প্রতিফলন রয়েছে। সাকিব নিশ্চিতের পর কাজী নুরুল হাসান সোহান, শেখ মাহেদী হাসান ও হাসান মাহমুদকে রিটেইন করে তারা। এছাড়া বিদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে নিকোলাস পুরান, আজমতউল্লাহ উমারজাই, বাবর আজম, মাথিশা পাথিরানা, ব্রেন্ডন কিং ও ওয়ানিন্দু হারারাঙ্গাকে দলে পেয়েছে তারা। সরাসরি সাইন বাদে তারাও ড্রাফট থেকে খরচ করেছে ২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। এই তিন দলেরই বিপিএলে খরচ ১৮ থেকে ২০ কোটি টাকা হবে বলেই ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ, সরাসরি সাইন করে যাদের তারা দলভুক্ত করেছে প্রত্যেককে পেতে কোটির ওপর খরচ করেছে ফ্রাঞ্চাইজিরা। বাকি চার দল খুলনা টাইগার্স, চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স, সিলেট স্ট্রাইকার্স ও দূরন্ত ঢাকার মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য নেই। মাঝারি মানের দল গড়েছে তারাও। গতবার সিলেট স্ট্রাইকার্স মাশরাফি বিন মুর্তজাকে নিয়ে চমকে দিয়ে বিপিএল ফাইনাল খেলেছিল। কিন্তু এবার দল গঠনে তেমন সাড়া মেলেনি তাদের। মুশফিক ও তাওহীদকে ছেড়ে দিয়েছে। জাকির, শান্ত ও তানজিমকে ধরে রেখেছে তারা। সরাসরি সাইনে মাশরাফি রয়েছেন তাদেরই দলে। কুমিল্লা, রংপুর ও বরিশালের অর্থের ঝনঝনানির সঙ্গে বাকি চার দল কতটুকু লড়াই করতে পারে সেটাই দেখার। আগামী বছরের শুরুতে জাতীয় নির্বাচনের পর মাঠে গড়ানোর কথা বিপিএল দশম আসরের।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত