ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মন্তব্য প্রতিবেদন : সরি তামিম ইকবাল!

আপনি বিশ্বকাপের মাঝে ডাক পাবেন!

আপনি বিশ্বকাপের মাঝে ডাক পাবেন!

তামিম ইকবাল খান। সন্দেহাতীতভাবে বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ওপেনার। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আপনি ভারত বিশ্বকাপে যেতে পারছেন না। আপনার ফিটনেস ইস্যু নিয়ে যে নাটক চলল তাতে মনে হলো এই দেশের ক্রিকেট কোনোভাবেই ঠিক অবস্থায় নেই! বিশ্বকাপের দল ঘোষণার ঠিক আগে ‘ক্রিকেটীয় সার্কাস’ দেশবাসী ভালোই উপভোগ করেছে! বিশ্বকাপে একজন ক্রিকেটারের দেশকে প্রতিনিধিত্ব করাটা স্বপ্নের মতো। আরে ভাই! এই বিশ্বকাপে তামিমেরই নেতৃত্ব দেয়ার কথা ছিল! সেই তামিম হঠাৎ ক্রিকেট ছাড়লেন! আবার প্রধানমন্ত্রীর ডাকে ফিরলেন। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৪৪ রানের একটা ইনিংসও খেললেন। এর পরই শুরু নাটক! ঠিক এমনি এক নাটক দেখেছিলাম ২০১১ বিশ্বকাপের দল ঘোষণার আগে! ফিটনেস ইস্যুতে বাদ দেওয়া হলো মাশরাফি বিন মুর্তজাকে। একাডেমি মাঠে ম্যাশ কাঁদলেন এবং কাঁদালেন! অথচ মাশরাফি বারবার বলেছিলেন, তিনি ফিট এবং দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ খেলতে চেয়েছিলেন।

এই দলে গ্রুপিংটা কতটা ভয়াবহ ছিল আপনি জানলে আঁতকে উঠবেন! শুধু এটুকু বলি, যখন দুজন অধিনায়ক ছিলেন তখন নাকি ক্রিকেটাররা ভয়ে ভয়ে থাকতেন! বুঝতে পারছেন গ্রুপিংটা! আর আমাদের একজন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার আছেন যার সাতখুন মাফ! তার সঙ্গে মিলে গিয়েছেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে! ব্যস, তামিম হঠাও মিশন সাকসেস! হায়! যিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন বাংলাদেশ দলকে ভারত বিশ্বকাপে নেতৃত্ব দেবেন, সেই তিনি আজ অপাংক্তেয়!

তামিম ইকবাল যদি হাফ ফিটও থাকেন তারপরও বাংলাদেশ দলে থাকার যোগ্যতা রাখেন। বাংলাদেশ দল তো আর ভারতীয় দল নয় যে, কাকে ছেড়ে কাকে নিবেন....! একটা দুধের শিশুও বোঝে বিশ্বকাপ দ্বিপক্ষীয় সিরিজ কিংবা ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্ট নয়- বিশ্বকাপ মানে বিশ্বকাপ। এখানে অভিজ্ঞতার দাম দিতে হয়!

মনে নেই ১৯৯৯ বিশ্বকাপের কথা! মিনহাজুল আবেদীন নান্নুকে তখণ বাদ দেয়া হয়েছিল। ক্রিকেটপ্রেমীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে নান্নুকে দলে নেয়া হয়েছিল। আর এখনকার প্রধান নির্বাচক সেই বিশ্বকাপে দুটি ফিফটি মেরেছিলেন। তিনি কী করে ভুলে যান অভিজ্ঞতার কথা!

২০০৩ বিশ্বকাপের কথা মনে নেই! আলি জিয়া এবং মহসিন খান দুই পাকিস্তানি ছিল বাংলাদেশের কোচ। সেই বিশ্বকাপে খালেদ মাসুদ পাইলটের নেতৃত্বে আনকোড়া এক দল গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকায়। টিম ম্যানেজম্যান্ট হয়তো ভেবেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকা বাংলাদেশের পাশের কোনো দেশ! ঈদের আগের দিন কানাডার কাছে হেরে লজ্জায় অধোবদন হতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। শুধু কি তাই, চামিন্দা ভাস প্রথম ওভারেই ৪ বলে ৪ উইকেট তুলে বিশ্ব রেকর্ড গড়েন। বিশ্বকাপের মাঝে গিয়ে খেয়াল হলো ও হো, এই দলে অভিজ্ঞতার ঘাটতি রয়েছে। তড়িঘড়ি করে দেশ থেকে ডেকে পাঠানো হলো তামিম ইকবালের চাচা তখনকার সবচেয়ে বড় তারকা আকরাম খানকে। শেষ ম্যাচটা তিনি খেলেছিলেন কেনিয়ার বিরুদ্ধে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ রান করেছিলেন। যদিও কেনিয়ার কাছেও বাংলাদেশকে হারতে হয়েছিল। দুটি জয়ের আশা নিয়ে গিয়ে ২০০৩ বিশ্বকাপে সব ম্যাচ হেরে এসেছিল বাংলাদেশ।

আজ এত বছর পর এসে চাচার কথা মনে করিয়ে দিলেন ভাতিজা। তামিমের অধিনায়ক থাকার কথা ছিল অথচ তিনি দল থেকেই বাদ। গেল ২৪ ঘণ্টায় কী হয়েছে, একবার ভাবুন... তামিমের অগ্রজ নাফিস ইকবাল টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে ছিলেন তাকেও সরিয়ে দেয়া হয়েছে! ভাবতে পারছেন এখানে তামিমের ফিটনেস ইস্যুর চেয়ে অন্য কিছুই বড় ছিল! তবে বাংলাদেশের ক্রিকেট বলে কথা! বিশ্বকাপে গেল গেল রব উঠে গেলে তামিমের শরণাপন্ন আবার যে বোর্ড হবে না তা বলা মুশকিল! তখন তামিমও কি ছুটবেন ভারতে! মনে হয় না!

লেখক : রবিউল ইসলাম বিদ্যুৎ

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত