ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

‘তামিমের অধিনায়কত্ব ছাড়াটা উচিত হয়নি’

‘তামিমের অধিনায়কত্ব ছাড়াটা উচিত হয়নি’

ভারতে ওয়ানডে বিশ্বকাপ শুরু হতে আর মাত্র পাঁচ দিন বাকি। অংশগ্রহণকারী দলগুলো প্রতিপক্ষকে বাগে আনতে নিজেদের রণকৌশল সাজাচ্ছে। ঠিক সে সময় বাংলাদেশের ক্রিকেটে বিরাজ করছে চরম অস্থিরতা। এই অস্থিরতার মূলে রয়েছে দেশের দুই শীর্ষ তারকা তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানের মাঝে দ্বন্দ্ব। তাদের এই দ্বন্দ্বের কথা ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বাইরেও।

ভারতের জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলেও এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এবার মুখ খুললেন বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। সাবেক এই অধিনায়ক মনে করছেন, যে ঘটনাগুলো ঘটেছে তাতে দায় আছে সাকিব, তামিম এবং টিম ম্যানেজম্যান্টেরও। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেইজে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় মাশরাফি সাকিবের সাক্ষাৎকারের বিষয়ে বলেন, ‘সাকিব বলেছে, দলের স্বার্থে যে কাউকে যেকোনো জায়গায় ব্যাটিং করতে হতে পারে। আমার কাছে মনে হয় অধিনায়ক হিসেবে, সাকিব যেহেতু নেতৃত্বই নিয়েছেই। সাকিবই পারত তামিমকে একটা মেসেজ দিতে বা এক মিনিট ফোনে কথা বলতে যে আমার এই পরিকল্পনা আছে, এটা আমি তোর সঙ্গে পরে আলোচনা করব। তাহলে পুরো জিনিসটা চাপা পড়ে যেতো।’ তামিমেরও ভুল আছে, মনে করেন মাশরাফি। তিনি বলেন, ‘বোর্ডের পক্ষ থেকে কেউ একজন তামিমের সঙ্গে কথা বলেছে, যেখানে একপর্যায়ে সে (তামিম) উত্তেজিত হয়ে যায়। এরপর সে নিজে থেকে দলে থাকতে চায়নি।

আমি মনে করি এটাও তার ভুল সিদ্ধান্ত ছিল।’ মাশরাফি যোগ করেন, ‘আমরা দুটো ভিডিও দেখেছি, তামিমের পর সাকিব যে বর্তমানে অধিনায়ক; সে সাক্ষাৎকার দিয়েছে। সেখানেও সে কিছু কথা বলেছে। আমার কাছে কোনোভাবেই মনে হয়নি তামিমের ক্যাপ্টেন্সি ছাড়াটা উচিত হয়েছে। এখন তামিমের একটা ইস্যু ছিল তার ইনজুরি। ইনজুরিটা থাকলে কিছু করার নেই। কিন্তু বোর্ড তাকে নিয়ে একটা কমফোর্ট জোনে ছিল। সবার সঙ্গে বোর্ড থেকে একটা ক্লিয়ার যোগাযোগ ছিল যে, তামিমকে আমরা ক্যাপ্টেন হিসেবে দেখছি। তবুও ইনজুরি এবং সবমিলিয়ে তার ক্যাপ্টেন্সি ছাড়া উচিত হয়েছে কি না তামিমই বলতে পারবে।’ তামিমকে বলা হয়েছিল, আফগানিস্তানের বিপক্ষে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে তিনি খেলতে পারবেন না কিংবা খেললেও নিচের দিকে খেলতে হবে। এমন প্রস্তাব শুনেই মেজাজ হারান তামিম, যার ফলশ্রুতিতে শেষ পর্যন্ত সরে যান দল থেকেই। মাশরাফি মনে করেন, তামিমকে এমন প্রস্তাব দিয়ে ম্যানেজম্যান্ট এই জায়গাটায় ভুল করেছে। তার ভাষায়, ‘আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে তামিমকে বলা হয়েছিল সে যেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ না খেলে কিংবা খেললেও দলের প্রয়োজনে পরে ব্যাট করে। এটা নাকি তাকে ক্রিকেট বোর্ডের কোনো এক ফোন করে বলেছিল। যে কারণে তামিম রিয়্যাক্ট করে। তবে সে (তামিম) কোন পজিশনে ব্যাট করবে, এটা বলার অধিকার ক্রিকেট বোর্ডের কেউ রাখে না। বললে ক্যাপ্টেন কিংবা কোচ বলবে।’ তামিম যদি উত্তেজিত হয়ে প্রতিক্রিয়া দেখানও, তার ওপর ভিত্তি করে বিশ্বকাপ দল থেকে তাকে বাদ দেয়া ভালো সিদ্ধান্ত হয়নি- মনে করেন মাশরাফি। তিনি বলেন, ‘প্রথম হচ্ছে তামিম হয়তো কিছুটা উত্তেজিত হয়ে বলেছে। কিন্তু তার ভিত্তিতে তাকে দলে না রাখা আসলে কেমন হলো একটা জিনিস। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে তামিমকে এই বিষয়টা কিন্তু যে তুমি প্রথম ম্যাচ খেলো না বা খেললেও নিচে ব্যাটিং করো। আমার যদি ক্রিকেট জ্ঞান বিন্দুমাত্র থাকে, এই জিনিসটা ক্রিকেট বোর্ডের কেউ বলার বিষয় না। এটা বলবে একমাত্র কোচ বা অধিনায়ক বা নির্বাচকরা যিনি যাবেন দলের সঙ্গে। মূল কথা হচ্ছে টিম ম্যানেজম্যান্ট বলবে।’ মাশরাফি যোগ করেন, ‘টিম ম্যানেজমেন্ট যদি সেই জিনিসটা বাংলাদেশ থেকে বলতে পারে, দল ঘোষণার পরও বলতে পারত, ইন্ডিয়া গিয়ে বসেও বলতে পারত। ম্যাচের একদিন আগে, দুই দিন আগে যেটা পরিস্থিতি অনুযায়ী বলতে পারত। উইকেট দেখার পর কোচণ্ডঅধিনায়ক একটা সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু সেটা এতো আগে করার কারণটা আসলে কি আমি জানি না।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত