ষোল বছরের ক্যারিয়ারে অসংখ্যবার বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি। এমনকি আইসিসির নিষেধাজ্ঞায়ও পড়েছেন। তবে শঙ্কা সংশয় মাঠের বাহিরে রেখে স্বরুপে ফিরতে খুব বেশি সময় নেননি। বলছি বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের তিন ফরম্যাটে অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের কথা, যিনি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের শীর্ষ আসন ধরে রেখেছেন দশক ধরে। ভারতে বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগেও বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি। সাকিব ইচ্ছে করে তামিম ইকবালকে দলে নেননি। তার কারণেই বিশ্বকাপ খেলা হচ্ছে না দেশসেরা ওপেনারের। উল্টো তামিমকে নানা তীর্যক কথা বলে রাজ্যের সমালোচনার মুখে সাকিব আল হাসান। ওদিকে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিও ভালো হয়নি। ভারত গিয়ে সেভাবে প্রস্তুতিও নিতে পারেননি। বিশ্বকাপের যে দুটি অফিসিয়াল প্র্যাকটিস ম্যাচ ছিল তার, একটিতেও খেলতে পারেননি। এমনকি চাপা গুজব উঠেছিল- সাকিব আল হাসান আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ নাও খেলতে পারেন। পরে অবশ্য টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে জানানো হয়- সাকিব শতভাগ ফিট খেলার জন্য। শেষ পর্যন্ত সাকিব খেললেন। গতকাল শনিবার ভারতের হিমাচল প্রদেশের শীতকালীন রাজধানী ধর্মশালায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে সকালে টস ভাগ্যে জেতার পাশাপাশি বল হাতেও সেই নির্বিকার, ভাবলেশহীন ও সাবলীল সাকিব। আবারো নিজেকে মেলে ধরলেন ‘চ্যাম্পিয়ন’ অলরাউন্ডার। আরো একবার প্রমাণ দিলেন, মাঠের বাইরের কোনো ঘটনাই তাকে এতটুকু বিচলিত, বিব্রত করতে পারে না। তিনি সেসব নিয়ে মাথাও ঘামান না। প্রস্তুতিতে কমতি থাকলেও মাঠে সাকিব সব সময়ই এক। তার মাপা বোলিং আর নিপুণ দল পরিচালনা এবং বোলার ব্যবহারে আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম সেশনেই রীতিমতো চালকের আসনে বাংলাদেশ। দলের হয়ে অন্যতম সেরা বোলিং স্পেলটি যথারীতি সাকিবের। প্রথম স্পেলে ৫ ওভারে ১৫ রানে ২ উইকেট দখল করা বাংলাদেশ ক্যাপ্টেনের ঝুলিতে জমা পড়েছে মোট ৩ উইকেট (৮ ওভারে ৩০ রান)। অধিনায়ক সাকিবের সমান ৩ উইকেট (২৯ রানে) শিকারি অফস্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজও। মূলত এই দুই স্পিনারের সাঁড়াশি বোলিংয়ের সামনেই ১৫৬ রানে আফগানদের বেঁধে ফেলতে সক্ষম হয় টাইগাররা। ১৫৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৯২ বল হাতে রেখে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৫৮ রান তুলে নেয় বাংলাদেশ। ফলে ৬ উইকেটের বড় জয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। এদিন আফগানদের বিপক্ষে সাকিবের বিশ্বকাপ রেকর্ড দুর্দান্ত। এর আগে আফগানদের বিপক্ষে বিশ্বকাপের বড় মঞ্চে দুইবার খেলে প্রতিবার ব্যাট ও বল হাতে দারুণ পারফর্ম করেছেন সাকিব। একবার হয়েছেন ম্যাচসেরা। আরেকবার ম্যাচ সেরার পুরস্কার হাতে না পেলেও ছিলেন অন্যতম সেরা পারফরমার। ৪ বছর আগে ইংল্যান্ডেন সাউদাম্পটনে এই আফগানদের বিপক্ষে বল হাতে ৫ উইকেট (২৯ রনে) শিকারের পাশাপাশি ৬৯ বলে ৫১ রানের দায়িত্বপূর্ণ ইনিংস খেলে চৌকশ নৈপুণ্যে দল জেতানো পারফরমেন্সে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন সাকিব। তার আগে ২০১৫ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় এই আফগানদের বিপক্ষে ৫১ বলে ৬৩ আর পরে বল হাতে ৪৩ রানে ২ উইকেট। ৫৬ বলে ৭১ করে মুশফিক ম্যান অব দ্য ম্যাচ। বাংলাদেশ পায় ১০৫ রানের বড় জয়। তবে বল হাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়া বাংলাদেশ অধিনায়ক ব্যাট হাতে বড় স্কোর গড়তে পারেননি ১৯ বল মোকাবিলা করে ১৪ রানে সাজঘরে ফিরেছেন সাকিব।
