সাকিবকে অধিনায়কত্ব দেয়া সেরা সিদ্ধান্ত : বিসিবি

এবারের বিশ্বকাপ দলে জায়গা হয়নি দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবালের। ভক্তদের দাবি, অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের ইশারাতেই দলে নেই তামিম। তবে তামিমের বাদ পড়ার পেছনে নিজের কোনো ভূমিকা নেই বলেই দাবি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের। তারপরও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা করা হয় সাকিবের। বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের পারফরম্যন্সে এর প্রভাব পড়বে বলেও অনেকে বিশ্বাস করতে শুরু করেছিল। তার ওপর প্রস্তুতি ম্যাচও খেলেননি টাইগার দলপতি। সবমিলিয়ে সময়টা ঠিক সাকিবের পক্ষে ছিল না। তবে বিশ্বকাপের বড় মঞ্চে সাকিব আরো একবার নিজেকে প্রমাণ করেছেন। বিতর্কিত মুহূর্তে আবারও নিজেকে প্রমাণ করেছেন, তিনি সময়ের অন্যতম সেরা এই ক্রিকেটার। বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই বল হাতে ৩ উইকেটের পাশাপাশি অধিনায়ক সাকিবের আগ্রাসী মনোভাবটা নজর কেড়েছে সবার। আফগানদের বিপক্ষে বাংলাদেশের দাপুটে জয়ের পেছনে সাকিবের অধিনায়কত্বকে বাড়তি কৃতিত্ব দিচ্ছেন সবাই।

ম্যাচের পরের দিন বাংলাদেশ দলের কর্মকর্তাদের কাছেও প্রশ্ন ছিল অধিনায়ক সাকিবকে নিয়ে। সাকিবকে অধিনায়ক করাই কি এখন সম্ভাব্য সেরা সিদ্ধান্ত মনে হচ্ছে- এমন প্রশ্নে বিসিবি পরিচালক তানভীর আহমেদ টিটু গতকাল রোববার ধর্মশালায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার মনে হয় এখন অবধি তো তাই মনে হচ্ছে।

এই মুহূর্তে দলে যারা আছে, তাদের মধ্যে ক্যাপ্টেন্সি করার মতো ম্যাটেরিয়ালগুলো যদি আমরা দেখি; অনেকগুলো প্লেয়ারেরর মধ্যে আছে।

কিন্তু যাদের মধ্যে আছে, তাদের মধ্যে থেকে সম্ভাব্য সেরা অপশন হচ্ছে সাকিব আল হাসান। সাকিবের একটা ব্যাপার হচ্ছে সে অনেক অভিজ্ঞ, অনেকদিন ধরেই খেলছে। চাপ নেয়ার যে ব্যাপারটা থাকে, সেটা সে খুব সহজেই সামলাতে পারে।’ বিসিবির মিডিয়া কমিটির প্রধান আরও যোগ করেন ‘আমরা কর্মকর্তা হিসেবে বা আপনারা, দর্শকদের কথা বলতে পারি; আমরা যে পরিমাণ টেনশনে ছিলাম আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ হবে। সেখানে আমাদের যতটুকু টেনশন ছিল, আমার মনে হয় না প্লেয়ারদের মধ্যে সেটি ছিল। কারণ ম্যাচের আগের দিনও তাদের মাইন্ড সেট আপ খুব শক্তিশালী ছিল। ওদের এই আচরণে বোঝা গেছে, তারা অত বেশি চিন্তিত না। তারা তাদের বেস্ট পসিবল যেটা দেয়ার, সেটাই চেষ্টা করবে। কাজে লাগানো, পরিকল্পনা করা ও সেটা প্রয়োগ করার মধ্যেই তাদের মূল ফোকাসটা আছে।- যোগ করেন টিটু। দলগত হয়ে খেলার কথাও শোনা গেল টিটুর কণ্ঠে, ‘আমরা সবসময় যেটা বলি, ১১ জন ক্রিকেটারের একটা দল হয়ে খেলা। সেটা কিন্তু আমরা কালকে শুরু থেকেই দেখেছি। সাকিব অসাধারণ অধিনায়কত্ব করেছে। আমাদের যে ফিল্ডিং করেছে সবাই, তারা যেভাবে ব্যাটিং ও বোলিং করেছে। এ সবটাতেই কিন্তু বোঝা গেছে, তাদের শতভাগ দেয়ার ইচ্ছে ও সেটি দিচ্ছে। এদিকে নিজের ক্যারিয়ারে পঞ্চম বিশ্বকাপে নতুন মাইলফলক স্পর্শ করেছেন সাকিব আল হাসান। আফগানদের ১৫৬ রানে অল-আউট করার দিনে দুর্দান্ত বোলিং করেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। ৮ ওভারে ৩০ রান খরচায় সাকিবের শিকার ৩ উইকেট। বিশ্বমঞ্চে মাঠে নামার আগে চলতি বিশ্বমঞ্চে খেলা ক্রিকেটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারিদের তালিকায় শীর্ষে তিনে ছিলেন সাকিব। আফগান বিপক্ষে ম্যাচের আগে বিশ্বমঞ্চে ৩৪ উইকেট পেয়েছিলেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। তবে আফগান বিপক্ষে ৩ উইকেট নিয়ে বিশ্বমঞ্চে সাকিবের উইকেট সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৭। আর এতেই বিশ্বমঞ্চ মাতানো স্পিনারদের মধ্যে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারিদের তালিকায় ৩ নম্বরে পৌঁছে গেছেন এই বাঁ-হাতি স্পিনার। আফগানদের বিপক্ষে ম্যাচের পর নিউজিল্যান্ডের সাবেক তারকা ক্রিকেটার ড্যানিয়েল ভেট্টোরিকে ছাড়িয়ে গেছেন সাকিব। ৪০ উইকেট নিয়ে এই তালিকায় দুইয়ে আছেন দক্ষিণ আফ্রিকার তারকা ক্রিকেটার ইমরান তাহির। এছাড়া ৬৮ উইকেট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি মুত্তিয়া মুরালিধরন।