ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ ২০২৩

ভারতীয় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার আগে বিশ্রামে বাংলাদেশ দল

ভারতীয় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার আগে বিশ্রামে বাংলাদেশ দল

চলমান ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচ খেলতে বাংলাদেশ দল এখন পুনেতে। আগামী ১৯ অক্টোবর মহারাষ্ট্রে স্বাগতিক ভারতের মুখোমুখি হবে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। ভারতীয় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার আগে লম্বা বিরতি থাকায় তিন দিনের বিশ্রাম দেয়া হয়েছে মুশফিক-মিরাজদের। তাছাড়া বড় টুর্নামেন্ট খেলতে এলে ম্যাচ ডের বাইরে কিছুটা নির্ভার থাকার চেষ্টা করে বাংলাদেশ দল। প্রায়ই দেখা যায় রাখা হচ্ছে ঐচ্ছিক অনুশীলন। ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টানা দুই হারের পর ক্রিকেটারদের শরীর মন হয়ে পড়েছে আরো ক্লান্ত। পুনেতে ভারত ম্যাচের আগে তাই লম্বা বিশ্রাম দেয়া হচ্ছে তাদের। গত শুক্রবার রাতে চেন্নাইতে কিউইদের কাছে ৮ উইকেটে বিধ্বস্ত হওয়া বাংলাদেশ দল শনিবার দুপুরে উঠে ফ্লাইটে। আইসিসিরি ভাড়া করা বিমানে বিকাল ৪টার দিকে পুনেতে নামেন তারা। ভ্রমণ ক্লান্তির কারণে শনিবার এমনিতেও কোনো কার্যক্রম ছিল না টাইগারদের। আজ ও আগামীকাল পুরোপুরি বিশ্রাম দেয়া হয়েছে। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের প্রস্তুতি পর্বের গুরুত্বপূর্ণ অংশ তাই শরীরকে চাঙা করা, মনকে ফুরফুরে করে তোলা। চেন্নাইতে বড় হারের পর মিক্সড জোনে বাংলদেশের সহকারী কোচ নিক পোথাস জানালেন, ক্রিকেট থেকে একটু দূরে সরেই ভারতীয় চ্যালেঞ্জের জন্য তৈরি হবে দল। ‘আমাদের আপাতত ভালোরকম বিশ্রাম দরকার। বিশ্বকাপে একটা বিপদের দিক হলো, একের পর এক ম্যাচ খুব দ্রুত চলে আসে। প্রচণ্ড চাপের একেকটি ম্যাচ। এসব ম্যাচ অনেকটাই শুষে নেয়। একটা পরিস্থিতির চক্রে পড়ে যেতে হয়। মনে হয় যে, অনুশীলন করলে ফল মিলবে, আদতে তা হয় না। আমাদের ক্রিকেটারদের আমরা ভালোরকম শারীরিক ও মানসিক বিশ্রাম দেব। এরপর ভারতের জন্য তৈরি হবো। সাকিবকে নিয়ে অবশ্য কিঞ্চিৎ শঙ্কার জায়গা আছে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে ব্যাটিংয়ের সময় পায়ে টান লাগে তার। পরে বোলিং করলেও নিজের ওভারগুলো শেষ করে বেরিয়ে যান মাঠ থেকে। রাতে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে স্ক্যানও করানো হয় তার। সাকিবের পেশিতে চিড় ধরেছে বলে জানিয়েছে টিম ম্যানেজম্যান্ট। রিপোর্ট পেলে জানা যাবে পুরো বিষয়টা। বিশ্রাম শেষে ক্রিকেটীয় প্রস্তুতি যখন শুরু হবে, সেখানে মূল মনোযোগ থাকবে অবশ্যই টপ অর্ডারের মরচে সরানো, ফাঁক-ফোকড়গুলো সারাই-ঝালাই করা। ম্যাচের পর ম্যাচে শুরুতেই নড়বড়ে হয়ে যাচ্ছে ভিত। উদ্বোধনী জুটি দাঁড়াচ্ছে না, টপ অর্ডার ভেঙে পড়ছে নিয়মিত। সবশেষ ১১ ম্যাচের ৯টিতেই ১০০ রান ছুঁতে ছুঁতে উইকেট পড়েছে ৪টি। টপ অর্ডারের সেই রুগ্ন অবস্থার ছাপ পড়েছে গোটা ইনিংসেই। সবশেষ ১৩ ইনিংসে আড়াইশ’ ছুঁতে পেরেছে দল দুইবার। ব্যাটিংয়ের শুরুটা নিয়ে দুর্ভাবনার কথা মেনে নিচ্ছেন পোথাস। তবে কঠোর পরিশ্রমের পথ ধরে ব্যাটসম্যানরা সমাধান খুঁজে নেবে বলেই বিশ্বাস তার। ‘এটা স্বীকার করা বা না করার ব্যাপার নয়, এটা তো পরিস্কার (টপ অর্ডারের দুর্বলতা)। যখন কোনো কিছু এতটা স্পষ্ট হয়, তখন তা সবারই চোখে পড়ে। আমাদের জন্য বাস্তবতা এখন হলো, সমাধান বের করা। পথ খুঁজে বের করতে কঠোর পরিশ্রম করছে ব্যাটাররা। উঁচু মানের বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে খেললে নিজের সেরা চেহারায় থাকতে হবে। নিজের খেলাটা মেলে ধরার জন্য সময় ও সুযোগ খুব বেশি মেলে না এখানে। কারণ, তারা (প্রতিপক্ষের বোলাররা) সবসময়ই চেপে ধরে। এরকমই হয়, এটা বিশ্বকাপ।’ সেই টপ অর্ডারদের একজন, নাজমুল হোসেন শান্ত টুর্নামেন্ট শুরু করেছিলেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে কার্যকর ব্যাটিংয়ে ফিফটি দিয়ে। কিন্তু পরের দুই ম্যাচে রান পাননি। টপ অর্ডারে তানজিদ হাসান ধুঁকছেন পায়ের নিচের জমিন শক্ত করতে। লিটন দাস ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দারুণ ব্যাটিংয়ে ফিফটি করলেও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আত্মঘাতী শটে বিদায় নিয়েছেন প্রথম বলে। স্কিলের উন্নতি রাতারাতি সম্ভব নয়। শান্ত তাই ভালো করেই জানেন, মানসিকভাবে শক্ত থেকে দলের চাওয়া বয়ে বেড়ানোর বিকল্প নেই। ‘প্রতিদিনই তো পরিকল্পনা করা হয়, আমরা কীভাবে ভালো করতে পারি। তবে আমার কাছে যেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে যে, আমাদের আরো দায়িত্ব নিয়ে ব্যাট করা উচিত। কারণ টপ অর্ডার, অবশ্যই চ্যালেঞ্জ থাকবে নতুন বল ওটার জন্যই আমরা ওপরে ব্যাট করি, ওটা আমাদের দায়িত্ব। সবাই সবার ভূমিকা জানে। আমার মনে হয়, আরেকটু দায়িত্ব নিয়ে আমরা যদি ব্যাট করি এখানে স্কিল খুব বড় ব্যাপার নয়, আরেকটু দায়িত্ব নিয়ে ব্যাট করা উচিত।’ সেমিফাইনালের উঠে ইতিহাস গড়ার লক্ষ্য নিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করলেও তিন ম্যাচ শেষে বাস্তবতার কঠিন আঘাতে তা টালমাটাল এখনই। শান্তও এখন বড় স্বপ্নের কথা বলছেন না নির্দিষ্ট করে। একটা ম্যাচে ভালো কিছু করতে পারলেই দলের আবহ বদলে যাবে বলে বিশ্বাস তার। ‘অবশ্যই আমাদের ভালো খেলতে হবে। আগে থেকেই শুধু যদি বলে যে ‘এটা করতে চাই, ওটা করতে চাই’, এসবের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আমরা কত ভালো ক্রিকেট খেলছি। আমার কাছে তাই মনে হয় গুরুত্বপূর্ণ হলো, কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারি। একটা ভালো ম্যাচ দলের পুরো পরিবেশ বদলে দেবে, আমার মনে হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত