ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ

হোটেলে সাংবাদিক দেখে ক্ষেপে গেলেন লিটন দাস!

হোটেলে সাংবাদিক দেখে ক্ষেপে গেলেন লিটন দাস!

এবারের ওয়ানডে বিশ্বকাপে শুরুটা দুর্দান্ত হয়েছে সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিমদের। তবে পরের দুই ম্যাচের গল্প শুধুই হতাশার। ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে টানা দুই ম্যাচ হার। বিশ্বকাপ মঞ্চে সেমিফাইনাল খেলার লক্ষ্য নিয়ে ভারতে পা রাখা বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি না থাকারই কথা। এজন্য ক্রিকেটারদের ব্যাট-বল থেকে একটু দূরে রাখতে, নিজেদের চাঙা হতে, মানসিক অবসাদ দূর করতে বিশ্রামের দাওয়াই দেয়া হয়েছে। চেন্নাইয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের পর ট্রাভেল ডে-সহ তিন দিনের ছুটি। এরপর ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের প্রস্তুতি। পুনেতে তাই ক্রিকেটারদের যা খুশি তাই করে বেড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট। নিয়মের বেড়াজাল না থাকায় ক্রিকেটাররাও শহরের এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কেউ কেউ জিম, সুইমিং করেছেন। সেগুলোর সংখ্যাও খুব বেশি নয়। গতকাল রোববার দুপুরে টিম মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ দলের টিমবয় সোহেলকে নিয়ে বেরিয়ে যান মধ্যাহ্ন ভোজে। লিফটের সামনে তাকে বসে মোবাইল স্ক্রল করতেও দেখা যায়। আগের ম্যাচে দলে ফিরে মাঝারিমানের রান করে দলের মান বাঁচিয়েছিলেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান।

দল না জেতায় তার মুখে হাসি নেই ঠিকই। কিন্তু প্রাণখোলা ছিলেন। ঠিক তেমনটাই তাসকিন আহমেদও। হোটেলের লবি থেকে বেরিয়ে উবারে ওঠার আগ পর্যন্ত হাসিমুখে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে সৌজন্যতা দেখান। ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে হাসিমুখে পোজ দিয়েছেন। তার সঙ্গে থাকা তানজিদ তামিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহীদ হৃদয়ও তাই করেছেন। তাদের নিয়ে একসঙ্গে হোটেল ছাড়েন দলের অ্যানালিস্ট শ্রীনিবাস চন্দ্রশেখরন। হোটেল ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার পথে তাদের প্রক্রিয়াও ছিল স্বাভাবিক। চেন্নাইয়ের স্থানীয় ছেল কারাপ্পার সঙ্গ নিয়েছেন আরেক পেসার হাসান মাহমুদ। সবকিছুই চলছিল ঠিকঠাক। ক্রিকেটারদের আসা-যাওয়ার ফাঁকে গণমাধ্যমকর্মীরা নিজেদের কাজও সেরে নিচ্ছিলেন বিরক্ত করা ছাড়া। তাদের ঠিকানা কনরাড পুনের স্টাফরাও ছিলেন বেশ সাবলীল। গণমাধ্যমকর্মীরা কফি-কুকি অর্ডার করে চুমুক দিচ্ছিলেন আর কাজ সারছিলেন। তাই কর্তৃপক্ষের কোনো অভিযোগ ছিল না। কিন্তু বাঁধ সাধেন দলের ওপেনার লিটন দাস। ছাই রঙের হাফপ্যান্ট, কালো স্ট্রাইপ টি-শার্ট ও মাথায় কালো টুপি পরে বেরিয়ে আসেন লবিতে। দূর থেকে দেখে তাকে প্রথমে চেনা যায়নি। কাছে আসতেই স্পষ্ট বোঝা যায়। এরপর ক্যামেরার ফ্ল্যাশ খুঁজে নেয় লিটনকে। কিন্তু ডানহাতি ওপেনার হয়ে ওঠেন বিরক্ত। বিশাল দরজা পেরিয়ে লিটন যখন গাড়ির অপেক্ষায় তখন একজন সিকিউরিটিকে ডাক দিয়ে বলে উঠেন, ‘মিডিয়া এখানে কেন? আমার ছবি তুলছে কেন?’ সেখানেই লিটন থামেননি। ভেতরে থাকা ম্যানেজারকে ডেকে আনেন।

তার সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। কি কথা হয়েছে দুজনের তা স্পষ্ট বোঝা যায়নি। তবে এর প্রতিক্রিয়াও কিছুক্ষণের মধ্যেই টের পাওয়া যায়। কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মী কাছে এসে বিনয়ের সঙ্গে বলেন, ‘আপনাদের খেলোয়াড় অভিযোগ তুলেছেন। আপনাদের বেরিয়ে যেতে হবে।’ কি অভিযোগ করেছেন তা জানতে চাইলে সরাসরিই তারা উত্তর দিয়েছেন, ‘আপনারা এখানে কেন এসেছেন সেটা নিয়েই তার আপত্তি।’ গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে অভিযোগ করা রীতিমতো বিস্ময়কর বটে। সেটাও হোটেলের ম্যানেজারকে জানানো আরো বিব্রতকর ঘটনা। দলের ম্যানেজার, মিডিয়া ম্যানেজার সবাই হোটেলেই উপস্থিত। অন্যান্য ক্রিকেটাররা যেখানে গণমাধ্যমকর্মীদের দায়িত্বটা বুঝে নিজেদের নিরাপদ দূরত্বে রেখে নিজের কাজ করে গেছেন। সেখানে লিটন আতঙ্কিত হয়ে দূর দেশে অনাকাঙ্ক্ষিত এক ঘটনার সৃষ্টি করলেন। এমনিতেই ধারাবাহিকতার বড্ড ঘাটতি তার ব্যাটে। সেখানে মাঠের বাইরে অনভিপ্রেত ঘটনা খেলা করবে তার মাথায়ও। যেখানে ক্রিকেটারদের ক্রিকেট থেকে দূরে থাকতে ছুটি দাওয়াই দেয়া হয়েছে সেখানে এমন ঘটনা একেবারেই অপ্রত্যাশিত।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত