ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আজ মালদ্বীপের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প নেই বাংলাদেশের

আজ মালদ্বীপের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প নেই বাংলাদেশের

বিশ্বকাপের প্রাক-বাছাই পর্ব হলেও বাংলাদেশের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ এক ম্যাচ আজ। মালদ্বীপের বিপক্ষে ফিরতি লেগের এই ম্যাচ জিতলে বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে হাভিয়ের কাবরেরার শিষ্যরা। সেই সঙ্গে পাবে অন্তত ছয়টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ। মিলবে এএফসি এশিয়া কাপে খেলার যোগ্যতাও। ২০২৬ বিশ্বকাপের এশিয়া অঞ্চলের বাছাইয়ের প্রিলিমিনারি রাউন্ডে প্রথম লেগে মালদ্বীপের বিপক্ষে ১-১ ড্র করেছে বাংলাদেশ। গত ১২ অক্টোবর মালেতে ম্যাচের শেষ মুহূর্তে সাদউদ্দিনের গোলে স্বস্তির ড্র করতে সমর্থ হয় হাভিয়ের কাবরেরার শিষ্যরা। আজ ঘরের মাঠে একই প্রতিপক্ষে বিপক্ষে মাঠে নামবে লাল-সবুজ দল। বিশ্বকাপ বাছাই খেলতে হলে এই ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই বাংলাদেশের সামনে। বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় হতে যাওয়া ম্যাচটি নির্ধারিত সময় ড্র থাকলে অতিরিক্ত সময় গড়াবে। অতিরিক্ত সময়েও ড্র থাকলে টাইব্রেকারে নিষ্পত্তি হবে। এমন ম্যাচটিকে তাই বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া ‘ম্যাচ অব দ্য ইয়ার’ আখ্যা দিয়েছেন।

অন্যদিকে কোচ হাভিয়ের কাবরেরা বলেছেন, ‘জিততে পারি বলার মতো যথেষ্ট সাহস ও আত্মবিশ্বাস আছে।’ ম্যাচের আগের দিন সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ কোচ বলেন, ‘মালেতে প্রথম ম্যাচ খেলে আসার পর আমরা তিন-চার দিন অনুশীলন করেছি ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে। সেখানে দারুণ লড়াই হয়েছিল। অনেক দিন পর মালদ্বীপে আমরা ড্র করেছি, যেটা দলকে অনেক আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। এখন নিজেদের মাঠে, নিজেদের দর্শকের সামনে আমাদের অনেক বড় এবং সুন্দর চ্যালেঞ্জ। দল রোমাঞ্চিত, শিহরিত এবং এই চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত।’ হাভিয়ের কাবরেরা বলেন, ‘মালদ্বীপে আমরাও সুযোগ তৈরি করেছি, একটা কাজে লাগিয়েছি। তবে আমরা ওখানে ২৩ বছর পর ড্র করেছি, যেটা আমাদের জন্য ইতিবাচক দিক। এখন সবকিছু আমাদের হাতে, নিজেদের ওপর নির্ভর করছে এবং আমি মনে করি, জিততে পারি, এটা বলার জন্য আমরা এখন যথেষ্ট সাহসী এবং আত্মবিশ্বাসী।’ কোচের মতো আত্মবিশ্বাসী অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াও। তবে চেনা আঙিনায় খেলা বলে আরো বেশি অনুপ্রেরণা অনুভব করছেন অধিনায়ক। ‘মদ কাণ্ডে’ জড়িত হয়ে দলের বাইরে থাকা গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো, ডিফেন্ডার তপু বর্মন ও রিমন হোসেন এবং ফরোয়ার্ড শেখ মোরসালিন ও তৌহিদুল আলম সবুজের না থাকা নিয়ে চিন্তিত নন তিনি।

জামাল বলেন, ‘মালদ্বীপ যখন হোম গ্রাউন্ডে খেলে, ওরা তখন খুবই শক্তিশালী দল। কিন্তু বাইরে খেললে... ওদের কিছু দুর্বলতা আছে। আমরা নিজেদের মাঠে খেলব, আমাদের এই সুযোগটা নিতে হবে। আমাদের সমর্থকদের পাশে পেতে হবে। আমাদের মাঠে আরও প্রাণশক্তি দেখাতে হবে। কারণ, মালদ্বীপে যখন খেলেছি, তখন দেখেছি প্রাণশক্তির একটু কমতি ছিল।’ তিনি বলেন, ‘তাছাড়া সেখানে আবহাওয়া ভিন্ন ছিল, মাঠ ভিন্ন ছিল, ওরা তো মাঠে পানি দেয় না। ওখানে আমরা একটু আপসেট ছিলাম, কিন্তু এখন সব ঠিকঠাক আছে, দলের এটাই সঠিক ‘সেট-আপ।’ আগামীকাল (আজ) কোনো অজুহাত নয়, আমাদের জিততে হবে।’ জামালের জিততে চাওয়ার এমন আকুতির কারণ সেই ২০১৬ সালের ভুটান ট্র্যাজেডি। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ওই এক হারে ১৬ মাস আন্তর্জাতিক ফুটবলের বাইরে ছিল বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে ভরাডুবি হলে আবারও লম্বা সময়ের জন্য আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে দূরে থাকতে হবে জামালদের। অধিনায়কের কাছে তাই এ ম্যাচটি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। ‘আগামীকালের ম্যাচটি আমাদের জন্য হবে ‘ম্যাচ অব দ্য ইয়ার।’ গত কয়েক দিন ঢাকায় আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি, টেকটিক্যাল দিক নিয়ে কাজ করেছি। আমরা এই ম্যাচের জন্য প্রায় পুরোপুরি প্রস্তুত। এটা আমাদের জন্য বড় ম্যাচ, যেটা আমি এর আগেও বলেছি, ‘ফাইনাল অব দ্য ইয়ার।’ যে কোনোভাবে জিততে হবে।’ চাওয়া পূরণে জিকো, মোরসালিন, তপুদের অনুপস্থিতিতে সুযোগ পাওয়া মিতুল মার্মা, শাকিল হোসেন এবং ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের মতো তরুণদের কাঁধে আস্থা রাখছেন জামাল। জামাল ভূঁইয়া বলেন, ‘আমি মনে করি, যাদের রিপ্লেস করেছে, ওরা দারুণ খেলেছে। মিতুল (প্রথম লেগে) গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটা সেভ করেছে, শাকিল ভালো খেলেছে, টপ পারফরম্যান্স করেছে। ফাহিম কিছুটা দুর্ভাগা, ও সুযোগ পেয়েছে, কিন্তু গোল পায়নি। আমার মনে হয়, আরেকটু হলেই ও গোল পেতে পারত। সে নিজেকে জানে এবং এটাও জানে, সে আরও ভালো খেলতে পারে। আমার এবং অন্যদের দায়িত্ব তাকে সর্বোচ্চ সহায়তা দেয়া।’ মালের ড্রয়ের আগে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের দেখায় পিছিয়ে পড়ে মালদ্বীপকে ৩-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। সেবার জিকো, তপুদের নিয়ে পূর্ণ শক্তির দল পেয়েছিলেন কাবরেরা। তরুণদের নিয়ে মালদ্বীপকে রুখে দেয়া বাংলাদেশকে তাই সমীহ করছেন অতিথি দলের কোচ আলি সুজেইন। ‘দুটি দলের জন্যই এটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। মালের ম্যাচটি ড্র হয়েছিল, দুই দল বলতে গেলে প্রায় একই রকম খেলেছিল, এটা দুর্ভাগ্য যে, আমরা গোল করে তা আগলে রাখতে পারিনি, শেষ দিকে যোগ করা সময়ে বাংলাদেশ গোল করল।’ মালদ্বীপ অধিনায়ক ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা আগামীকালের ম্যাচের জন্য প্রস্তুত। এ ম্যাচের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছি আমরা। আমরা জানি, বাংলাদেশে খেলা কঠিন, কিন্তু তাদের বিপক্ষে জিততে প্রস্তুত আমরা।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত