ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

থমকে আছে সংস্কারকাজ

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ফিরছে অ্যাথলেটিকস

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ফিরছে অ্যাথলেটিকস

দেশের প্রথম আন্তর্জাতিক ভেন্যু বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম। এই স্টেডিয়ামে খেলেছেন লিওনেল মেসি ও জিনেদিন জিদানের মতো বিশ্বসেরা তারকা ফুটবলার। ক্রিকেটের মিনি বিশ্বকাপ, এশিয়া কাপ হকি, বক্সার মুহম্মদ আলীর প্রদর্শনী ম্যাচসহ অনেক আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হয়েছে এই মাঠে।

১৯৫৪ সালে তৈরি এ ভেন্যুটি দীর্ঘ দিন সংস্কার না হওয়ায় বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। এরপর ২০২১ সালের জুলাইয়ে স্টেডিয়ামের সংস্কারকাজ শুরু হয়। শুরুতে বলা হয়েছিল কাজ ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই সংস্কার কাজ শেষ হবে। তবে কাজ চলাকালেই পরিকল্পনায় এসেছে পরিবর্তন, কাজের কলেবর গেছে বেড়ে। যার ফলে কাজটাও গেছে পিছিয়ে। ইতিমধ্যেই মাঠের ঘাস আর অ্যাথলেটিকস ট্র্যাক বদলে গেছে। এখনও গ্যালারি, ফ্লাডলাইট ও প্রেসবক্স আধুনিকায়নের কাজ বাকি। ক্রীড়া পরিষদের পরিকল্পনা পরিচালক শামসুল আলম জানিয়েছেন, কাজের পরিধি বেড়ে যাওয়ার ফলেই ২০২২ সালের পরিবর্তে ২০২৪ সাল পর্যন্ত চলে যাচ্ছে এই মাঠের সংস্কার কাজ। তবে অ্যাথলেটিক্স ট্র্যাকের কাজ সম্পূর্ণ হওয়ায় আসন্ন ১৭তম জাতীয় গ্রীষ্মকালীন অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতা বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে হতে যাচ্ছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুর রকিব মন্টু বলেন, ‘আমরা জাতীয় অ্যাথলেটিকস আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। প্রায় আড়াই বছর পর আমরা বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ফিরতে যাচ্ছি, যা আমাদের জন্য দারুণ বিষয়। আশা করি অ্যাথলেটরা নতুন টার্ফে ভালো পারফরম্যান্স প্রদর্শন করতে পারবে।’ জাতীয় অ্যাথলেটিকসের প্রায় সকল ইভেন্ট বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে আয়োজনের ব্যবস্থা থাকলেও হ্যামা থ্রো আর্মি স্টেডিয়ামে পরিচালনা করবে ফেডারেশন। অ্যাথলেটিকস টার্ফের মেয়াদ সাধারণত ১০-১২ বছর। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের অ্যাথলেটিকস টার্ফটি ২০১৩-১৪ সালের দিকেই মেয়াদোত্তীর্ণ হয়। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ টার্ফে ২০২০ সাল পর্যন্ত খেলা চালিয়েছে ফেডারেশন। ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে ফেডারেশন বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের পরিবর্তে আর্মি স্টেডিয়াম ব্যবহার করে আসছে। গত আড়াই বছরে জাতীয়, গ্রীষ্মকালীন ও জুনিয়র মিলিয়ে সাতটি প্রতিযোগিতা আর্মি স্টেডিয়ামে আয়োজন করেছে অ্যাথলেটিকস ফেডারেশন। ১৭তম গ্রীষ্মকালীন প্রতিযোগিতায় নিজস্ব ঘরে ফিরছে অ্যাথলেটিকস। বাংলাদেশের সকল স্টেডিয়ামের মালিকানা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের। সংস্থাটি এখনও অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনকে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন টার্ফ বুঝিয়ে দেয়নি। এ নিয়ে কোনো সমস্যা দেখছেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব পরিমল সিংহ। ‘টার্ফ প্রস্তুত রয়েছে এবং ফেডারেশনও আয়োজনে আগ্রহী। তাই আমরা তাদের আয়োজনের জন্য সম্মতি প্রদান করেছি। জাতীয় প্রতিযোগিতার আগেই আমরা ফেডারেশনের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করব।’ অ্যাথলেটিকসের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম ব্যবহার করা হয় ফুটবলেও। এটি বাংলাদেশ ফঢুটবলের প্রধান ভেন্যু। তবে সংস্কার কাজের জন্য ঘরোয়া লিগ ও জাতীয় ফুটবল দলের ম্যাচ অন্যত্র আয়োজন করছে ফেডারেশন। অ্যাথলেটিকস টার্ফের সঙ্গে মাঠ ও ড্রেসিংরুমও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের বুঝিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিমল সিংহ, ‘ফুটবল ফেডারেশন মাঠ ব্যবহার করতে চায়। আমরা একটি শর্তমালার মাধ্যমে ফুটবল ফেডারেশনকে মাঠ এবং ড্রেসিংরুম বুঝিয়ে দিতে চাই শিগগিরই।’ মাঠ ও ড্রেসিংরুম বুঝিয়ে দিলেও বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে লিগের ম্যাচ পরিচালনার উপযোগী হবে না। ম্যাচ কাভারের জন্য সাংবাদিকদের প্রেস বক্স ও দর্শক গ্যালারি এখনও সংস্কারাধীন। এরপরও জাতীয় দলের অনুশীলন, ক্লোজড ডোর ম্যাচের জন্য ফেডারেশন বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের মাঠ বুঝে নিতে মরিয়া। একসময় এই স্টেডিয়ামে সব ধরনের খেলাই অনুষ্ঠিত হত। কিন্তু বর্তমানে স্টেডিয়ামটি কেবল ফুটবল মাঠ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত