ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

খেলছেন সাকিব আল হাসান

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়াতে চায় বাংলাদেশ

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়াতে চায় বাংলাদেশ

আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুর্দান্ত জয় দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছিল টাইগাররা। পরবর্তীতে টানা তিন ম্যাচ হেরে অনেকটাই কোণঠাসা বাংলাদেশ দল। ফলে সেমিফাইনালে খেলার যে লক্ষ্য নিয়ে দেশ ছেড়েছিল লাল সবুজের প্রতিনিধিরা, তা এখন অনেকটাই কঠিন হয়ে পড়েছে। তার উপর ভারতের বিপক্ষে সবশেষ ম্যাচে ছিল চোটের খরগ। যে কারণে গুরুত্বর্পূ ম্যাচটিতে খেলতে পারেননি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও তাসকিন আহমেদ। শেষ চারে খেলার আশা বাঁচিয়ে রাখতে পঞ্চম ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই বাংলাদেশের সামনে। তাই ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্য নিয়েই আজ মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মাঠে নামবে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। এ ম্যাচে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও পেসার তাসকিন আহমেদ খেলবেন কি না তা নিশ্চিত করেনি টিম ম্যানেজম্যান্ট। তবে সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয়ে সাকিব নিজেই জানিয়েছেন সবকিছু ঠিক থাকলে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচে খেলবেন তিনি। ‘গতকাল যখন ট্রেনিং করেছি তখন কোনো কিছু (ব্যথা) ফিল করিনি। নেগেটিভ কোনো কিছু ফিল করিনি। আজ আবার ট্রেনিং করব, যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকে, তাহলে আমি পুরোপুরি ফিট ইনশাআল্লাহ।’ সেই লক্ষ্য নিয়েই সোমবার ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে অনুশীলন করেছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। ভারতের বিপক্ষে বিশ্বকাপের ম্যাচ মিস করা সাকিব ফেরার লড়াইয়ে নিজেকে প্রস্তুত করছেন। আগের দিন ৫০ মিনিটেরও বেশি সময় নেটে ব্যাটিং করেছেন। দফায় দফায় খেলেছেন পেসার, স্পিনারদের। কখনো খেলেছেন থ্রোয়ারদের। মাঠে নেমে ফুটভলি খেলে গা গরম করেছেন সাকিব। যেখানে নিজেকে সুরক্ষিত করেছিলেন। বাম পায়ের ঊরুতে চোট থাকায় ডান পায়ে শট নিয়েছেন বেশিরভাগ সময়। এরপর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে নেটে ঢুকেন যান। শুরুতে নকিংয়ের পর পেসারদের খেলেন সাকিব। তাকে বোলিং করেন মোস্তাফিজ, হাসান ও শরিফুল। পেসাররা যখন বল হাতে ছুটেছেন তখন তাসকিন ফিজিওর শুশ্রুষা নিয়েছেন। কাঁধে হালকা চোট থাকায় বল করা থেকে বিরত আছেন তিনি। তাকে ফুরফুরে রাখতে কোচ অ্যালান ডোনাল্ড সঙ্গ দিয়েছেন লম্বা সময়। পেসারদের নেটে সময় দেয়ার পর সাকিব ঢুকে যান স্পিনারদের খেলতে। যেখানে মেহেদী হাসান মিরাজ, মাহেদী হাসানের সঙ্গে ছিলেন এক অচেনা লেগ স্পিনার ওয়াসি সিদ্দিক। বয়সভিত্তিক দলের লেগ স্পিনারকে মুম্বাই উড়িয়ে আনা হয়েছে নেটে বোলিংয়ের জন্য। ত্রয়ীর সঙ্গে ছিলেন কারাপ্পা জিয়াস। স্পিন চতুষ্টয়কে বেশ ভালোভাবে সামলে নেয়ার পর সাকিবকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এরপর থ্রোয়ারদের নেটে ঢুকে বড় শটে সাজাতে থাকেন নিজের অনুশীলন পর্ব। এরপর খানিকক্ষণের বিশ্রাম। ফের নেটে ফিরে আবার তার লড়াই শুরু। ব্যাটিংয়ে পুনেতে ৪৫ মিনিট সময় দিয়েছিলেন। এদিন দিয়েছেন ৫০ মিনিট। তবে রানিং কিংবা বোলিং করেননি। তাতেই তাকে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা এখনো কাটেনি। বাংলাদেশের অনুশীলন সামলেছেন টিম কনসালটেন্ট শ্রীধরণ শ্রীরাম। কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে অসুস্থ থাকায় তাকে হোটেলে রেখে অনুশীলনে আসে বাংলাদেশ। ‘পানিশূন্যতার কারণে খারাপ বোধ করায় অনুশীলনেও আসেননি। হোটেলে বিশ্রাম নিচ্ছেন তিনি।’ বলেছেন জাতীয় দলের ম্যানেজার রাবীদ ইমাম। দক্ষিণ আফ্রিকা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে যে উইকেটে ৩৯৯ রান করেছিল তার পাশের উইকেটেই প্রোটিয়াদের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। মুম্বাই মানেই রান উৎসবের মঞ্চ। তাই বাংলাদেশকেও সেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হচ্ছে। শান্ত, তাওহীদ, মিরাজ, মুশফিকদের ব্যাটিং দেখে বোঝা যাচ্ছিল বড় রানের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। লিটন ও তানজীদ একের পর এক শট খেলছিলেন যেগুলো আঁচড়ে পড়ছিল গ্যালারিতে। সেন্টার উইকেটের পাশে তিনটি নেটে ধারাবাহিকভাবে চলে ব্যাটিং ও বোলিং অনুশীলন। সহকারী কোচ নিক পোথাসকেও বেশ সক্রিয় মনে হয়েছে। বিশেষ করে তাওহীদ হৃদয় বারবার এগিয়ে এসে শট খেলার চেষ্টা করছিলেন তখন ব্যাট-প্যাডের রসায়ন ঠিক করে দিয়েছেন। এছাড়া শান্ত, মিরাজদের ব্যাটিংয়ের সময়ও বেশ ভোকাল ছিলেন পোথাস। এদিকে সাকিবের আগে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন দলটির ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক এইডেন মার্করাম। সাকিব প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘আমার মনে হয় সে (সাকিব) খেললে আপনি আপনার হোমওয়ার্ক করে মাঠে নামবেন এবং সে না খেললে তাদের টিম কম্বিনেশন কেমন হবে সেটা দেখে দল সাজাবেন। তাই আপনাকে দুটি বিষয়কেই মাথায় রাখতে হবে আসলে।’ তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নেদারল্যান্ডসের দুর্দান্ত জয় দেখে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠতে পারে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের রেকর্ডও থেকেও মনোবল বাড়িয়ে নিতে পারে টাইগাররা। বশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চারবারের মোকাবেলায় দু’টিতে জয় এবং দু’টি হার আছে বাংলাদেশের। যা আইসিসি ইভেন্টে বিশ্বের বড় দলগুলোর বিপক্ষে সেরা ফলাফল টাইগারদের। গত বিশ্বকাপে ৩৩০ রানের পুঁজি নিয়ে পূর্ণ শক্তির দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২১ রানে হারিয়েছিলো বাংলাদেশ। ২০০৭ বিশ্বকাপে মোহাম্মদ আশরাফুলের ৮৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংসের সুবাদে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েছিলো বাংলাদেশ। যা এখনও বিশ্বকাপে বাংলাদেশি ব্যাটারদের মধ্যে সেরা ইনিংস হিসেবে বিবেচিত। অলরাউন্ড নৈপুন্যে গত বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়ে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন সাকিব আল হাসান। বাঁ পায়ের ঊরুর ইনজুরির কারণে ভারতের বিপক্ষে খেলতে না পারলেও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচে ফিরতে পারেন সাকিব। তবে পেসার তাসকিন আহমেদকে মিস করবে বাংলাদেশ, এখনও পুরোপুরি ফিট হতে পারেননি তিনি। সব মিলিয়ে এখন অবধি ২৪টি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা। এরমধ্যে বাংলাদেশ জিতেছে ৬টিতে এবং হেরেছে ১৮টিতে। আগের ম্যাচে জয় পাওয়া কম্বিনেশন নিয়েই মাঠে নামতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা। এর অর্থ আবারো একাদশে থাকছেন না প্রোটিয়াদের নিয়মিত অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। খারাপ ফর্মের কারণে দল থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন বাভুমা। অধিনায়কত্ব পান মার্করাম।

আলোকিত বাংলাদেশ
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত