অভিষিক্ত গিইউ’র গোলে বার্সেলোনার স্বস্তির জয়

প্রকাশ : ২৪ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া ডেস্ক

আগের ম্যাচের ড্রয়ের ধাক্কা সামলে জয়ে ফিরতে মরিয়া ছিল বার্সেলোনা। কিন্তু চীনের প্রাচীরের মতো অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের গোলবার আগলে রেখেছিলেন গোলরক্ষক উনাই সিমোন। তাই একাধিক সুযোগ পেয়েও গোলের দেখা পাচ্ছিল না বার্সেলোনা। অবশেষে ত্রাতা হয়ে এলেন অভিষিক্ত মার্ক গিইউ। স্বস্তির জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ল জাভি হার্নান্দেজের দল। গত রোববার কাম্প নউয়ে বিলবাওকে ১-০ গোলে হারিয়েছে বার্সেলোনা। ৮০তম মিনিটে ব্যবধান গড়ে দেন গিইউ। ফেরমিন লোপেসের বদলি নামার পরপরই মহামূল্যবান গোলটি করেন ১৭ বছর বয়সি তরুণ ফরোয়ার্ড। এদিন বলের নিয়ন্ত্রণে যথারীতি বার্সেলোনার আধিপত্য দিয়ে শুরু হয় ম্যাচ। তবে গোলের জন্য মরিয়া ছিল দুই দলই। চতুর্দশ মিনিটে ফেরমিন লোপেসের বাঁ পায়ের শট আটকান বিলবাও গোলরক্ষক। ছয় মিনিট পর জোয়াও ফেলিক্সের শটও ফাঁকি দিতে পারেনি উনাই সিমোনকে। বিলবাও প্রথম ভালো আক্রমণ শাণায় ২১তম মিনিটে। কিন্তু ইনাকি উইলিয়ামসের শট ফেরান মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেন। একটু পর দানি ভিভিয়ান ও দানি গার্সিয়ার হেডও পারেনি বিলবাওয়ের মুখে হাসি ফোটাতে। এরপর দুই দলের আক্রমণের ধার কিছুটা কমে। লম্বা পাসে প্রতিপক্ষকে ভড়কে দেয়ার চেষ্টাও চলে। কিন্তু পোস্টের নিচে দুই গোলরক্ষককে তেমন কোনো পরীক্ষার মুখোমুখিই হতে হয়নি। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে কিছুটা প্রাণ ফেরে দুই দলের খেলায়। তবে অফসাইডের ফাঁদ এড়াতে পারছিল না কেউই। এরই মধ্যে সুযোগ তৈরি করে বিলবাও। কিন্তু যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে ইনাকির কিছুটা দুরূহ কোণ থেকে নেওয়া শট ঝাঁপিয়ে টের স্টেগেন আটকালে গোলশূন্যভাবে বিরতিতে যায় দুই দল। দ্বিতীয়ার্ধেও বার্সেলোনার শুরটা হয় আক্রমণাত্মক। কিন্তু ফেররান তোরেসের হেড হয় লক্ষ্যভ্রষ্ট। ৫৮তম মিনিটে পরপর দুটি ভালো সুযোগ নষ্টের হতাশায় পুড়তে হয় তাদের। ফেলিক্সের শট গোলরক্ষক ফেরানোর পরের আক্রমণে গোল পেতেই পারত বার্সেলোনা। কিন্তু সতীর্থের পাস অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গোলরক্ষককে একা পেয়েও জালে বল জড়াতে পারেননি ফেরমিন লোপেস। সিমোনে পোস্ট ছেড়ে দ্রুত বেরিয়ে এসে আটকে দেন আক্রমণ। পাঁচ মিনিট পর আবারও বিলবাওয়ের ত্রাতা সিমোন। এবার তিনি ঝাঁপিয়ে ফেরান লামিনে ইয়ামালের নিচু শট। সিমোনের বিশ্বস্ত দেয়ালে ৭৫তম মিনিটেও চিড় ধরাতে পারেনি বার্সেলোনা। এবার ডান দিক দিয়ে আক্রমণে ওঠা কানসেলোর বাঁ পায়ের জোরাল শট কর্নারের বিনিময়ে ফেরান বিলবাও গোলরক্ষক। অবশেষে অভিজ্ঞ সিমোনের বিশ্বস্ত দেয়াল গুঁড়িয়ে দেন গিইউ। ফেলিক্সের থ্রু বল নিয়ন্ত্রণে নেয়া বার্সেলোনা ফরোয়ার্ডকে আটকাতে পোস্ট ছেড়ে বুলেট গতিতে বেরিয়ে এসেছিলেন বিলবাও গোলরক্ষক। ঠাণ্ডা মাথায় কোনাকুনি শটে জাল খুঁজে নেন গিইউ। বার্সার একাডেমিতে বেড়ে ওঠা ফরোয়ার্ড গিইউ গড়েন দারুণ একটি রেকর্ডও। মাত্র ১৭ বছর ২৯১ দিন বয়সে লা লিগায় খেলতে নেমে প্রথম ম্যাচেই গোল পেয়ে গেছেন তিনি। একবিংশ শতাব্দীতে বার্সেলোনার হয়ে লিগ অভিষেকে গোল করা সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার এখন তিনি। স্মরণীয় ম্যাচশেষে তীব্র উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন গিইউ, ‘আমি যেন নিঃশ্বাসই নিতে পারছি না! আমি কেবল এই মুহূর্তটি উপভোগ করছি। আমি এখনও যেন আকাশে উড়ছি! আমি পুরো মৌসুম কঠোর পরিশ্রম করে গিয়েছি কোনো সুযোগ সামনে এলে তা কাজে লাগানোর আশায়। যখন আমি গোলরক্ষককে পোস্ট ছেড়ে সামনে এগোতে দেখলাম, আমি শট নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি।’ বার্সেলোনার কোচ জাভি হার্নান্দেজ নতুন শিষ্যের প্রশংসা করে বলেন, ‘সে গোল করতে পারে, তার মধ্যে সেই তেজ আছে। সে এমন একজন খেলোয়াড় যাকে আমি ব্যক্তিগতভাবে অনেক পছন্দ করি। আর একাডেমিতে বেড়ে ওঠা স্থানীয় খেলোয়াড়দের কাজে লাগাতে আমার কোনো দ্বিধা নেই। কারণ আমাদের এখানে প্রচুর প্রতিভা রয়েছে। এই জয়ের পর ১০ ম্যাচে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলে তিনে উঠে এসেছে বার্সেলোনা। ২৫ করে পয়েন্ট নিয়ে গোল পার্থক্যে শীর্ষে রিয়াল মাদ্রিদ এবং দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে জিরোনা।