ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়াতে চায় পাকিস্তান

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়াতে চায় পাকিস্তান

হ্যাটট্রিক হারের অনেকটা কোণঠাসা অবস্থায় আছে পাকিস্তান। অন্যদিকে জয়ের ছন্দে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। পাঁচ খেলায় ৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে আছে প্রোটিয়ারা। সেমিফাইনালের পথে আরো এক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে আজ নিজেদের ষষ্ঠ ম্যাচে পাকিস্তানের মুখোমুখি হচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা। টানা তিন ম্যাচ হেরে সেমির দৌড় থেকে পিছিয়ে পড়েছে পাকিস্তান। পাঁচ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের পঞ্চম স্থানে আছে পাকিস্তানিরা। হারের বৃত্ত ভেঙে জয়ের ধারায় ফিরতে মরিয়া পাকিস্তানিরা। এমন লক্ষ্য নিয়ে চেন্নাইতে বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে মাঠে নামবে এই দুই দল। দুর্দান্তভাবে বিশ্বকাপ শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ৫ উইকেটে ৪২৮ রান করেন প্রোটিয়ারা, যা বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলীয় রান। রেকর্ড গড়া ম্যাচ ১০২ রানের ব্যবধানে জিতে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। দ্বিতীয় ম্যাচে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে লড়াই করার সুযোগই দেয়নি দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৩৪ রানে অসিদের বিধ্বস্ত করে প্রোটিয়ারা। টানা দুই ম্যাচে দুর্দান্ত জয়ের পর বড়সড় ধাক্কা খায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ১২ বছর ও দুই আসর পর বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাওয়া নেদারল্যান্ডসের কাছে ৩৮ রানে হেরে বড় অঘটনের শিকার হয় প্রোটিয়ারা। নেদারল্যান্ডসের কাছে হার হৃদয় ভাঙলেও ভড়কে যায়নি দক্ষিণ আফ্রিকা। পরের দুই ম্যাচে আরও তেঁতে উঠে তারা। বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে রান বন্যায় ভাসিয়ে দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথমে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ৩৯৯ রান করে প্রোটিয়ারা। ইংল্যান্ডকে ১৭০ রানে গুটিয়ে ২২৯ রানের বিশাল জয় ঝুলিতে ভরে দক্ষিণ আফ্রিকা। আর সর্বশেষ ম্যাচে বাংলাদেশকেও রান বন্যায় ভাসিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা। ৫ উইকেটে ৩৮২ রানের পাহাড় গড়ে তারা। জবাবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ১১১ রানের কারনে বড় জয়ের স্বাদ পায়নি দক্ষিণ আফ্রিকা। পাঁচ ম্যাচ খেলে চারটিতেই ৩০০’র বেশি এবং তিনটি সাড়ে ৩০০’র বেশি রান করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশ্বকাপের প্রথম দল হিসেবে এক আসরে তিনবার ৩৫০’র বেশি রান করার রেকর্ডও গড়ে প্রোটিয়ারা। এতেই বুঝা যায়, দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা তুখোড় ফর্মে রয়েছে। এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৬টি সেঞ্চুরি করেছে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা। এর মধ্যে তিনটি সেঞ্চুরিতে ৪০৭ রান নিয়ে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহের তালিকায় শীর্ষে কুইন্টন ডি কক। নিজের বিদায়ি বিশ্বকাপটা ভালোভাবেই রাঙাচ্ছেন ডি কক। পাকিস্তানের বিপক্ষেও আরো একবার জ্বলে উঠার প্রত্যাশায় ডি কক, ‘দলের জন্য যেভাবেই খেলছি, এই ফর্ম ধরে রাখতে চাই। পাকিস্তানের বোলিং লাইন-আপ শক্তিশালী। কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে আমাদের। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে পাকিস্তানের বোলারদের লাইন লেংথ নষ্ট করে আরো একবার বড় স্কোর করতে চাই।’ পয়েন্ট টেবিলে ভালো অবস্থায় থাকলেও পাকিস্তানের বিপক্ষেও জয় ছাড়া অন্য কিছু ভাবছে না দক্ষিণ আফ্রিকা। ডি কক বলেন, ‘আমরা পয়েন্ট টেবিলে ভালো অবস্থায় আছি। কিন্তু এখনো আমাদের সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়নি। এজন্য আমরা যেভাবে খেলছি, জয়ের জন্য ঠিক সেভাবেই খেলব। আমাদের প্রধান লক্ষ্য জয়ের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখা।’ নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ৮১ রানের জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শুরুর পর, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে রেকর্ড জয়ের স্বাদ নেয় পাকিস্তান। শ্রীলঙ্কার ছুঁড়ে দেয়া ৩৪৫ রানের টার্গেট স্পর্শ করে পাকরা। বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে ম্যাচ জয়ের রেকর্ড গড়ে পাকিস্তান। এ ম্যাচে পাকিস্তানের আব্দুল্লাহ শফিক ১১৩ ও মোহাম্মদ রিওজয়ান অনবদ্য ১৩১ রান করেন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুর্দান্ত জয়ের পর পথ হারায় পাকিস্তান। এরপর টানা তিন ম্যাচ হারে তারা। ভারতের কাছে ৭ উইকেটে, অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৬২ রানে এবং সর্বশেষ আফগানিস্তানের কাছে ৮ উইকেটে হেরে যায় পাকিস্তান। ওয়ানডে ক্রিকেটে আফগানিস্তানের কাছে প্রথমবারের মতো হারের লজ্জা পায় পাকিস্তান। ওই হারের ধাক্কা কাটিয়ে উঠার পথ খুঁজছে পাকরা। দলের ওপেনার ইমাম উল হক বলেন, ‘আফগানদের কাছে হার আমাদের জন্য সত্যিই হতাশার। আমরা ভালো ক্রিকেট খেলিনি। বিশেষভাবে আমাদের বোলিংটা ভালো হচ্ছে না। আশা করব, বোলাররা দ্রুতই নিজেদের ছন্দে ফিরবে।’ পাকিস্তানের ব্যাটিং আশানুরূপ হলেও বোলাররা নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারছে না। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২৮২ রান করলেও প্রতিপক্ষের মাত্র ২ উইকেট শিকার করতে পারে পাকিস্তানি বোলাররা।

বিশ্বকাপের মঞ্চে বিশ্বের অন্যতম সেরা বোলিং লাইনের অফ-ফর্ম অবশ্যই চিন্তার বড় কারন। এবার রানের বন্যায় প্রতিপক্ষের বোলারদের ভাসিয়ে দেয়া দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটারদের সামনে বড় পরীক্ষা দিতে হবে পাকিস্তানকে। পরীক্ষা মঞ্চ যেমনই হোক না কেন, জয়ই প্রধান লক্ষ্য পাকিস্তানের। ইমাম বলেন, ‘টানা তিন ম্যাচ হেরে আমরা অনেক বেশি চাপে পড়ে গেছি। এমন চাপকে সরাতে হলে জয় ছাড়া অন্য কোনো পথ নেই। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়ের লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামব আমরা।’ এখন পর্যন্ত ওয়ানডেতে ৮২ বার মুখোমুখি হয়েছে পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকা। এর মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার জয় ৫১টিতে, পাকিস্তানের জয় ৩০টিতে এবং একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। ২০২১ সালের এপ্রিলে সর্বশেষ ওয়ানডেতে দেখা হয়েছিল দুই দলের। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল পাকিস্তানিরা। বিশ্বকাপে পাঁচবারের দেখায় দক্ষিণ আফ্রিকা জিতেছে তিনবার, পাকিস্তানের জয় দুটিতে। সর্বশেষ দুই দেখায় জয় আছে পাকিস্তানেরই।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত