ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ডাচদের বিপক্ষে বোলাররা জয়ী, দায়িত্ব এখন ব্যাটারদের

ডাচদের বিপক্ষে বোলাররা জয়ী, দায়িত্ব এখন ব্যাটারদের

বাংলাদেশ দলের বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন এখন নিভু নিভু করছে। মাঠের বাইরে নানা সমালোচনায় প্রবল চাপে সাকিব আল হাসানরা। ঘুরে দাঁড়াতে প্রয়োজন একটি জয়, তাহলে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। এমন পরিস্থিতিতে গতকাল শনিবার কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে নিজেদের ষষ্ঠ ম্যাচে শুরুতে নেদারল্যান্ডসকে নাগালের মধ্যে আটকে রাখতে সমর্থ হয় টাইগার বোলাররা।

বাংলাদেশি বোলারদের আঁটসাঁট বোলিংয়ে ৫০ ওভারে ২২৯ রানে গুটিয়ে গেছে ডাচরা। অবশ্য আরো আগেই অলআউট হতে পারত তারা। তবে মিস ফিল্ডিং আর শেখ মেহেদীর শেষ ওভারে দেয়া ১৭ তাদের সম্মানজনক স্কোর এনে দেয়। ফিল্ডিং ভালো হলে এই রান ২০০’র মধ্যেও থাকতে পারত। শূন্য রানে দুইবার জীবন পেয়ে অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস দলের হয়ে করেন সর্বোচ্চ ৬৮ রান। তার ইনিংস লম্বা সময় গলার কাঁটা হয়েছিল সাকিবদের কাছে।

বাংলাদেশের চার বোলার পেয়েছেন দুটি করে উইকেট। তবে সবচেয়ে নজরকাড়া ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। ১০ ওভারে ৩৬ রান দিয়ে ২ উইকেট পেয়েছেন তিনি। তার বলে তিনটা ক্যাচ না ফসকালে আরো ফিগার হতে পারত দুর্দান্ত। পুরো টুর্নামেন্টজুড়ে পেসাররা ছিলেন নিষ্প্রভ। ডাচদের বিপক্ষে মহা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তাই তাদের জ্বলে উঠার প্রতীক্ষায় ছিল দল। এদিন বল হাতে নিয়ে শুরুতেই জ্বলে উঠেন তারা। তাসকিন আহমেদ নিজের দ্বিতীয় ওভারে গতির তারতম্যে ক্যাচ বানান বিক্রমজিত সিংকে। পরের ওভারে বাড়তি লাফানো বলে ম্যাক্স ও’ডাউডকে ফেরান শরিফুল ইসলাম। ৪ রানে ২ উইকেট পড়ে যাওয়ার পরিস্থিতি থেকে প্রতিরোধ আসে ওয়েসলি বারেসি আর কলিন অ্যাকারম্যানের ব্যাট থেকে। জুটি জমে বিপদের কারণ হয়নি বটে। ৫৯ রানের জুটি বিপজ্জনক হওয়ার আগেই ভাঙেন মোস্তাফিজুর রহমান।

বারেসি খেলছিলেন আগ্রাসী মেজাজে, দ্রুত রান বাড়াচ্ছিলেন তিনি। মোস্তাফিজের শ্লোয়ার বুঝতে না পেরে ৪১ বলে ৪১ করে ধরা দেন সাকিবের হাতে। খানিক পর সাকিবের বলে সুইপের চেষ্টায় সহজ ক্যাচ দিয়ে ফেরেন আকারম্যানও।

এক ওভার পর স্কট এডওয়ার্ডসকে দুইবার আউটের সুযোগ হারায় বাংলাদেশ। মোস্তাফিজের বলে গালিতে তীব্র গতিতে যাওয়া ক্যাচ নিতে পারেননি লিটন দাস, পরের বলে ডানদিকে ঝাঁপিয়ে কিপার মুশফিকুর রহিম গ্লাভসে জমাতে পারেননি বল। শূন্য রানে টানা দুবার জীবন পেয়ে এডওয়ার্ডস জমে যান ক্রিজে। বাস ডি লিডির সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে জুটিতে যোগ করেন ৪৪ রান। তাসকিন এসে বাড়তি বাউন্সে ডি লিডিকে ফেরালেও সিব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখটের সঙ্গে আরেক জুটি পেয়ে যান ডাচ অধিনায়ক। জুটিতে রান তোলার গতি মন্থর হলেও দলকে ভদ্রস্থ জায়গার দিকে নিয়ে যেতে থাকেন তারা। মোস্তাফিজের বলে এঙ্গেলব্রেখট ক্যাচ উঠালেও মেহেদী হাসান মিরাজ তা ছেড়ে দেন। ২৯ রানে জীবন পেয়ে যদিও বেশি দূর বাড়তে পারেনি।

শেখ মেহেদীর বলে এলবিডব্লিউতে ফেরেন তিনি। তার আগে এডওয়ার্ডসের মূল্যবান উইকেট পেয়ে যান মোস্তাফিজ। ৮৯ বলে ৬৮ করে তিনি ফেরার পর ভাটার টান পড়ে ডাচদের ইনিংসে। শেষ দিকে লোগান ফন বিক ১৬ বলে ২৩ করলে কিছুটা লড়াইয়ের পুঁজি পায় ডাচরা। আফগানিস্তানকে হারানোর পর সবশেষ চার ম্যাচে চেনা ছন্দে দেখা যায়নি বাংলাদেশের বোলারদের। অবশেষে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়ালেন তারা। উইকেট-কন্ডিশন অনুযায়ী বোলিং করে লক্ষ্যটা রাখলেন নাগালে। এখন দায়িত্ব ব্যাটারদের। তবে সে দায়িত্বটা ঠিকঠাক পালন করতে ব্যর্থ হয়েছেন লিটন কুমার দাস। ১২ বলে মাত্র ৩ রান করে আরিয়ান দত্তের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফেরেন এই ওপেনার। এরপর ১৬ বলে ১৫ রান করে ফিরে যান তানজিদ তামিম। অবশ্য সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, নাজমুল হাসান শান্তরা নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করলে বিশ্বকাপে দ্বিতীয় জয় পেতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয় টাইগারদের।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত