বিশ্বকাপ মানেই যেন অন্য এক মাহমুদউল্লাহ

প্রকাশ : ০২ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

আশা ছিল লিটন কুমার দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত বিশ্বকাপে দারুণ কিছু করবেন। কিন্তু দুজনই ফ্লপ। অবশ্য শুধু এ দু’জন নন, বাংলাদেশের পুরো ব্যাটিং লাইনই তো ব্যর্থ। ব্যতিক্রম কেবল একজন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। যার আবার বিশ্বকাপে সুযোগ পাওয়া নিয়েই শঙ্কা ছিল। সেই শঙ্কা-সমালোচনার জবাব দিয়েছেন তিনি ব্যাট দিয়ে।

বিশ্বকাপ মানেই যেন অন্য এক মাহমুদউল্লাহ। এই মঞ্চে ধারাবাহিকতার অপর নাম তিনি। গতকাল পাকিস্তানের বিপক্ষে ৫৬ রানের ইনিংসটি দিয়ে একটি বিরল রেকর্ডও করেছেন মাহমুদউল্লাহ। বিশ্বকাপে টানা ১৭ ম্যাচে ন্যূনতম ২০ রান করেছেন তিনি। টানা ১৩ ম্যাচে ন্যূনতম রান করে এ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছেন অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি ওপেনার ম্যাথু হেইডেন, তৃতীয় স্থানে দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাসের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার এবি ডি ভিলিয়ার্স (টানা ১২ ম্যাচ)। তাদের পরে আছেন লঙ্কান কিংবদন্তি অর্জুনা রানাতুঙ্গা ও রিকি পন্টিং। উভয়ই টানা ১১ ম্যাচে করেছেন ন্যূনতম ২০ রান। অথচ এই মাহমুদউল্লাহ বিশ্বকাপের আগে ছয় মাস জাতীয় দলের বাইরে ছিলেন। তবে বাইরে থাকার এই সময়টা তিনি কাজে লাগিয়েছেন দারুণভাবে। জাতীয় দলে জায়গা হারানোর জন্য কাউকে দোষারোপ না করে নীরবে মিরপুরে কঠোর পরিশ্রম করে গেছেন। এরপর বিশ্বকাপে জায়গা পেলেও তাকে খেলানো হচ্ছিল টেলএন্ডার হিসেবে। সেখানেও রান করেছেন তিনি। এমনকি দলের সবাই ব্যর্থ হলেও তার ব্যাটে ঠিকই রান ছিল। এমন একজন ইনফর্ম ও অভিজ্ঞ ব্যাটারকে নিচে খেলানোয় তুমুল সমালোচনার মুখেও পড়তে হয় বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টকে। এই সমালোচনাতেই হোক কিংবা টপঅর্ডারের ব্যর্থতাতেই হোক, মাহমুদউল্লাহ ব্যাটিং অর্ডারে ধীরে ধীরে প্রমোশন পেতে থাকেন। ছয় ম্যাচে তার ব্যাটিং অর্ডার বদলেছে পাঁচবার। একেক দিন একেক পজিশনে খেলা সত্ত্বেও তার পারফরম্যান্সে কোনো প্রভাব পড়েনি। এবারের আসরে মাহমুদউল্লাহর শুরুটা হয়েছিল ৮ নম্বরে, কিউইদের বিপক্ষে। সেই ম্যাচে ৪৯ বলে ৪১ রান করেন তিনি। ভারতের বিপক্ষে পরের ম্যাচে সাতে নামানো হয় তাঁকে, ৩৬ বলে ৪৬ রান করেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৬ নম্বরে পাঠানো হয় তাকে। ব্যাটিংধসের মধ্যেও লোয়ার অর্ডারদের সঙ্গী করে ১১১ রানের স্মরণীয় এক ইনিংস খেলেন তিনি। ডাচদের বিপক্ষে আবার সাতে পাঠানো হয় তাকে। সে ম্যাচে এবারের আসরের সর্বনিম্ন ২০ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। এই ধারাবাহিকতার জন্যই গতকাল পাঁচে পাঠানো হয় রিয়াদকে। এখানেও ভালোই করেন তিনি। বিপর্যয়ের মুখে ৫৬ রানের নান্দনিক এক ইনিংস খেলেন।