ম্যাথিউসের টাইমড আউট নিয়ে এমসিসির ব্যাখ্যা

প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া ডেস্ক

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রায় ১৫০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ‘টাইমড আউট’ হয়েছেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের আবেদনে বিরল এই আউটের শিকার হয়েছেন লঙ্কান অলরাউন্ডার। টাইমড আউটের ঘটনায় উত্তাল ক্রিকেট দুনিয়া। কেউ সাকিবের পাশে দাঁড়াচ্ছেন, কেউ আবার সমর্থন দিচ্ছেন ম্যাথিউসকে। পক্ষে-বিপক্ষে নানা রকমের যুক্তিতর্ক চলছে। প্রায় এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও ম্যাথিউসের টাইমড আউট ঘিরে আলোচনা থামেনি। সাবেক-বর্তমান ক্রিকেটার, বিশ্লেষকরা দিচ্ছেন পক্ষে-বিপক্ষে নানান মত। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই এবার বিবৃতি দিয়েছে ক্রিকেটের আইন প্রণয়ন সংস্থা- এমসিসি (মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব)। তাদের বিশদ ব্যাখ্যার সারমর্ম দাঁড়ায়, ক্রিকেটের নিয়মের ভেতরে থেকে বাংলাদেশ দল ও মাঠের দুই আম্পায়ার কোনো ভুল করেননি। হেলমেটে সমস্যা বুঝতে পেরে ম্যাথিউস যদি সেটি আম্পায়ারদের জানাতেন, তাহলে তাকে বাড়তি সময় দেয়ার কথা ভাবতে পারতেন আম্পায়াররা। এছাড়া ক্রিকেটের চেতনা রক্ষার্থে টাইমড আউটের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে ওঠা প্রশ্নে এমসিসি জানিয়েছে, খেলাটির গতি ধরে রাখতে ও অহেতুক সময় নষ্ট এড়াতে ক্রিকেটে এই আইনের প্রয়োজন রয়েছে। ঘটনা দিল্লির আরুন জেটলি স্টেডিয়ামে গত সোমবার বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচে। লঙ্কানদের ইনিংসের ২৫তম ওভারে সাদিরা সামারা বিক্রামা ক্রিজে যান অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। সতীর্থ চারিথ আসালাঙ্কার সঙ্গে হাত মিলিয়ে ব্যাটিংয়ের জন্য স্ট্রাইক প্রান্তে যান তিনি। তখন পর্যন্ত স্বাভাবিকই ছিল সব কিছু। এরপর স্টান্স নেয়ার আগ মুহূর্তে হেলমেট আঁটসাঁট করার চেষ্টায় ফিতায় টান দেন ম্যাথিউস। তখন ফিতার এক প্রান্ত ছিঁড়ে গেলে তিনি হেলমেট খুলে সরে গিয়ে ডাগ আউটের দিকে ইশারা করেন নতুন হেলমেট আনার জন্য। নতুন হেলমেট আনার প্রক্রিয়ায় পেরিয়ে যায় ২ মিনিটের বেশি। এর মধ্যে আম্পায়ারের কাছে টাইমড আউটের আবেদন করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। আম্পায়ার মারাইস ইরাসমাস নিশ্চিত হওয়ার জন্য সাকিবকে জিজ্ঞেস করেন, তিনি সত্যিই এই আবেদন করছেন কি না। সাকিবের কাছ থেকে নিশ্চিত হয়ে ম্যাথিউসকে আউটের সিদ্ধান্ত জানান আম্পায়াররা। বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ ম্যাথিউস মাঠ ছেড়ে যান। বাইরে গিয়ে সেই হেলমেট তিনি ছুড়ে ফেলেন মাটিতে। এরপর ম্যাচের বাকি অংশে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারদের শরীরী ভাষায় দেখা যায় টাইমড আউট নিয়ে অসন্তোষ। ম্যাচ শেষে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সঙ্গে হাত না মিলিয়েই মাঠ ছেড়ে ড্রেসিং রুমে চলে যান তারা। পরে সংবাদ সম্মেলন, সামাজিক মাধ্যমেও এই আউটের বিরুদ্ধে সরব হন লঙ্কান ক্রিকেটাররা। ঘটনার পাঁচ দিনের মাথায় ম্যাথিউসের আউটের সার্বিক দিক ব্যাখ্যা করেছে এমসিসি। ‘(টাইমড আউটের) নিয়মের উল্লেখযোগ্য দিক হলো, নতুন ব্যাটসম্যানকে আগের আউটের ২ মিনিটের মধ্যে প্রথম বল খেলার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। মাঠে ঢোকা বা উইকেটে থাকাও টাইমড আউট এড়ানোর জন্য যথেষ্ট নয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রথম বল খেলার অবস্থায় থাকতে হবে ব্যাটসম্যানকে।’ ‘আম্পায়ারদের মনে হয়েছে, ২ মিনিট সময়ের মধ্যে প্রথম বল মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না ম্যাথিউস। এরপর তার হেলমেটেও সমস্যা দেখা দেয়। যার ফলে আরও সময় নষ্ট হয়।’ এক্ষেত্রে নতুন হেলমেট চাওয়ার আগে আম্পায়ারদের সঙ্গে পরামর্শ করে নিলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারত বলে মনে করে এমসিসি। ‘ত্রিশ গজের বৃত্তে যেতেই ৯০ সেকেন্ড লেগে যাওয়ায় ম্যাথিউস হয়তো বুঝতে পারেন, সময়ের চেয়ে পিছিয়ে আছেন তিনি। তাই বাকি পথ কিছুটা দৌড়েই যান তিনি। আগের উইকেট পড়ার ১ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের মাথায় তার হেলমেটের সমস্যা দেখা দেয়। ওই মুহূর্তে তিনি গার্ড নেননি এবং বল খেলার জন্যও প্রস্তুত ছিলেন না।’ ‘যখন হেলমেটে সমস্যা হলো, তখন আম্পায়ারদের সঙ্গে কথা বলেননি ম্যাথিউস। সাধারণত নতুন সরঞ্জাম আনার ক্ষেত্রে তা করতে হয়। কিন্তু তিনি নতুন হেলমেটের জন্য সরাসরি ড্রেসিং রুমের দিকে ইশারা করেন।