সিলেট টেস্ট

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তারুণ্যের পরীক্ষা শুরু আজ

প্রকাশ : ২৮ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্র্রতিবেদক

আজ সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে দুই টেস্টের সিরিজের প্র্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ দল। এই টেস্টে নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসান এমনকি সহ-অধিনায়ক লিটন দাসও নেই। পাওয়া যাচ্ছে না তামিম ইকবালকেও।

পুনর্বাসনের মধ্যে আছে পেসার ইবাদত হোসেন ও তাসকিন আহমেদ। অভিজ্ঞদের মধ্যে আছেন কেবল মুশফিকুর রহিম আর মুমিনুল হক। একঝাঁক তরুণ ক্রিকেটার নিয়ে কিউইদের বিপক্ষে লড়বে স্বাগতিকরা। এই লড়াইকে যতটা না চ্যালেঞ্জ, তার চেয়ে বেশি সম্ভাবনা হিসেবেই দেখছেন কোচ চণ্ডিকা হাথুরুসিংহে। কোচের মতে, নতুনদের জন্য এটি বড় সুযোগ। তার কাছে মনে হচ্ছে দলের তরুণদের এগিয়ে যাওয়ার এখনই সময়।

তারুণ্য নির্ভর অনভিজ্ঞ দলকে নেতৃত্ব দিবেন নাজমুল হোসেন শান্ত। চলতি বছর আয়ারল্যান্ড ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুই টেস্ট খেলে দুটিতেই জয় পেয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দর। আইরিশদের বিপক্ষে ৭ উইকেটে এবং আফগানদের বিপক্ষে রেকর্ড ৫৪৬ রানের জয় প্রায় বাংলাদেশ, যা তেকে প্র্রমাণ মেলে, বড় ফরম্যাটে টাইগাররা সঠিক পথেই রয়েছে। যদিও বাস্তবতা একেবারেই ভিন্ন। এখন প্রর্যন্ত ১৩৮টি টেস্ট ম্যাচ খেলে মাত্র ১৮টিতে জয়, ১০২টিতে হার এবং ১৮টিতে ড্র করেছে বাংলাদেশ। শতকরা জয় ১৩ দশমিক ০৪ শতাংশ। লংগার ভার্সনে টাইগার দলের মান মিলবে নিউজিল্যান্ড টেস্ট দিয়েই। সদ্য শেষ হওয়া ওয়াডে বিশ্বকাপের প্রর এই টেস্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালেই যাত্রা শেষ হয় নিউজিল্যান্ডের।

অন্যদিকে, ৯ ম্যাচে মাত্র ২ জয়ে লিগ প্রর্ব থেকেই বিশ্বকাপ শেষ করে বাংলাদেশ। ২০১৩ সালের প্রর প্র্রথমবারের মতো বাংলাদেশে টেস্ট সিরিজ খেলবে নিউজিল্যান্ড। গত ১০ বছরে অন্য দুই ফরম্যাট- ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি সিরিজে মুখোমুখি হয়েছে দুই দল। এই সময়ের মধ্যে টেস্ট সিরিজ খেলতে তিনবার নিউজিল্যান্ড সফর করেছে টাইগাররা। বাংলাদেশের মাটিতে সর্বশেষ দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ০-০ সমতায় শেষ করেছিলো নিউজিল্যান্ড।

প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে বিভিন্ন দেশের বিপক্ষে টেস্ট ড্র করলেও, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুর্দান্ত প্রারফরমেন্স দিয়ে ওই দুটি টেস্ট সমতায় শেষ করেছিল টাইগাররা। ওই দুই টেস্টে দারুণ ব্যাটিং প্রদর্শন করেছিল স্বাগতিকরা। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে কখনোই টেস্ট জিততে পারেনি বাংলাদেশ। কিন্তু গেল বছর মাউন্ট মাউঙ্গানুইতে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথমবারের মতো টেস্ট জয়ের নজির গড়ে টাইগাররা, যা এখন প্রর্যন্ত কিউইদের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট জয় বাংলাদেশের।

বাংলাদেশের মাটিতে সীমিত ওভারের ম্যাচে দীর্ঘদিন জয়হীন ছিল নিউজিল্যান্ডও। বিশ্বকাপের আগে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জয়ের আগে, ২০০৮ সাল থেকে বাংলাদেশের মাটিতে জয়হীন ছিল কিউইরা। বাংলাদেশের মাটিতে যেকোনো ফরম্যাটে ম্যাচ জয়ে ওয়ানডে সিরিজে জয় বাড়তি আত্মবিশ্বাস দেবে নিউজিল্যান্ডকে। অন্য দিকে সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনায় স্বাগতিক দল কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারলেই খুশি থাকবে। সিলেটের এই ভেন্যুতে একটি মাত্র টেস্ট অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৮ সালের সেই টেস্টে জিম্বাবুয়ের কাছে ১৫১ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ। যেহেতু ওই ম্যাচের প্রর এই ভেন্যুতে কোন টেস্ট খেলেনি, এজন্য উইকেট সম্পর্কে তেমন ধারণা নেই।

কিন্তু স্পিনারদের নিয়েই নিজেদের প্ররিকল্পনা সাজানোর লক্ষ্য বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের। দলে একাধিক স্পিনার থাকায় বাংলাদেশ কিছুটা শক্তিশালী হয় মাঠে নামবে বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো দলে নেওয়া হয়েছে বাঁ-হাতি স্পিনার হাসান মুরাদকে। সেই সাথে দলে ফিরিয়ে আনা হয়েছে অফ-স্পিনার নাঈম হাসানকে।

ম্যাচণ্ডপূর্ব এক সংবাদ সম্মেলনে আজ সিলেটে শান্ত বলেন, ‘আমি মনে করি না, উইকেট সম্পর্কে কিছু বলা ঠিক হবে। আমরা যতটা সম্ভব ধারণা পেয়েছি। আমি বলতে প্রারি, আমরা ভাল খেলার চেষ্টা করব।’ তিনি আরো বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ হবে টস। যেকোনো প্ররিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত। আমাদের যদি প্রথমে বোলিং করতে হয়, আমরা ভালো বোলিং করার চেষ্টা করব এবং আমাদের যদি প্রথমে ব্যাট করতে হয়, আমরা ভালো করার চেষ্টা করব। টস ভাগ্য যদি আমাদের পক্ষ থাকে, তাহলে সেটি ভালোই হবে। যদি না-ও হয়, তারপরও আমাদের কোনো সমস্যা নেই।’

সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ১৭ টেস্টে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড। এর মধ্যে ১৩টিতে জয়, মাত্র একটিতে হার এবং তিনটি ড্র করেছে নিউজিল্যান্ড।