সিঙ্গাপুরের জালে বাংলাদেশের মেয়েদের ৮ গোল

প্রকাশ : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

গত কয়েক দিন ধরেই বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গণের আকাশে ভাসছে জয়োধ্বনি। ক্রিকেট কিম্বা ফুটবল, দেশে কিম্বা বিদেশে, একের পর এক জয় উদযাপন করছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমবার টেস্ট জিতেছে নাজমুল হোসেন শান্তরা। দক্ষিণ আফ্রিকায় স্বাগতিকদের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয় পেয়েছে টাইগ্রেসরা। এবার অতিথি সিঙ্গাপুরকে উড়িয়ে দিল তহুরা-সাবিনারা। গতকাল সোমবার কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহিদ সিপাহি মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফিফা দ্বিতীয় প্রীতি ম্যাচে অসাধারন এক ম্যাচ খেলেছেন লাল সবুজের মেয়েরা। ফিফা র‍্যাংকিংয়ে ১২ ধাপ এগিয়ে থাকা সিঙ্গাপুরকে বিধ্বস্ত করে ছেড়েছে বাংলাদেশ। সফরকারীদের ৮-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছেন সাবিনা খাতুনরা। দলের হয়ে তহুরা খাতুন ও রিতুপর্ণা চাকমা দুটি করে এবং সানজিদা আক্তার, সুমাইয়া মাতসুশিমা ও অধিনায়ক সাবিনা খাতুন একটি করে গোল করেন। শুক্রবার প্রথম ম্যাচে স্বাগতিকরা জিতেছিল ৩-০ গোলে। লড়াইটা ছিল সিঙ্গাপুরের নয় নম্বর ডানিয়েল ট্যান ও বাংলাদেশের ১০ নম্বর তহুরা খাতুনের মধ্যে। ডানিয়েল জার্মানির ব্রুশিয়া ডর্টমুন্ডের হয়ে খেলে থাকেন। আগের ম্যাচে তিনি ছিলেন না। তাই এই ম্যাচে তাকে নিয়ে কিছুটা ভয়ে ছিল বাংলাদেশ। অবাক হলেও সত্যি, ডানিয়েল তার খেলার কিছুই দেখাতে পারেননি। তবে প্রথম ম্যাচে দুই গোল করা তহুরা খাতুন এই ম্যাচেও পেয়েছেন ২ গোল। অফসাইডের ফাঁদে তার একটি গোল কাটা না পড়লে হয়তো হ্যাটট্রিকেরও দেখা পেতেন এই ফরোয়ার্ড। সত্যি দর্শকরা উপভোগ করেছেন দুর্দান্ত একটি ম্যাচ। সিঙ্গাপুরকে ৮-০ গোলে হারানো দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জয় সাবিনাদের। এর আগে ২০১০ সালের ১৫ ডিসেম্বর ভুটানকে ৯-০ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল। তবে গত বছর নভেম্বরে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ চ্যাম্পিয়নশিপে ভুটানকে ৯-০ গোলে হারিয়েছিল লাল সবুজের বয়স ভিত্তিক মেয়েরা। প্রথমার্ধের মাত্র ২ মিনিটে ২ গোল বাংলাদেশের। ১৬ মিনিটে সাবিনার ফ্রি কিক বক্সের মধ্যে আফেইদার ভলিতে মাসুরা পারভীন হেড করেন। উড়ে আসা বলে বক্সের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা তহুরা খাতুন আরেক হেডে বল জালে জড়ান (১-০)। মিনিট দুয়েক পরেই ব্যবধান দ্বিগুন করে বাংলাদেশ। অধিনায়ক সাবিনার নেয়া কর্নার সিঙ্গাপুরের ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে বল পোস্টের সামনে পড়ে। ফাকা দাঁড়িয়ে থাকা রিতুপর্ণা চাকমা প্লেসিংয়ে ২-০ করেন। ২৪ মিনিটে বক্সের মধ্য থেকে সানজিদার শট সিঙ্গাপুরের গোলকিপার তান লি বিন গ্রিপে নিতে পারেননি। সামনে থাকা তহুরা আলতো শটে বল জালে জড়িয়ে দেন (৩-০)। দ্বিতীয়ার্ধে আরো আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে বাংলাদেশ। ৫১ মিনিটে সানজিদা ডান প্রান্ত দিয়ে দুর্দান্ত ভাবে বল নিয়ে বক্সে ঢুকে গোল করেন। কিন্তু অফসাইডে তা বাতিল হয়ে যায়। তবে বিধাতা তাকে বঞ্চিত করেননি। মিনিট পাঁচেক পর তহুরার শটে বল রুখে দেন সিঙ্গাপুরের গোলকিপার। ডান প্রান্ত দিয়ে ফিরতি বলে শট করে গোল করেন সানজিদা (৪-০)। ম্যাচের ৬২ মিনিটে রিতুপর্ণা চাকমার উড়ন্ত শটে বল পোস্ট ঘেসে বল জালে জড়ায় (৫-০)। গোলের নেশায় যেন পেয়ে বসে স্বাগতিক ফুটবলারদের। মিনিট আটেক পর বাঁ প্রান্ত দিয়ে রিতুর ক্রস তহুরার শটে বল জালে জড়ায়। কিন্ত অফসাইডের ফাঁদে পড়ে গোল বাতিল হওয়ূায় হ্যাটট্রিক করা থেকে বঞ্চিত হন তিনি। সবাই গোল পেয়েছেন। বাকি ছিল অধিনায়ক সাবিনার। সেটাও পূর্ণ করে দিলেন বিধাতা। ৭৫ মিনিটে বদলী শামসুন্নাহার জুনিয়রের কাটব্যাকে দুর্দান্ত প্লেসিংয়ে গোল করেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুন (৬-০)। ৮৭ মিনিটে সাবিনার ফ্রিকিক থেকে বদলি সুমাইয়া মাতসুশিমা শুয়ে পড়ে শটে বল জালে জড়ান (৭-০)। ম্যাচের অন্তিম সময়ে সিঙ্গাপুরের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন শামসুন্নাহার জুনিয়র। বাঁ প্রান্ত দিয়ে রিতুপর্ণার ক্রস। ছুটে আসা বলে পা ছুইয়ে দেন শামসুন্নাহার জুনিয়র (৮-০)। শেষে এই ব্যবধানে সিঙ্গাপুরকে হারিয়ে দুই ম্যাচ সিরিজটি ২-০ তে জিতে নেয় বাংলাদেশ।